যে কারণে এদেশে এই ইন্ড্রাস্ট্রির অমিত সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন তিনি। এখনই সময় ‘ট্যালেন্ট হান্ট’ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রতিভা খুঁজে নিয়ে আসা।
বুধবার (১১ জানুয়ারি) রাজধানীর মহখালিতে পর্যটন করপোরেশনে বাংলাদেশের শেফ ইন্ড্রাস্টির বিকাশ ও সম্ভাবনা নিয়ে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলেন। তার আগে পর্যটন করপোরেশন ও ন্যাশনাল হোটেল অ্যান্ড ট্যুরিজিম ট্রেনিং ইনস্টিটউটিটে প্রশিক্ষণাথীদের মুখোমুখি হয়ে বক্তব্য রাখেন।
মাত্র ১০ দিনের সফরে ঢাকা ও জন্মস্থান সিলেটে এসেছেন অলি খান। এনএইচটিটিআই অধ্যক্ষ পারভেজ আহমেদ চৌধুরী সম্প্রতি যুক্তরাজ্য সফরকালে তাকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছিলেন। ‘সেই ডাকেই এবার এলাম, যেন বাংলাদেশের শেফ ইন্ড্রাস্ট্রি আরও বিকশিত হয়’-বলছিলেন অলি খান।
কিশোর বয়সে বাবা-মায়ের সাথে যুক্তরাজ্যে গিয়েছিলেন। বয়সের কারণে সেখানে গিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সমস্যায় পড়েন। কলেজে ভতির জন্য ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জন শুরু করেন। এসময়ই কাজের সুযোগ পেয়ে যান।
বাবা-চাচাদের রেস্টুরেন্টে কাজ করতে আগ্রহী হন। কিন্তু রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করলেও তাদের পরিবারের কারোরই শেফ হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা ছিলো না। এই ক্ষেত্রটাই বেছে নেন তিনি। যেখান থেকে তার পরিচিতি এখন বিশ্বময়। যুক্তরাজ্যে বহু অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক মিডিয়ায়ও একাধিকবার আলোচনায় এসেছেন।
২০০২ এবং ২০০৩ সালে যুক্তরাজ্যে কারি শেফ কম্পিটিশনে পর পর দুবার বিজয়ী হন। ২০০৫, ২০০৬ এবং ২০০৮ সালে ভারত-বাংলাদেশে ব্রিটিশ বাংলাদেশি ফিউশন ফুড ফেস্টিভালে তার রান্না করা খাবার খ্যাতি ও প্রশংসা কুড়ায়। ‘সুরমা টেকওয়ে এবং স্পাইস রোজ এক্সকুইজিট ইন্ডিয়ান কুইজিন নামে তার দুটি প্রতিষ্ঠান একের পর এক অ্যাওয়ার্ড ও রেটিংয়ে সেরা হয়।
বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘শেফ পেশাকে খাটো করে দেখার কারণ নেই। বিশ্ব-পরিস্থিতি তার উল্টো। কারণ শেফের পেশা একটি সম্মানজনক পেশা। এবং শেফ হিসেবে অনেক বেশি আয়ের সুযোগ রয়েছে। ’
তিনি ২০০৫ থেকে বাংলাদেশের শেফ ইন্ড্রাস্ট্রির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এখন অনেক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হচ্ছে তার দৃষ্টিতে।
বললেন, ‘পযটন করপোরেশনে ঘুরেও অনেক পরিবর্তন দেখলাম। আমি তাদেরকে প্রস্তাব করেছি ‘শেফ ট্যালেন্ট হান্ট’ করার জন্য। কারণ তারা সরকারি এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি প্রতিষ্ঠান। যেভাবে দেশে ‘ক্ষুদে গানরাজ’ সহ বিভিন্ন ইভেন্ট চালিয়ে সারাদেশ থেকে গানের প্রতিভা খুঁজে বের করা হয়, এটাও তেমনিভাবে করা যেতে পারে। ’
অলি খান বলেন, ‘এতে দেখা যাবে অনেক নতুনত্ব বের হয়ে এসেছে। আর যারা শেফ হিসেবে কাজ করছে তারা প্রেরণা পাবে। প্রতিযোগিতায় যে ভালো করবে তার মধ্যে এগিয়ে যাওয়ার আরও স্পৃহা তৈরি হবে। সবমিলিয়ে এই ইন্ড্রাস্ট্রিজুড়ে সাড়া পড়বে। বহির্বিশ্ব বাংলাদেশ থেকে শেফ নেয়ার চাহিদা দেবে। ’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে এরকম প্রতিযোগিতার নমুনা আছে। বাংলাদেশে কয়েক ক্যাটাগরিতে এ প্রতিযোগিতা করা যেতে পারে।
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ফাইভ স্টারের খাবার আর বাংলা খাবার আলাদা করেই ক্যাটাগরি সাজাতে হবে এ প্রতিযোগিতার জন্য। আরেকটি ক্যাটাগরি থাকবে ইন্টারন্যাশনাল ফুডের ওপর। আরেকটি থাকবে পুরো দেশ থেকে উন্মুক্তভাবে নিউ ট্যালেন্ট নিয়ে আসার জন্য। এরকম ১০ টি ক্যাটাগরিতে এ কম্পিটিশন করা যেতে পারে। ’
‘প্রথমে স্থানীয় পর্যায় থেকে প্রতিযোগিতা শুরু করে বাছাই করে প্রতিভাগুলো কেন্দ্রীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। এরপর শর্ট লিস্ট করা যেতে পারে। ’
বাংলাদেশ সময়: ০৯১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৭
এসএ/জেএম