ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

জীবন বিমার ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত ব্যয় ২ হাজার কোটি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০১৬
জীবন বিমার ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত ব্যয় ২ হাজার কোটি

ঢাকা: বিগত পাঁচ বছরে (২০১১-২০১৫) বিনা প্রয়োজনে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় দেখিয়ে দুই হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে দেশের জীবন বিমা কেম্পানিগুলো। এ টাকার ব্যয়ে বিমা খাত যে কি ধরনের ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে, তা আপনারা কখনো কল্পনা করতে পারবেন না।

এতে পলিসি হোল্ডার ও শেয়ারহোল্ডাররা মুনাফা পচ্ছেন না। অপরদিকে সাধারণ মানুষ এ খাতের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন।

 

 
বুধবার (০৬ এপ্রিল) বিমা বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইন্স্যুরেন্স রিপোর্টারস ফোরামের (আইআরএফ) সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান এম শেফাক আহমেদ এ কথা বলেন।
 
আইডিআরএ’র নিজস্ব ভবনে আয়োজিত সভায় তিনি বলেন, পলিসি হোল্ডারদের আমানতের এ টাকায় ব্যবসা করে ভালো মুনাফা দেওয়ার পরিবর্তে, পলিসি হোল্ডারদের আমানতের টাকা অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় দেখাচ্ছে।

বিমা কোম্পানিগুলো ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম আর করতে না পারে সেজন্য, নতুন করে লাইসেন্স নবায়নের ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। যা আগামী দু’এক দিনের মধ্যে সব কেম্পানির এমডি বরাবর পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।
 
গত ৫ বছরের পরিসংখ্যান তুলে আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, ২০১১ সালে আইডিআরএ গঠন করা হয়েছে। এরপর থেকে নজরদারি করার পর, ক্রমান্নয়ে অতিরিক্ত ব্যয় কমে আসছে।

তিনি বলেন, ২০১০ সালে ১৮টি জীবন বিমা কোম্পানির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় ছিলো এক হাজার কোটি টাকা। সেখান থেকে ২০১৫ সালে কমে এসেছে ২১১ কোটি টাকা। এ ব্যয় যেন শূন্যের কোটায় নিয়ে আসা যায় সেভাবে কার্যক্রম চালাচ্ছে আইডিআরএ। কিন্তু লোকবল না থাকায় এ কাজ  করা যাচ্ছে না।
 
তিনি বলেন, সাধারণ বিমা ও জীবন বিমা প্রতিষ্ঠান মিলে দেশে ৭৭টির মতো বিমা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যে পরিমাণ লোকবল প্রয়োজন  আইডিআরএ’র তা নেই। বর্তমানে যে লোকবাল রয়েছে তাতে ২৫ শতাংশ কার্যক্রম চালাতে পেরেছি। প্রয়োজন থাকলেও বাকি ৭৫ শতাংশ কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে আইডিআরএ।
 
এসময় আইডিআরএ’র সদস্য সুলতান আবেদিন মোল্লা, জুরের আহমেদ খান, মুরশিদ আলম উপস্থিত ছিলেন।

আইআরএফ সভাপতি গোলাম সামদানিসহ সদস্যরা, বিমার উন্নয়নে এবং এ খাত নিয়ে মানুষের মাঝে বিদ্যমান নেতিবাচক ধারণা দূর করতে বেশ কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
 
শেফাক আহমেদ বলেন, দেশে প্রধান ৩টি আর্থিক খাত হলো- ব্যাংকিং খাত, পুঁজিবাজার ও বিমা খাত। ব্যাংকিং খাত ও পুঁজিবাজার যেভাবে এগিয়েছে, দুঃখজনক হলেও সত্য বিমা খাত সেভাবে এগুতে পারেনি। এর অন্যতম কারণ, নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমাদের যথেষ্ঠ লোকবল ও অবকাঠামোর অভাব।

এছাড়া আরেকটি বড় সমস্যা হলো বেসরকারি খাতের বিমা কোম্পানিগুলো পরিচালনার জন্য দক্ষ ব্যবস্থাপক সংকট। প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনার জন্য যে ধরনের দক্ষ লোক দরকার, তা নেই। এতে করে পরিচালন অদক্ষতার কারণে বিমা খাতে নানা অনিয়ম হচ্ছে। ফলে এ খাতের উপর জনগণের আস্থার পরিবেশ তৈরি হচ্ছে না।

নানা কারণে শুরু থেকেই বিমা খাতটি অবহেলিত ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আইডিআরএ নিরবভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে এবছর প্রথমবারের মতো বিমা মেলার আয়োজন করা হয়েছে। বছরের শেষের দিকে বিভাগভিত্তিক বিমা মেলার আয়োজন করা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৬
এমআই/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।