রোববার (১৪ মে) রাত ১০টার দিকে বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান।
মইনুল খান জানান, সকাল থেকে শুল্ক গোয়েন্দার সদস্যরা রাজধানীতে আপন জুয়েলার্সের ৫টি শো রুমে অভিযান চালায়।
শাখাগুলো হলো- গুলশানের আপন জুয়েলার্সের ডিসিসি মার্কেট শাখা, ধানমন্ডির সীমান্ত স্কয়ার শাখা, উত্তরা শাখা ও মৌচাক শাখা।
অভিযানে আপন জুয়েলার্সের মৌচাক মার্কেট শাখা থেকে ৫৩ হাজার ৫১৮.০২ গ্রাম স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া যায়। যার বাজার মূল্য ১৯ কোটি ১১ লাখ ৯৩ হাজার ৪৭১.২ টাকা। এ শাখা থেকে ডায়মন্ডের অলংকার পাওয়া গেছে ১৭.৩৫ গ্রাম, যার বাজার মূল্য ২ কোটি ৩৭ লাখ ৮৯ হাজার ৩শ টাকা। সীমান্ত স্কয়ার শাখা থেকে ৮১ হাজার ৬৮৮.৬ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গেছে। যার বাজার মূল্য ৩২ কোটি ১৪ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪১ টাকা। শাখাটি থেকে ডায়মন্ডের অলংকার পাওয়া গেছে ৩৩.৪৪ গ্রাম। যার বাজার মূল্য ১ কোটি ৪৩ লাখ ৫৪ হাজার ১শ টাকা।
উত্তরা শাখা থেকে ৮২ হাজার গ্রাম ওজনের স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গেছে। যার বাজার মূল্য ৩২ কোটি ২৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা। ডায়মন্ডের অলংকার পাওয়া গেছে ৯.৭ গ্রাম। যার বাজার মূল্য ১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। ডিসিসি মার্কেটর শাখাটি থেকে ৬৮ হাজার ৪৬২.৩০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গেছে। যার বাজার মূল্য ২৫ কোটি ৭৪ লাখ ১৮ হাজার ২৪৮ টাকা।
তিনি আরও জানান, আজকের ৫টি শাখার মধ্যে ৪টি ইনভেন্ট্রিতে মোট ২৮৬ কেজি স্বর্ণালংকার ও ৬১ গ্রাম ডায়মন্ড পাওয়া গেছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৮০ কোটি ২৩ লাখ টাকা এবং ডায়মন্ডের মূল্য প্রায় ৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা। সর্বমোট স্বর্ণ ও ডায়মন্ডের মূল্য প্রায় ৮৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এ স্বর্ণ ও ডায়মন্ড সাময়িকভাবে জব্দ করে শুল্ক আইনের বিধান অনুসারে প্রতিষ্ঠানের জিম্মায় দেয়া হয়েছে। এখন জব্দকরা স্বর্ণ ও ডায়মন্ডের কাগজ-পত্রাদি যাচাই করা হবে। কাগজপত্রে কোনো অনিয়ম প্রমাণিত হলে প্রতিষ্ঠান ও মালিকদের বিরুদ্ধে চোরাচালান এবং মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপন জুয়েলার্সের জব্দকরা পণ্যের কাগজপত্র যাচাই বাছাই বিষয়ে মইনুল খান আরও বলেন, অভিযানে স্বর্ণ ও ডায়মন্ডের বৈধ উৎস ও পরিশোধযোগ্য শুল্ককরাদি সম্পর্কে খোঁজ নেয়া হয়। প্রাথমিক অনুসন্ধানে আপন জুয়েলার্সের উপস্থাপিত দলিলাদি অভিযান পরিচালনাকারী দলের কাছে অপর্যাপ্ত মনে হয়েছে। তাছাড়া উপস্থাপিত দলিলাদিতে উল্লিখিত স্বর্ণ ও ডায়মন্ডের পরিমাণের সঙ্গে ইনভেন্ট্রিকৃত স্বর্ণ ও ডায়মন্ডের পরিমাণের গরমিল পাওয়া গেছে।
শুধু তাই নয়, গত ৫ বছরে দেশে কোনো বাণিজ্যিক আমদানি না থাকায় প্রাথমিকভাবে শুল্ক গোয়েন্দার কাছে আপন জুয়েলার্সের স্বর্ণ ও ডায়মন্ডের ব্যবসায় ‘অস্বচ্ছতা’ মনে হয়েছে বলেও শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানিয়েছেন।
শুল্ক গোয়েন্দার পরিচালনাকারী অভিযানে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ ভ্যাট কমিশনারেটের কর্মকর্তারা এবং র্যাব অংশ নেন। অভিযান পরিচালনায় নেতৃত্ব দেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ সফিউর রহমান। আর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অনুমোদনক্রমে সার্বিক নির্দেশনা দেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান।
এর আগে ১১ মে আপন জুয়েলার্স এবং প্রতিষ্ঠানটির মালিক দিলদার আহমেদের যাবতীয় আর্থিক লেনদেনের তথ্যাদি চেয়ে বিএফআইইউ ও বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবর চিঠি দেয় শুল্ক গোয়েন্দা।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩৫ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৭
এসজেএ/এসজে/এসএইচ