এখন আর ব্যাংক হিসাব খোলা ও লেনদেনের জন্য সঙ্গে করে জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপি ও ছবি নিয়ে যেতে হবে না। ছবি ও তথ্য দেখে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চাইলে আপনার লেনদেনটি সম্পন্ন করতে পারেন।
অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে কেন্দ্রীয় ভাবে ইলেকট্রিক গ্রাহক পরিচিতি সর্ম্পকিত ফরম’এ (ই-কেওয়াইসি) তথ্য সংগ্রহ করার উদ্যোগ নিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)।
কেওয়াইসি ফরম হচ্ছে, গ্রাহক সর্ম্পকে বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করার ফরম। ফরমে হিসাব খোলার জন্য গ্রাহকের পেশা, মাসিক আয়, আয়ের উৎস, অর্থের উৎস নিশ্চিত করার দলিল, ঠিকানা যাচাইয়ের জন্য পার্সপোট-জাতীয় পরিচয়পত্র-জন্ম নিবন্ধন সনদের যেকোন একটির ফটোকপি জমা দিতে হয়।
এসব তথ্য পূরণের পর সংশ্লিষ্ট শাখার মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ পরিপালন কর্মকর্তা গ্রাহকের সরাসরি সাক্ষাতকার ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমোদন নিতে হয়। তারপর খোলা হয় হিসাব।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, এসব তথ্য নিয়ে গ্রাহকের ই-কেওয়াইসি ফরম একবার পুরণ করা হলে পরবর্তীতে সব ধরণের আর্থিক সেবা প্রাপ্তিতে আর কখনোই এই ফরম পূরণ করতে হবে না গ্রাহককে। শুধু আঙ্গুলের ছাপ বা জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিলেই কেওয়াইসি ফরম পূরণের দায় থেকে মুক্তি মিলবে।
এজন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) এর নেতৃত্বে দশ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক অর্ন্তভূক্তি বিভাগ, নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় পত্র বিভাগ, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্টস ইউনিট (বিএফআইইউ), সরকারি-বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রতিনিধি ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে সদস্য করা হয়েছে।
কেওয়াইসি ফরমের তথ্য ইলেকট্রিক হলে এসব তথ্য বারবার দিতে হবে না। গ্রাহককে প্রথমবার লেনদেন করার সময় ব্যাংকে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তার কাছে জমা দেয়া।
গ্রাহকের এই তথ্য ওই ব্যাংকের সার্ভার থেকে কেন্দ্রীয় তথ্য ভান্ডারে জমা করা হবে। তারপর থেকে ভবিষ্যতে হিসাব খোলা, লেনদেন করাসহ যাবতীয় ব্যাংকিং সুবিধা গ্রহন করতে আর কেওয়াইসি ফরম পূরণ করতে হবে না।
জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর অথবা আঙ্গুলের ছাপ দিলেই পুরো তথ্য পেয়ে যাবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। খুব শিগগিরই এই সেবা চালু হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
অর্থপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী গ্রাহকের সঠিক এবং পূর্ণাঙ্গ তথ্য সংরক্ষণের দায়িত্ব ব্যাংকগুলোকে হিসাব খোলার অভিন্ন ফরম ১ এপ্রিলের মধ্যে চালুর নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশের ব্যাংক খাতকে আরো নির্ভরযোগ্য করার এই উদ্যোগ নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন করতে পারেনি অধিকাংশ ব্যাংক।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মিজানুর রহমান জোদ্দার বলেন, ঋণ বিতরণ ও আদায়ের ক্ষেত্রে কেওয়াইসি একটি বড় বাধা। এই বাধা দূর করতে সরকার ই-কেওয়াইসি চালুর একটি উদ্যোগ নিয়েছে। এটা চালু হলে সব গ্রাহকের কেওয়াইসির তথ্য জাতীয় তথ্যভাণ্ডারের মতো একটি জায়গায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, দ্রুতই এই ই-কেওয়াইসি চালু করা হবে। এটা চালু হলে একজন গ্রাহককে প্রতিটি ব্যাংকেই কেওয়াইসি ফরম পুরণ করতে হবে না। একটি ই-কেওয়াইসি সব ব্যাংকে ব্যবহার করা যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৭
এসই/বিএস