ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বেড়েই চলেছে চালের দাম

অন্তু মুজাহিদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০৫ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১৭
বেড়েই চলেছে চালের দাম বেড়েই চলেছে চালের দাম-ছবি-বাংলানিউজ

ঢাকা: বেড়েই চলেছে চালের দাম। পাইকারি বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম ২ থেকে ১০ টাকা পর‌্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।

গত সপ্তাহে যে গুটি স্বর্ণ চাল ৩২ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে, সপ্তাহের ব্যবধানে সেই চাল ৪৫ থেকে ৪৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলছেন, আবহাওয়া ভালো না থাকলে চালের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

সেক্ষেত্রে আমদানির প্রয়োজন হতে পারে।
 
মঙ্গলবার (৯ মে) রাজধানীর বাবু বাজার, যাত্রাবাড়ি এলাকায় চালের পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাইকারি বাজারে যে চাল ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা খুচরা বাজারে সে চাল কৃত্রিম সংকটের গুজব ছড়িয়ে ৪৫ থেকে ৪৭ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা হওয়ায় চাল আসছে না। তাই চালের দাম বেড়েছে। কিন্তু পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন ভিন্ন কথা। বেড়েই চলেছে চালের দাম-ছবি-বাংলানিউজ

রাজধানীর পাইকারি বাজারে চালের মান ভেদে মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি (নতুন) ৪৯-৫১ টাকায় এবং (পুরোনো) ৫২-৫৩ টাকা দরে। আটাশ চাল ৪২-৪৮ টাকা দরে, স্বর্ণা গুটি ৪২-৪৫ ও সাদা স্বর্ণা ৩৯-৪১ টাকা দরে। হাসকি চাল ৪২-৫২, নাজিরশাইল ৪৮-৫৩, পারিজা ৪২-৪৫ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। এবং খুচরা দোকানে এসব চাল কেজি প্রতি আরো ৩-৭ টাকা পর্যন্ত বেড়ে যাচ্ছে।  

এছাড়া সমতা চাল এজেন্সি, বসুন্ধরা চাল এজেন্সি, হাজী চাল এজেন্সি, কাওরান বাজারে শরিয়তপুর চাল এজেন্সি, শিল্পী চাল এজেন্সিতেও একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে।

সাধারণত বাজারে নতুন চাল এলে চালের দর কমে যায়। সেটা না হয়ে উপরন্তু বেশি হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানীর বাবু বাজারের মেসার্স ফরিদ রাইস এজেন্সির স্বত্ত্বাধিকারী  আব্দুর রহিম বাংলানিউজকে বলেন, চালের দর বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবে নতুন চাল বাজারে এলে দর কমে যায়। এখন দর কমছে তো না বরং দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। তবে এর কারণ হলো অটো মিল থেকে চালের সাপ্লাই বন্ধ থাকা।

বেড়েই চলেছে চালের দাম-ছবি-বাংলানিউজএই ব্যবসায়ী আরো জানান, হাওর অঞ্চলে ফসলহানি হওয়ায় জনমনে এক ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। হাওর অঞ্চলে ধান খেত ডুবে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা ধান গুদামজাত করেছে। এখন তারা দর বৃদ্ধির আশায় বসে আছে। তারা রাইস মিলের কাছে ধান বিক্রি করছে না। ফলে রাইস মিলগুলোতে ধানের কৃত্রিম সংকট দেখা দিয়েছে। উৎপাদন না থাকায় অটো মালিকরা চালের সাপ্লাই বন্ধ রেখেছে। যার কারণে বাজারে কোনো চাল আসছে না।

ধানের কৃত্রিম সংকট আছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের জিন্না ব্যান্ড রাইস (চাতাল) মিলের স্বত্ত্বাধিকারী জিয়া বলেন, আবহাওয়া ভালো না থাকায় ধানের ফলন ভালো হয়নি। এখন বাজারে বিক্রেতার চেয়ে ক্রেতা বেশি। ব্যবসায়ীরা বেশি দর হাঁকছেন। প্রতিযোগিতা করে বেশি দরে ধান কিনতে হচ্ছে। ধানের দর বৃদ্ধি হওয়ায় পাইকারি বাজারে আমাদের মোটা (স্বর্ণা) চাল ৪২-৪৩ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। চিকন চালের দামতো আরো বেশি। সামনে চালের দাম আরো বাড়তে পারে। দাম না বাড়লেও কমবে না এটা নিশ্চিত।

বাবু বাজারের আরেক চাল ব্যবসায়ী মেসার্স রাজিব এন্টারপ্রাইজের মালিক মাসুদ মিয়া বলেন, এখন যে সিজন, চালের দাম কমার কথা। কেজি প্রতি ৫ থেকে ৭ টাকা কমার পরিবর্তে দাম বেড়েছে। আমরা পাইকারী চাল ২ থেকে ৩ টাকা বেশি দরে কিনছি। ফলে খুচরা বাজারে গিয়ে ৫ থেকে ৭ টাকা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এই সংকট চলে যাবে। এই বছর কোনো কোনো এলাকায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। কিছুদিন পর নতুন চাল এলে দর কমে যাবে।

বাংলাদেশ সময় ০৮২৮  পিএম ঘণ্টা, মে ১০,  ২০১৭
এএম/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।