শনিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে রূপালী ব্যাংকের বার্ষিক ব্যবসায়িক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
গর্ভনর বলেন, গ্রাহকদের ঋণ দিতে আপনাদের কেন জড়তা বা ভীতি থাকবে? যদি আপনারা সঠিক নিয়ম ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পলিসি পরিপালন করে ঋণ দেন তাহলে কোনো অসুবিধা নেই, ভয়েরও কোরো কারণ নেই।
আপনারা অন্য কোনো বিভাগ বা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে বিপদে পড়বেন না। ঋণ তো দিতে হবে, আবার আদায়ও করতে হবে। না হলে ব্যাংকের অপারেটিং কস্ট তুলে প্রোফিট করতে পারবেন না।
গর্ভনর বলেন, এসএমই ঋণের প্রতি ফোকাস থাকতে হবে। কর্মসংস্থান দেশের একটি বড় সমস্যা। প্রতি বছর ১৮ থেকে ২০ লাখ মানুষ শ্রম বাজারে আসে তাদের মধ্যে কতটুকু এসএমই ঋণ দিতে পারি আপনারা জানেন?
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সবাইকে নিয়ে পর্যালোচনা করে দেখবো কৃষি ঋণের মত এসএমই ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিবো কিনা। প্রতিটি ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা থাকবে। যেমন কৃষি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তাই এসএমই ঋণেরও সেভাবেই একটি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা প্রয়োজন।
গর্ভনর বলেন, জামানত ছাড়া ঋণ বিতরণের বিষয়টি অত্যন্ত যুগোপযোগী কথা। কারণ কনজ্যুমার লোনে কোনো জামানত নেই। একই ভাবে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত মানুষের সনদকে জামানত হিসেবে নিয়ে ঋণ বিতরণ করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, রূপালী ব্যাংক লাভ না করতে পারলেও লোকসান অনেক কমিয়ে নিয়ে এসেছে। লোকসানী শাখাও কমেছে অর্ধশত। এছাড়াও বেশ কয়েকটি সুচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। ৫৬২শাখার ৫১০টি অনলাইন হয়েছে। ডিজিটাল বাংলার পথে অনলাইন হচ্ছে রূপালী ব্যাংক।
গর্ভনর বলেন, রাষ্ট্রীয় মালিনাকানাধীন সোনালী, রূপালী, অগ্রণী ও জনতা ব্যাংকে মোট আমানতের ২৬ শতাংশ এবং ঋণের ১৭ শতাংশ। এই চারটি ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারের মেগা প্রজেক্ট ও সেফটিনেট কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ৫৬টি ব্যাংকের ৯ হাজার ৬শ’ ৫৪টি শাখার মধ্যে ৩ হাজার ৬শ’ ৩টি শাখাই এই চার ব্যাংকের। আবার ব্যাংকিংখাতের ৬৫ হাজার ৭শ ৩১ কোটি টাকা খেলাপী ঋণের মধ্যে ২২ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা এ চার ব্যাংকের।
রূপালী ব্যাংকের একজন পরিচালকের বরাত দিয়ে গভর্নর বলেন, রূপালী ব্যাংকের ৩০ শতাংশ ঋণ ২০ জন গ্রহীতার কাছে খেলাপী। গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষন ও আইনের মাধ্যেমে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- রূপালী ব্যাংকের এমডি আতাউর রহমান প্রধান। বক্তব্য রাখেন- চেয়ারম্যান মনজুর হোসেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব ফজলুল হক, পরিচালক অরিজিত চৌধুরী, অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশিদ,আব্দুল বাসেত খান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৭/ আপডেট ১৯৩৫
এসই/বিএস