তবে কোনোভাবেই বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বিবেচনায় পর্যালোচনা সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে বাকি পাঁচটি প্রকল্পকে এডিপি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
চূড়ান্তভাবে বাদ পড়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তিনটি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি এবং সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের একটি।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো বলছে, বাকি ৩৬টি প্রকল্পের মধ্যে নতুনভাবে ২২টির মেয়াদ বৃদ্ধি ও সাতটির প্রকল্প সংশোধন করে বাস্তবায়ন সম্ভব। অন্য সাতটি প্রকল্পের কম অগ্রগতি হলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই বাস্তবায়ন করা যাবে।
মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া ২২টি প্রকল্পের মধ্যে পাঁচটি রেলপথ, দু’টি নৌ-পথ, একটি পররাষ্ট্র, দু’টি স্বরাষ্ট্র, একটি খাদ্য, দু’টি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এবং নয়টি বিদ্যুৎ বিভাগের।
২০১৬-১৭ অর্থবছরের এডিপিতে অন্তর্ভূক্ত ও মেয়াদোত্তীর্ণ স্থবির অগ্রগতির প্রকল্প বিষয়ে প্রথম দফায় পর্যালোচনা সভা হয় গত বছরের ১৭ নভেম্বর। পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ওই সভায় ৪১টি প্রকল্পকে এডিপি থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিলো।
গত ০৭ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পগুলোর ওপর পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সম্মেলন কক্ষে ফের পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আইএমইডি’র সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় চূড়ান্তভাবে বাদ পড়ে ৫টি। বাকি ৩৬টি প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছিল আইএমইডি। তবে সংশ্লিষ্টরা অবহিত করেন যে, সংশোধন ও মেয়াদ বৃদ্ধি করলে সেগুলোর বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
পর্যালোচনা সভায় উপস্থিত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের যুগ্ম প্রধান নজরুল ইসলাম সরকার জানান, ৪১টি প্রকল্পই অনেক পুরনো। অগ্রগতির হার প্রায় শূন্যের কোঠায় থাকায়ই বাদ পড়েছে ৫টি। আশা জাগিয়ে রাখা ৩৬টির মধ্যে যে সকল প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি ও সংশোধনের প্রস্তাব এখনও করা হয়নি, সেগুলোর প্রস্তাব সিদ্ধান্ত অনুসারে নির্ধারিত সময়ে করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যে সমস্ত প্রকল্পের মেয়াদ হাতে রয়েছে, যথাসময়ে সেগুলো সম্পন্ন করতে হবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে।
বাদ পড়া রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য ২৬৪টি এমজি কোচ ও দু’টি বিজি ইন্সপেকশন কার সংগ্রহ’ প্রকল্পের মোট ব্যয় ছিলো ৯৮৩ কোটি টাকা। ২০১০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১২ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদিত প্রকল্পটির গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত আর্থিক অগ্রগতি ৩ লাখ ৩ হাজার টাকা ও বাস্তব অগ্রগতি শূন্য। এ দীর্ঘ সময়ে কেনা হয়নি একটি কোচও।
সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের ‘মধুমতি নদীর ওপর কালনা সেতু নির্মাণ’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মেয়াদ ছিল ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত। এখন পর্যন্ত প্রকল্পটির অগ্রগতি পাঁচ শতাংশের কম। শিল্প মন্ত্রণালয়ের ‘কুমিল্লা শিল্পনগরী-২’ প্রকল্পটিরও অগ্রগতি শূন্য। ২০১০ থেকে ২০১৭ সাল মেয়াদে বাস্তবায়িত হওয়ার কথা ছিল এটি।
একই কারণে বাদ পড়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ‘বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলোর সম্ভাব্যতা সমীক্ষা, সেফগার্ড পলিসি, বিস্তারিত ইঞ্জিনিয়ারিং ডিজাইন ও টেন্ডারিং সার্ভিস দেওয়ার লক্ষ্যে কারিগরি সহায়তা’ এবং ‘বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে রফতানি অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে কারিগরি সহায়তা’ প্রকল্প দু’টিও।
বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৭
এমআইএস/এএসআর