ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

জীবন বিমার বিনিয়োগ নন-ব্যাংকিং খাতে অনিরাপদ!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০১৬
জীবন বিমার বিনিয়োগ নন-ব্যাংকিং খাতে অনিরাপদ!

ঢাকা: দেশে চলমান পরিস্থিতিতে আর্থিক খাতে বিনিয়োগকে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ও অনিরাপদ বলে মনে করে জীবন বিমা কোম্পানিগুলো। আর সবচেয়ে নিরাপদ মনে করে ব্যাংক খাতকে।

এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পুঁজিবাজার আর তৃতীয় স্থানে রয়েছে আবাসন খাতে বিনিয়োগ। আইডিআরএ’র  প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

 

তাই গ্রাহকের পলিসির এই টাকা নন-ব্যাংকিং খাত অর্থাৎ আর্থিক খাতের একক কোম্পানি ২ শতাংশ আর এ খাতে সবোর্চ্চ ১০ শতাংশ বিনিয়োগ করার সুবিধা রাখা হয়েছে। কোম্পানির চাহিদার আলোকে বিমা নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) এই বিধান রেখে জীবন বিমা কোম্পানির বিনিয়োগের প্রবিধান তৈরি করেছে।

প্রবিধানের খসড়া চূড়ান্ত করে আইডিআরএ অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক বিভাগের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছে। আশা করা হচ্ছে, শিগগিরই বিষয়টি চূড়ান্ত করে মন্ত্রিসভায় পাশ হবে।

তবে নন-ব্যাংকিং খাতে বিমা কোম্পানির বিনিয়োগের সুবিধা ব্যাংক খাতের মতো রাখার দাবি জানিয়েছে আর্থিক খাতের কোম্পানিগুলো।

বিমা কোম্পানি তাদের মোট জামানতের ২ শতাংশের বেশি কোনো একক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এবং একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সব মিলিয়ে ১০ শতাংশের বেশি জমা রাখতে পারবে না- আইডিআরএ’র নিয়মে আপত্তি তুলেছেন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ও বিডি ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুদ্দিন সরকার।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ব্যাংক খাতের মতো সুবিধা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।

আইডিআরএ সূত্রে জানা গেছে, বিমা কোম্পানিগুলো তার আমানতের মোট ১০ শতাংশ নন-ব্যাংকিং খাতে বিনিয়োগ করতে পারবে। তবে একক কোম্পানিতে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ বিনিয়োগ করতে পারবে। সবেচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করতে পারবে ব্যাংক খাতের সব তফসিলি ব্যাংকে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকিং খাতে সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ আর একক ব্যাংকে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ বিনিয়োগ করতে পারবে।

এছাড়া পুঁজিবাজারে সর্বোচ্চ ৩০, আবাসন ও বস্ত্র খাতে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ বিনিয়োগ করতে পারবে। তবে সরকারি খাতের ৩০ শতাংশ বিনিয়োগের পর বাকি ৭০ শতাংশ টাকা বিনিয়োগ করতে পারবে বিমা কোম্পানি।

এ বিষয়ে আইডিআরএ’র সদস্য সুলতান আবেদিন মোল্লা বাংলানিউজকে জানান, আন্তর্জাতিক মান বজায়ে রেখে জীবন বিমা কোম্পানিগুলোর জন্য বিনিয়োগের জন্য প্রবিধান করা হচ্ছে। অনেক যাচাই-বাছাই করে প্রবিধানটি’র চূড়ান্ত করা হয়েছে। মন্ত্রিসভায় পাশের জন্য পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, এ প্রবিধানের ফলে বিমা কোম্পানিগুলো গ্রাহকদের অর্থ নিজস্ব কোম্পানিতে ইচ্ছামতো বিনিয়োগ করতে পারবে না। ফলে কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার ও পলিসিহোল্ডাররা ভালো মুনাফা পাবেন। কোম্পানি চাকরিজীবী কর্মকর্তারাও ভালো বেতন পাবেন। এতে সবাই খুশি হবেন।

নতুন প্রজন্মের বিমা কোম্পানি মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বোরহান উদ্দিন মজুমদার বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিটি সেক্টরের কোম্পানি কোথায় কত শতাংশ বিনিয়োগ করতে পারবে, সে বিষয়টা নির্ধারিত থাকে।

তিনি বলেন, বিমা কোম্পানির ক্ষেত্রেও তাই হওয়া উচিৎ। তবে এক্ষেত্রে বিমা মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন ও বিমা কোম্পানির এমডিদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরামের সঙ্গে আলোচনা করে সবার মতামতের ভিত্তিকে করা উচিৎ।

ব্যাংকের তুলনায় লিজিং প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে বিধান  রাখা হচ্ছে তা ঠিক আছে কিনা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এতো নিরাপত্তা ও জবাবদিহিতার পরও বাংলাদেশ ব্যাংকের রির্জাভ থেকে টাকা চুরি হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে লিজিং প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিনিয়োগের সুযোগ যা রাখা হচ্ছে তাই বেশি। তবে তিনি সরকারি খাতে মোট বিনিয়োগের ৩০ শতাংশ রাখা হচ্ছে তা আরো কমানোর দাবি জানান।
 
বাংলাদেশ সময়: ১১১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০১৬
এমআই/এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।