ইকবাল মাহমুদ বলেন, মামলার পর বেসিক ব্যাংকের ঋণ পুনঃতফসিল হয়েছে ৩শ’ ৪২ কোটি টাকা। এছাড়া বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির মামলা একটি বড় বিষয়।
তিনি বলেন, বেসিক ব্যাংকের দুই হাজার ৩৬ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৩৪১ টাকা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ৫৬টি মামলার চার্জশিট দিতে সময় লাগছে সঠিক তদন্তের জন্য। সঠিক তদন্তে নিরপরাধ কোনো ব্যক্তি যেন যুক্ত না হয়, কিংবা কোনো অপরাধী যেন পার না পায় সেদিকেও নজর রেখে তদন্ত করতে হচ্ছে কমিশনকে।
বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির মামলাগুলোর ১৫৬ জন আসামির মধ্যে ব্যাংকটির কর্মকর্তা ২৬ জন। বাকি ১৩০ জন আসামি ঋণগ্রহিতা ৫৪ প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী ও সার্ভে প্রতিষ্ঠানের। এর মধ্যে ব্যাংকের সাবেক এমডি কাজী ফখরুল ইসলামকে ৪৮টি, ডিএমডি ফজলুস সোবহানকে ৪৭টি, কনক কুমার পুরকায়স্থকে ২৩টি এবং ডিএমডি এ মোনায়েম খানকে ৩৫টি মামলায় আসামি করেছে দুদক।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, চলতি বছর হবে দুর্নীতিকারীদের জন্য একটি আতঙ্কের বছর। এ বছর দুদকের গণশুনানি বাড়ানো হয়েছে। প্রতি মাসে তিনটি করে জেলা ও উপজেলায় দুদকের গণশুনানি অনুষ্ঠিত হবে। শুধু তাই নয়, গুণশুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার তিনদিনের মধ্যে ফলোআপ শুনানি করা হবে। যেখানে দুর্নীতিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা চাই দুর্নীতির সব ঘাট বন্ধ করতে।
এসডিজি বাস্তবায়নে সরকারকে সহযোগিতা করবেন জানিয়ে ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুর্নীতির কারণে এসডিজি অর্জনে সরকারকে পিছিয়ে পড়তে হয়। কেননা ২.৩ শতাংশ দুর্নীতির কারণে জিডিপি চলে যায়। অন্যদিকে ফৌজদারি মামলার বিষয়ে বলেন, কোনো ফৌজদারি মামলার আসামি পার পাবে না। এজন্য দুদকের পাশাপাশি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধে কাজ করতে হবে।
রাজধানীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি বাণিজ্য বিষয়ে নজরদারি করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, দুদকের কাছে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি বাণিজ্য হচ্ছে বলে দুদকের কাছে অভিযোগ রয়েছে। এজন্য সম্প্রতি ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দুদক তলব করেছে। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তীতে দুদক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। কেননা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যদি দুর্নীতি হয় তাহলে দুর্নীতি কোনোভাবেই রোধ করা যাবে না।
ইকবাল মাহমুদ ২০১৫ সালের পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, ২০১৫ সালে দুদকের কাছে অভিযোগ ছিল ১০ হাজার ৪শ’ ১৫টি আর অনুসন্ধানের জন্য গৃহিত হয়েছিল ১ হাজার ২শ’ ৪০টি। এছাড়া প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল ১৫৬টি। অন্যদিকে ২০১৬ সালে দুদকের কাছে অভিযোগ ছিল ১২ হাজার ৫শ’ ৬৮টি ও অনুসন্ধানের জন্য গৃহীত হয় ১ হাজার ৫শ’ ৪৩টি এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয় ৫৪৩টি। এছাড়া ২০১৫ সালে ফাঁদ মামলা হয় ৪টি যেখানে ২০১৬ সালে ফাঁদ মামলা হয়েছে ১৩টি। শুধু তাই নয়, ২০১৫ সালে দুদকের মামলায় সাজার হার ছিল ৩৭ শতাংশ যেখানে ২০১৬ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪.২ শতাংশ। আর এতেই বোঝা যায় দুদক এগিয়ে যাচ্ছে। এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা ও দুদক কমিশনার ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৭
এসজে/জিপি/এএ