পাহাড় ও সমুদ্রে ঘেরা এ মেরিন ড্রাইভটিকেই আরও বেশি পর্যটকবান্ধব করে গড়তে যাচ্ছে সরকার। এ লক্ষ্যে সড়কটির দৈর্ঘ্য আরও ৩২ কিলোমিটার বাড়িয়ে মায়ানমার ছুঁই ছুঁই টেকনাফ পর্যন্ত প্রসারিত হবে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সূত্র জানায়, চলমান ‘কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ’ প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর ও ব্যয় ২৫৪ কোটি টাকা বাড়িয়ে সড়ককে করা হচ্ছে আরও বেশি নান্দনিক।
সূত্র জানায়, কক্সবাজারের সঙ্গে টেকনাফকে সংযুক্ত করতে বিদ্যমান ৪৮ কিলোমিটার সাগর ও পাহাড়ঘেরা সড়কটির উন্নয়নে প্রাথমিকভাবে ২০৩ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিলো। ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার কথা ছিলো।
এখন সড়কের দৈর্ঘ্য আরও ৩২ কিলোমিটার বাড়ানোর পাশাপাশি আরও কিছু অঙ্গ অন্তর্ভূক্ত করে এবং কিছু অঙ্গের ব্যয় বাড়িয়ে-কমিয়ে প্রকল্পটি সংশোধন করা হচ্ছে।
ফলে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৪৫৭ কোটি টাকা এবং মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এম এ এন সিদ্দিক বাংলানিউজকে বলেন, ‘আশা করা যাচ্ছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই আমরা মেরিন ড্রাইভের কাজ শেষ করতে পারবো। ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ব্যয় কিছুটা বাড়বে। সড়কটিকে আরও পর্যটকবান্ধব করতে দুই পাশে থাকবে ওয়াকওয়ে। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের সুবিধায় মেরিন ড্রাইভজুড়ে শেড, পার্কিং ও চেঞ্জিং রুমও করে দেবো। থাকবে ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট, তিনটি আরসিসি সেতু, ৪২টি বক্স কালভার্ট, তিন হাজার মিটার সসার ড্রেন এবং ৫০ হাজার মিটার সিসি ব্লক ও জিও টেক্সটাইলও’।
‘মোট ৮০ কিলোমিটারের এ সড়কটি মায়ানমারের সঙ্গে সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে অবদান রাখবে। অন্যদিকে এক সময় নান্দনিক সড়কটি দেখতেই ভিড় করবেন পর্যটকরা’।
সূত্র জানায়, তিন ধাপে আরও নান্দনিক করা হচ্ছে সড়কটি। প্রথম ধাপে কলাতলী থেকে ইনানী পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার, দ্বিতীয় ধাপে ইনানী থেকে শিলখালী পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ ইতোমধ্যেই নির্মিত হয়ে গেছে। তৃতীয় ধাপে চলছে শিলখালী থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার নান্দনিক সড়ক নির্মাণ কাজ।
এ প্রকল্পের আওতায় ১৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে অতিরিক্ত ১৭৯ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণের পাশাপাশি চার লাখ ঘনমিটার সড়কে মাটির কাজে সাড়ে ১২ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক রক্ষায় সিসি ব্লকসহ জিও টেক্সটাইল কেনা হচ্ছে আরও ৪৩ হাজার ৬০ বর্গমিটার। সাগরের ঢেউ থেকে সড়ক রক্ষায় প্রয়োজন অনুসারে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করতে ব্যয় ধরা হয়েছে আরও ১৮ লাখ টাকা।
নতুন আইটেম হিসেবে টেট্রা পড নির্মাণ খাতে ৪৯ কোটি টাকা, পেট্রোল ও লুব্রিকেন্ট খাত বাবদ ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা এবং দু’পাশের ওয়াকওয়ে, শেড, পার্কিং ও চেঞ্জিং রুম খাতে অতিরিক্ত ব্যয় হবে ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে আঞ্চলিক মহাসড়ক হিসেবে উখিয়া ও টেকনাফসহ উপজেলাগুলোকে কক্সবাজার জেলার সঙ্গে সমুদ্র সৈকত বরাবর সংযুক্ত করবে। পর্যটন ও মৎস্য শিল্পের বিকাশে সহায়তার পাশাপাশি পর্যটকদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক অবিচ্ছিন্ন সমুদ্র সৈকত পরিদর্শনে আরও সহায়ক হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৭
এমআইএস/এএসআর