মানুষের জীবন-যাত্রার মানের পরিবর্তনের সঙ্গে শতরঞ্জির সেই ব্যবহার এখন আর নেই। তবে নামটি এখনও রয়ে গেছে।
কোচ রাজার শাসনামলে ‘শতরঞ্জি’ পণ্যটি উত্তরবঙ্গের জনপদগুলোতে বেশ জনপ্রিয়তা পায় বলে কথিত রয়েছে। ধীরে ধীরে এটি বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলেও পরিচিতি পায়। তবে বর্তমানের পণ্যটির ব্যবহার প্রণালীতে ভিন্নমাত্রা এসেছে।
নানা ব্যবহারের কথা মাথায় রেখে গড়ে ‘শতরঞ্জি’ নামেই একটি কারুশিল্প প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠেছে। যার সুনাম এখন দেশে-বিদেশে। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশে ‘শতরঞ্জি’ নামে ঘর সাজানো একই সঙ্গে ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন প্রকার ও সাইজের মেট রফতানি করছে। এ নামটি এখন ব্র্যান্ড নামেও পরিণত হয়েছে।
ঢাকার শুক্রাবাদে একটি এবং রংপুরে দু’টি আউটলেট আছে প্রতিষ্ঠানটির। চলমান ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় (ডিআইটিএফ) বাহারি রঙের মেট নিয়ে ‘শতরঞ্জি’ একটি প্যাভিলিয়নও সাজিয়েছে।
প্যাভিলিয়নের ইনচার্জ মোহাম্মদ জলিল বাংলানিউজকে বলেন, শতরঞ্জির আগের ব্যবহার নেই। আগে এর আকার ছিল অনেক লম্বা। যা মেঝেতে বিছিয়ে খাওয়া-ঘুমানোর কাজে ব্যবহার হতো। এর ছিল বাহারি রঙ। তাই এর নামকরণ হয় শতরঞ্জী। তবে প্রয়োজনের মাত্রা পরিবর্তন হওয়ায় শতরঞ্জির সেই ব্যবহার আর নেই। বাংলার ওই ঐতিহ্য যাতে হারিয়ে না যায়, সেজন্য শতরঞ্জিকে বিভিন্ন সাইজে এনে নানা ধরনের মেট উৎপাদন করছে কারুপণ্য প্রতিষ্ঠানটি।
বাণিজ্য মেলায় বিভিন্ন প্রকারের শতরঞ্জির মধ্যে রয়েছে- ফ্লোর মেট, ওয়াল মেট, বেড মেট, বাথ মেট ইত্যাদি। যা উল কটন, পিউর কটন, একরেলিস কটন, শ্যানেল কটন ও জুট কটন দিয়ে তৈরি করা হয়। মেলা উপলক্ষে প্রতিষ্ঠানটি দিচ্ছে ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়। এছাড়া একটি পণ্যের সঙ্গে ৩টি পর্যন্ত পণ্য ফ্রিও দেওয়া হচ্ছে।
২ফিট বাই ৩ফিট আকারের ২টি বেড মেট নিলে দাম পড়বে ১৮০ টাকা। দু’টি নিলে তিনটি ফ্রি।
বাথ মেট আছে, যা বাথরুমের দরজার সামনে ব্যবহার করা যায়। ৩৬০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে পাঁচটি।
ফ্লোর মেট আছে ৫ ফিট বাই ৮ ফিট। দাম পড়বে ৫ হাজার ২৮০ টাকা। ফ্লোর মেটের ধরণ বুঝে ছাড় দেওয়া হচ্ছে ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। ফ্লোর মেট আবার ১০০ টাকা প্রতি বর্গফুট হিসেবেও বিক্রি হচ্ছে।
মেলায় টেবিল মেটও এনেছে প্রতিষ্ঠানটি। একসেট টেবিল মেটের দাম ৭৫০টাকা। গুণাগুণ ভেদে ছাড় দেওয়া হচ্ছে ২০ থেকে ৪০ শতাংশ।
এদিকে বিভিন্ন প্রকারের ব্যাগও এনেছে শতরঞ্জি। দাম পড়বে ৩শ থেকে ৫শ টাকা। এতে দেওয়া হচ্ছে ২০শতাংশ ছাড়।
শুধু ছাড়ের কারণেই নয়, দৃষ্টিনন্দন হওয়ায় শতরঞ্জির পণ্য মনে ধরেছে গৃহিণী সুপ্তি গুণধরের। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, শতরঞ্জির ব্যবহার ছোটবেলায় দেখেছি। কিন্তু এখন কেউ করেন না। তবে এরা শতরিঞ্জর ব্যবহার ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। তাই কিছু টেবিল মেট আর ওয়াল মেট আর ফ্লোর মেট নিয়েছি। তবে ফ্লোর মেটগুলো খাবার টেলিব, বসার টেবিল সাজাতে ব্যবহার করা যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৬
ইইউডি/এসএইচ
**দেশীয় কাপড়ের ব্লেজারের চাহিদা তুঙ্গে, দামেও সস্তা!
** টেকসই ফার্নিচার নিয়ে বাণিজ্যমেলায় বনশিল্প
**সকালে দর্শনার্থী শূন্য বাণিজ্য মেলা বিকেলে জমজমাট