ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

রাজনৈতিক সহনশীলতা নিশ্চিত হলে সমৃদ্ধ হবে দেশ

রাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৬
রাজনৈতিক সহনশীলতা নিশ্চিত হলে সমৃদ্ধ হবে দেশ ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রাবি: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, শুধু দীর্ঘমেয়াদে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারলেই বাংলাদেশ সমমানের অন্য দেশগুলোকে পেছনে ফেলে এগুতে পারবে। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে সহনশীলতা নিশ্চিত হলে আমরা নিঃসন্দেহে সমৃদ্ধির দৌড়ে প্রথম সারিতেই থাকবো।  
 
শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অর্থনীতি বিভাগের হীরক জয়ন্তী ও প্রাক্তন ছাত্রদের দ্বিতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
 
ড. আতিউর রহমান বলেন, যে পাকিস্তান থেকে আমরা আলাদা হয়েছি, সেই পাকিস্তান এখন অর্থনীতির প্রায় সব ক্ষেত্রেই আমাদের চেয়ে পিছিয়ে পড়েছে। এককালের নেতিবাচক ধারণা পোষণকারী বিদেশি পর্যবেক্ষকরা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে এখন বাংলাদেশকে উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছেন। কেউবা রোল মডেলও বলছেন। নামকরা সব বিশ্ব গণমাধ্যমের চোখের হালে বাংলাদেশের বিস্ময়কর অগ্রগতির ভঙ্গিটি প্রতিনিয়তই ধরা পড়ছে। বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণায় এখনও বাংলাদেশ উন্নয়নের পরীক্ষাগার, তবে ইতিবাচক অর্থে।  
   
ড. আতিউর রহমান বলেন, বর্তমানে অর্থনীতি ও আর্থিক খাতে যে গতি এসেছে, তাকে আরো বেগবান করবার জন্য ব্যাংকিং খাতে যদি প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে পারি তাহলে সহজেই আমরা আজকের ২০০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিকে আগামী ১০ বছরের মধ্যেই ৫০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে পারবো। যে জন্য আমাদের জাতীয় সঞ্চয়ের হার আরো বাড়াতে হবে এবং সেই সঞ্চয়কে উৎপাদনশীল খাতে বেশি করে বিনিয়োগ করতে হবে। বিনিয়োগের সময় বিত্তবানদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের জন্যও বাড়তি বিনিয়োগের সুযোগ করে দিতে হবে।  
 
তিনি আরও বলেন, আমরা আজ উন্নয়নের এক ঐতিহাসিক যুগসন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। আমাদের সচেষ্ট স্বাধীনতার ফলস্বরূপ হালের গতিময় অর্থনীতির বিশ্লেষণ ও আগামী দিনের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার গ্রহণের এখনই সময়।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আরও বলেন, এই মুহূর্তে সারাবিশ্বের প্রবৃদ্ধি যেখানে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ, যেখানে গত অর্থবছরে ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের হাতেগোনা তিন-চারটি দেশের একটি, যারা গত এক দশক ধরে গড়ে ৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করে চলেছে। চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার আরো বেশি হবে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা ‘ব্লুমবার্গ’ আভাস দিয়েছে, চলতি বছর প্রবৃদ্ধির হার অর্জনে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয় হবে।  
 
এছাড়া গভর্নর ড. আতিউর রহমান তার বক্তব্যে বাংলাদেশের রপ্তানি খাত, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স, শিক্ষা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা অপুষ্টি দূরীকরণ, দারিদ্র্যের হার নামিয়ে আনা, অবকাঠামো, বিদ্যুৎসহ আরো অন্যান্য খাতের উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন অর্থনীতি বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর মুহম্মদ মিজানউদ্দিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী সারওয়ার জাহান, সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক প্রফেসর সনৎকুমার সাহা, অর্থনীতিবিদ ও গবেষক ড. মোস্তফা কামাল মুজেরী প্রমুখ।
 
এর আগে, বিকেল পৌনে ৪টার দিকে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনের সামনে জাতীয় সঙ্গীত ও বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন অতিথিরা।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৬  
এমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।