ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

রাসায়নিকমুক্ত হাওরের মাছ, দাম তাই বেশি!

রহমত উল্যাহ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৬
রাসায়নিকমুক্ত হাওরের মাছ, দাম তাই বেশি! ছবি: শাকিল/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বিষাক্ত রাসায়নিক আর বরফে চুবানো মাছের ছড়াছড়ি রাজধানীর বাজারজুড়ে। সেসব মাছের স্বাদ তো নেই-ই, সঙ্গে রয়েছে নানা রোগের আতঙ্ক।

যদি রাজধানীতেই পাওয়া যায় হাওরের জলজ্যান্ত আর বিষমুক্ত মাছ! কেমন হবে?

যাত্রাবাড়ীতে পাওয়া যায় সিলেট অঞ্চলের হাওরের শিং, মাগুর, কৈ, শোল ও টাকি মাছ। বছরের প্রায় নয় মাস এসব মাছ পাওয়া যায় গুটি কয়েক আড়তে‌। সিলেটের হাওর এলাকার এসব মাছের স্বাদ অতুলনীয়। দেশের অন্যান্য জেলায়ও এসব মাছ পাওয়া গেলেও হাওরের মাছের সঙ্গে তার তুলনাই হয় ‍না।

হাওর থেকে ধরার সঙ্গে সঙ্গে মিঠা পানি ভর্তি ড্রামে জিইয়ে রাখা হয় এসব মাছ। ধরার ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই হাজির করা হয় রাজধানীতে।

হাওরের এসব মাছের চাহিদা ও দাম খানিকটা বেশি বলে বাংলানিউজকে জানান যাত্রাবাড়ীর রাজধানী আড়তের ম্যানেজার মো. মফিজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, হাওর থেকে মাছ নিয়ে সন্ধ্যায় সিলেট থেকে রওয়ানা হয়। মধ্যরাতে পৌঁছে যাত্রাবাড়ী। এসব মাছে রাসায়নিক দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মারা যায়। এ কারণে এসব মাছে বিষ দেওয়া হয় না।

প্রতি ট্রাকে মাছভেদে ৫০ থেকে দেড়শ’ ড্রাম মাছ থাকে। আর প্রতি ড্রামে মাছভেদে থাকে ৩০ থেকে ৪০ কেজি। ভোর রাত থেকে বিক্রি শুরু, সকাল হওয়ার আগেই শেষ হয়ে যায়।
 
মফিজুল আরও জানান, শোল মাছ কেজিতে একটা, মাগুর ৬ থেকে ৭টা, কৈ ১০ থেকে ১৫টা, টাকি ৪০ থেকে ৫০টা এবং শিং ৩০ থেকে ৪০টা হয়।

শোল প্রতি কেজি ৪শ’ টাকা ও প্রতি মণ ১৬ হাজার টাকা, মাগুর প্রতি কেজি ৭শ’ ও প্রতি মণ ২৮শ’ টাকা, শিং প্রতি কেজি ৬৮০ টাকা ও প্রতি মণ ২৩শ’ টাকা, টাকি প্রতি কেজি ১শ’ টাকা ও প্রতি মণ ৪ হাজার টাকায় পাইকারি দরে বিক্রি হয়।

মিঠা পানি ও ডিপ টিউবয়েলের পানি ছাড়া অন্য পানি বা যেকোনো রাসায়নিক ব্যবহার করলে হাওরের মাছ মারা যায় বলে জানান মফিজুল। যাত্রাবাড়ীতে একমাত্র রাজধানী আড়তেই হাওরের এসব মাছ পাওয়া যায় বলে দাবি করেন তিনি।
 
যাত্রাবাড়ী থেকে পাইকাররা রাজধানীর শান্তিনগর, ফকিরাপুল, নয়াবাজার, মালিবাগ, খিলখেত, ধনিয়া বাজার, ডেমরা, দোলাইপাড়, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার বাজারে নিয়ে যায়।
 
দাম, চাহিদার সাথে লাভও খারাপ হয় না। প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকার এ মাছ বিক্রি হয়। বিশেষ করে বিষমুক্ত মাছপ্রেমীরা বেশি আসে বলে জানান মফিজুল ইসলাম।
 
অপরদিকে; বরফ ও রাসায়নিক বিহীন মেঘনা দাউদকান্দির তাজা মাছের জন্যও এ আড়ৎ বিখ্যাত বলে আবুল হোসেন নামে একজন আড়তদার বাংলানিউজকে জানান।
 
তিনি বলেন, মেঘনা-দাউদকান্দির মিঠা পানির সব মাছ ভোর রাত থেকে এ আড়তে পাবেন। দাম একটু বেশি হলেও শতভাগ বিষমুক্ত ও সুস্বাদু মাছ পাওয়া যায়।

এরমধ্যে গলদা চিংড়ি, ছোট ও বড় চিংড়ি, বোয়াল, আইর, পাবদা, টাটকিনি, বাইম, ছোট ও বড় পুঁটি, বড় রুই, বড় চেঙ্গুয়াসহ বেশ কয়েকটি নদীর তাজা মাছ পাওয়া যায় রাজধানী আড়তে।
 
চেঙ্গুয়া ৪ থেকে ৫শ’, বোয়াল ৭ থেকে ৮শ’, বড় চিংড়ি ১ হাজার ২শ’, পাবদা ৮শ’ থেকে ১ হাজার ২শ’, গলদা ১ হাজার ২শ’ কেজি প্রতি ‍দাম হয়।
 
অন্য জেলা থেকে আসা এসব মাছের দাম সিলেটের হাওরাঞ্চলের মাছের মতো হয় না। তাজা ও বিষমুক্ত বলে অনেকে আগে থেকেই অর্ডার দিয়ে রাখে বলেও জানান আবুল হোসেন।
 
এসব মাছ ছাড়াও এ বাজারে তাজা ও জ্যান্ত হাইব্রিড কৈ, রুই, কাতলা, পাঙ্গাসসহ বেশ কিছু মাছ পাওয়া যায়।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৬৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৬
আরইউ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।