‘ঢাকার উত্তরায় ১৮ নম্বর সেক্টরে নিম্নবিত্তদের জন্য অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ’ প্রকল্পটি ছয় বছর আগে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেকে) অনুমোদিত হয়। অন্যান্য পদ্ধতি ছাড়াও জি টু জি পদ্ধতিতে প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থের সংস্থান ছিলো।
তবে এবার ছয় মাসের মধ্যেই মালয়েশিয়ার সঙ্গে ৫ হাজার ২৮৫ কোটি টাকার বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।
রাজউক সূত্র জানায়, অর্থনৈতিক সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির নির্দেশনার আলোকে বুয়েট ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের নিয়ে টেকনিক্যাল কমিটি ও কমার্শিয়াল নেগোসিয়েশন কমিটি (সিএসি) গঠন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে ছয় মাসের মধ্যেই চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। মালয়েশিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসে কন্সট্রাকশন মেট্রোলজিও ঠিক করা হবে।
রাজউকের সদস্য (উন্নয়ন) আব্দুর রহমান বাংলানউজকে বলেন, ‘ছয় বছর আগের সঙ্গে বর্তমানের রেট সিডিউলের আকাশ-পাতাল পার্থক্য দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়ে গেছে। যে কারণে আমরা সংশোধন করে নতুনভাবে প্রকল্পটি শুরু করতে যাচ্ছি। প্রকল্পের নানা অঙ্গেও আসছে পরিবর্তন। মালয়েশিয়ার সঙ্গে বিনিয়োগ চুক্তির দুই বছরের মধ্যেই ৮ হাজার ৪০০টি ফ্ল্যাট নির্মাণ সম্পন্ন হবে’।
রাজউক সূত্র জানায়, নতুন বিল অব কোয়ানটিটি (বিওকিউ) হিসেবে আনুষঙ্গিক কাজ ও নাগরিক সুবিধাদিসহ প্রতি বর্গফুটের নির্মাণ ব্যয় ৩ হাজার ৪৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হচ্ছে। এ দর অনুসারে জি টু জি ভিত্তিতে মালয়েশিয়ার অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ৫ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হবে।
সূত্র জানায়, উত্তরা ১৮ নম্বর সেক্টরের বি ও সি ব্লকে একটি করে বেসমেন্টসহ একশ’টি ১৬তলা ভবনে ফ্ল্যাটগুলো নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে ৫২টি ভবনে ১ হাজার ২৫০ বর্গফুট আয়তনের ৪ হাজার ৩৬৮টি এবং ৪৮টি ভবনে ১ হাজার ৫০ বর্গফুট আয়তনের ৪ হাজার ৩২টি ফ্ল্যাট নির্মিত হবে।
পুরো প্রকল্পটি আদর্শ শহর হিসেবে গড়ে উঠবে। সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠ, বিদ্যুৎ ও পয়ঃনিষ্কাশন সুবিধা থাকবে।
ফ্ল্যাট ক্রেতাদের ঋণ সুবিধা দিতে একটি বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে ইতোমধ্যেই সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ফ্ল্যাটের মূল্য বাবদ ব্যাংক পুরো অর্থ দেবে। গ্রাহকরা পরবর্তীতে ব্যাংকের দায় পরিশোধ করবেন।
গ্রাহকদের ফ্ল্যাটের মোট টাকা ১২ বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। এর মধ্যে প্রথম চার বছরে সুদ ছাড়া ৫০ শতাংশ দিতে হবে। বছরে এক কিস্তি হারেও অর্থ পরিশোধ করা যাবে।
পরবর্তী আট বছরে ৯ শতাংশ সুদে বাকি ৫০ শতাংশ পরিশোধ করতে হবে। এক্ষেত্রেও বছরে নির্দিষ্ট পরিমাণে টাকা দিতে পারবেন গ্রাহকেরা।
ফ্ল্যাট নির্মাণের পর থেকেই গ্রাহকদের এ পেমেন্ট সিডিউল অনুসারে মালয়েশীয় বিনিয়োগের অর্থ পরিশোধ শুরু হবে। গ্রাহক পর্যায় থেকে কিস্তি বাবদ পাওয়া অর্থ সম্পূর্ণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত দেশটিকে দিতে থাকবে রাজউক।
রাজউকের সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, ‘ফ্ল্যাটগুলো ঢাকা থেকে কিছুটা দূরে, যেখানে উচ্চবিত্তরা যান না। উচ্চবিত্তরা গুলশান-বনানীতে ফ্ল্যাট কেনেন। আমরা নিম্নবিত্তদের কথা চিন্তা করেই ফ্ল্যাটের প্রতি বর্গফুটের দাম নির্ধারণ করে থাকি। যারা তা কিনতে সক্ষম, তারাই নিম্নবিত্ত’।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৭
এমআইএস/এএসআর