ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ফারুক-রশিদের শেয়ার বাজেয়াপ্তে আপত্তি নেই জুবিলী ব্যাংকের

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৭
ফারুক-রশিদের শেয়ার বাজেয়াপ্তে আপত্তি নেই জুবিলী ব্যাংকের বঙ্গবন্ধুর দুই খুনি কর্নেল (অব.) সৈয়দ ফারুক রহমান ও কর্নেল (অব.) আবদুর রশীদ

ঢাকা: বঙ্গবন্ধুর দুই খুনি কর্নেল (অব.) সৈয়দ ফারুক রহমান ও কর্নেল (অব.) আবদুর রশীদের নামে কুষ্টিয়ার খোকসার জুবিলী ব্যাংকের ৮৫ হাজার শেয়ার বাজেয়াপ্ত করতে কোনো আপত্তি নেই বলে সরকারের সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

সম্প্রতি জুবিলী ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো এক চিঠিতে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মূল শেয়ারের অনুলিপি কুষ্টিয়ার খোকসায় ব্যাংক ম্যানেজারের কাছে জমা দিতে বলা হয়।

তখন ফারুক-রশিদ বা তাদের পরিবারের কেউ শেয়ারের অনুলিপি জমা না দেওয়ায় ব্যাংকের বোর্ড অব ডাইরেক্টরসের সভা এবং বার্ষিক সাধারণ সভায় তাদের শেয়ার স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
১৯১৩ সালে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা শহরের জানিপুরে জুবিলী ব্যাংক লিমিটেড প্রতিষ্ঠিত হয়। ভারত বর্ষের কোম্পানি  আইন অনুসারে সোনা, গহনা ও জমি বন্ধকের বিনিময়ে ব্যবসা শুরু করে ব্যাংকটি।

১৯৮২ সালের ১৫ এপ্রিল প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে যাত্রা শুরু করা জুবিলী ব্যাংক ১৯৮৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর স্বর্ণ বন্ধকীর বিপরীতে ব্যবসা পরিচালনার সীমাবদ্ধতা রেখে বাংলাদেশ ব্যাংকের লাইসেন্স পায়।

ব্যাংকটিকে সোনা বন্ধক নেওয়ার পাশাপাশি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কুটির শিল্প ও চাষিদের সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা প্রদান করে বাংলাদেশ ব্যাংক।  

ওই সময় স্পন্সর-পরিচালকদের ৮০ হাজার শেয়ার ও সাধারণ মানুষের মধ্যে এক লাখ শেয়ার বণ্টন করা হয়। ওই সময়ই ব্যাংকটির ২৫ টাকা মূল্যমানের ৮৫ হাজার শেয়ারের মালিক হন বঙ্গবন্ধুর দুই খুনি ফারুক ও রশীদ।

গত বছর বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফেরানো বিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্সের সভায় বঙ্গবন্ধুর দণ্ডিত পলাতক ছয় খুনি ও তাদের স্বজনদের নামে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

ওই বৈঠকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী উপস্থিত ছিলেন। সরকার কিছু সম্পদ ইতোমধ্যেই বাজেয়াপ্ত করেছে। বাকি সম্পদও বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে জুবিলী ব্যাংকে থাকা দুই খুনির শেয়ার বাজেয়াপ্ত করতে ব্যাংকের শেয়ার হোল্ডার বাবুল হোসেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর অর্থমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়। পরে মন্ত্রী দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন।

স্বাধীনতার পর ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হয়েছিলেন আফিল জুট মিলের মালিক খোকসার গনেশপুর গ্রামের মো. আফিল উদ্দিন। পরবর্তীতে চেয়ারম্যান হন ফ্রিডম পার্টির কো-চেয়ারম্যান ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের মিয়া আব্দুর রশিদ। ১৯৮৫ সালের দিকে ফ্রিডম পার্টির দুই নেতা খুনি কর্নেল (অব.) সৈয়দ ফারুক রহমান ও কর্নেল (অব.) খন্দকার আবদুর রশীদ আনুমানিক ৮৫ হাজার শেয়ারের মালিক হয়েছিলেন।  

সাংবাদিকরা জানতে চাইলে কিছুদিন আগে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. ইউনুসুর রহমান বলেছেন, শেয়ারগুলো বাজেয়াপ্ত করতে আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৭
এসই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।