ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সোনালী ব্যাংক নিয়ে আশাহত মুহিত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৭
সোনালী ব্যাংক নিয়ে আশাহত মুহিত সোনালী ব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী / ছবি: জি এম মুজিবুর

ঢাকা: অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, সোনালী ব্যাংক কিছুদিন আগেও সরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ব্যাংক ছিলো। বর্তমানে এই অবস্থান থেকে একটু পেছনে পড়ে গেছে। সাময়িক এই অবস্থা থেকে অতিসত্বর তারা আগের অবস্থান দখল করবেন বলে আমার বিশ্বাস। 

রোববার (০৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে সোনালী ব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলন-২০১৭-তে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।  

অর্থমন্ত্রী বলেন, সোনালী ব্যাংকের বিভিন্ন স‍ূচক দেখে আশান্বিত হওয়ার সুযোগ নেই।

মূলধন ঘাটতি সমস্ত ব্যাংকের মধ্য সবচেয়ে বেশি। শ্রেণিকৃত ঋণ এক চর্তুথাংশের বেশি। লোকসানি শাখাও এক চর্তুথাংশের মতো। এসব সূচক খুব বেশি আশার সঞ্চার করে না।  

তিনি বলেন, আমি তাদের টার্গেট দিয়েছি। আগামী দুই বছরের মধ্যে দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যাংক হতে হবে। এটা মস্ত বড় চ্যালেঞ্জ, সোনালী ব্যাংকের এটা নেওয়া উচিত। বৃহত্তম সরকারি ব্যাংক হিসেবে বাজারে সোনালী ব্যাংকের গ্রহণযোগ্যতাও উচুমানের। এই গ্রহণযোগ্যতা যেকোনো ব্যাংকের জন্য কৃতিত্ব ও মূলধন। এই মূলধনের উপর ভিত্তি করেই এগিয়ে যেতে হবে। মূলধন ঘাটতি পূরণে সরকার সাহায্য করবে। শ্রেণিকৃত ঋণ কমানোর দায়িত্ব তাদের। যদিও সরকারি হুকুমে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের ঋণ দিয়েছে।

মুহিত বলেন, আপনারাও এই চ্যালেঞ্জ নিতে পারেন। সরকার যেকোনো প্রতিষ্ঠানের মতো দক্ষ হতে পারে যদি তার সাহস থাকে এবং যদি মানুষ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়। বাংলাদেশের সেই ক্ষমতা রয়েছে। সেটা আমাদের দেশের মানুষ বিশ্বাস করে।  

‘জনগণে বিশ্বাস থাকলে আমরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবো। অনেক কৃতিত্ব দেখাতে পারবো। সেই কৃতিত্ব দেখানোর একটা সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে ব্যাংকিং সেক্টরে। ’ 

ব্যাংকিং সেক্টরের দ্রুত প্রগতি আশা করেন মুহিত। তিনি বলেন, এ প্রগতিকে ধরে রাখার জন্য একটা শক্ত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠা করার অঙ্গীকার আমাদের রয়েছে। এজন্য যথাযথ ব্যবস্থা আমরা আমাদের এই মেয়াদেই হাতে নেবো। সেটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পড়বে পরবর্তী সরকারের হাতে।  

মুহিত বলেন, ব্যাংকিং সেক্টর আমাদের দেশ বেশ প্রবৃদ্ধ। আমি মনে করি, ৪৮টি ব্যাংক অনেক বেশি নয়। যখনই চাপ পড়বে স্বাভাবিকভাবেই মার্জার ইত্যাদি হতে থাকবে। সরকার এজন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। এজন্য আইন ও দেউলিয়া আইন প্রয়োজন রয়েছে, যেগুলো আমাদের নেই। আশা করছি, আগামী দু’বছরের মধ্যে প্রস্তুত থাকবো।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের ব্যাংকিং সেক্টর বেশ উন্নত, এর হয়তো দুর্বলতাও রয়েছে। অনেকেই বলেন, একটা ব্যাংকিং কমিশন গঠন করা দরকার। আমি এতোদিন পর্যন্ত সেই ধারণা নেইনি। কারণ, আমার কাছে মনে হয়েছে- আমাদের উচ্চাভিলাষ-অভিযাত্রা গুচ্ছে এমন কোনো সংকট কখনও জন্ম নেয়নি।

তিনি বলেন, তবে আইন-কানুন রীতিনীতি ইত্যাদি দেখার জন্য একটা ব্যাংকিং কমিশন দরকার। কিন্তু সেটার সময় এখনও হয়নি। তবে মেয়াদের শেষদিকে এই বিষয়টা চিন্তা করতে পারি। কমিশনের ধারণা আগামী সরকারের জন্য রেখে যেতে পারি। তখন ব্যাংকিং সেক্টরের যে অবস্থা হবে, তখনই একটা কমিশন ব্যাংকিং সেক্টরকে সুদৃঢ় পথে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা বাতলাতে পারবে।    

মুহিত বলেন, দেশের জন্মলগ্নের পর সামান্য কিছু মানুষের কাছে ব্যাংকিং সেবা যথেষ্ট ছিলো। আজ এই সেবা ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষকে দিচ্ছে। এদিক দিয়ে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি। ১৬ কোটি মানুষের দেশে ব্যাংকের নয় হাজার ৫শ ৭২টি শাখা নিয়ে গর্ববোধ করতে পারি। ব্যাংকিং সার্ভিস জনগণের কাতারে নিয়ে চলে গেছি।

সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান আশরাফুল মকবুলের সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য রাখেন- অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবির, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমান ও সোনালী ব্যাংকের এমডি ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৭
এসই/এসএনএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।