ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ইবিএল’র সেই এটিএম বুথ...

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০১ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৬
ইবিএল’র সেই এটিএম বুথ... ছবি: দীপু মালাকার - বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: রাজধানীর গুলশান সার্কেল ১ এর গুলশান এভিনিউ এলাকার লায়লা টাওয়ারে এটিএম বুথে স্কিমিং ডিভাইস বসিয়ে মাহবুবা আকতার নামে এক গ্রাহকের কার্ডের তথ্য চুরি করেছিল প্রতারক চক্র।
 
সেই তথ্য দিয়ে তৈরি করা হয় নকল এটিএম কার্ড।

মাহবুবার একাউন্ট থেকে মিরপুরের রোকেয়া সরণীতে অবস্থিত মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের বুথ থেকে দুই দফায় আশি হাজার টাকা ত‍ুলে নেয় প্রতারক চক্রটি। এ ঘটনা ঘটে চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকালে।
 
মাহবুবা আকতারসহ ইস্টার্ন ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড, দ্য সিটি ব্যাংক ও মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ৪০ গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে ২০ লাখ ৫৯ হাজার হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্রটি।
 
এ ঘটনার পর চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম ডিপার্টমেন্ট এটিএম লেনদেন নিরাপদ ও ঝুঁকি মোকাবেলায় ব্যাংকগুলোর করণীয় সর্ম্পকে প্রজ্ঞাপন জারি করে।
 
ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এটিএম বুথগুলোতে নিয়োজিত গার্ডদের জাল-জালিয়াতি প্রতিরোধে করণীয় সর্ম্পকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এছাড়াও টুপি ও সানগ্লাস পরিধানকারী এবং ব্যাগ বহনকারী গ্রাহকদের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।
 
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন জারির পর ব্যাংকগুলো কতটা সতর্কাবস্থান নিয়েছে- তা দেখতে সোমবার (২৮মার্চ) সকাল থেকে গুলশান সার্কেলে স্থাপিত বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথে সরেজমিন ঘোরা হয়।  
লায়লা টাওয়ারে স্থাপিত ইবিএল এর এটিএম বুথের সামনে অবস্থান করে দেখা যায়, গ্রাহক টাকা তুলতে ভেতরে প্রবেশ করছেন, আবার টাকা তুলে বের হচ্ছেন- এ সময় বুথের সামনে সিকিউরিটি গার্ড নেই। টাকা তোলার সময় ব্যাগ নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলেও সিকিউরিটি গার্ড তাতে বাধা দিচ্ছেন না। এক নারী বুথের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন। পাশেই দাঁড়িয়ে আছে সিকিউরিটি গার্ড।
 
টাকা তোলার সময় গ্রাহকের চলাফেরা নজরে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে লায়লা টাওয়ারের বুথে কিছু জানেন না বলে জানান ওই সিকিউরিটি গার্ড।
 
ইবিএবএল’র গ্রাহক মাসুদুর রহমান বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা না মানা ও বুথে দায়িত্বরত সিকিউরিটি গার্ডকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ না দিলে ভবিষ্যতে বিকল্প প্রতারণার শিকার হতে পারেন ইবিএল’র গ্রাহক।
 
এবিষয়ে জানতে ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী রেজা ইফতেখারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, একটি মিটিংয়ে ব্যস্ত আছি। পরে কথা বলব।
 
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, ইস্টার্ন ব্যাংকের ২৮ গ্রাহকের কার্ড নকল করে ১৭ লাখ ৫৩ হাজার, সিটি ব্যাংকের ৪ গ্রাহকের ১ লাখ ৪০ হাজার, ইউসিবি’র ৭ গ্রাহকের ১ লাখ ২৬ হাজার এবং মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এক গ্রাহকের কার্ড ক্লোন করে ৪০ হাজার টাকা তোলা হয়। এসব ব্যাংকের এটিএম বুথে স্কিমিং ডিভাইস স্থাপন কর‍া হয়।
 
প্রজ্ঞাপনের নির্দেশনা পরিপালনের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা বাংলানিউজকে বলেন, সব নির্দেশনাই পালন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কেউ না করলে খোঁজ নিয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৬
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।