ঢাকা, শনিবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩২, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৭

অর্থনীতি-ব্যবসা

প্লাস্টিক ও পলিথিনে ফের বাজার সয়লাব

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১:২১, মে ১৭, ২০১৭
প্লাস্টিক ও পলিথিনে ফের বাজার সয়লাব প্লাস্টিক ও পলিথিনে ফের বাজার সয়লাব

ঢাকা: চাল, ডাল, চিনিসহ ১৭টি পণ্য বাজারজাতকরণে পাটের মোড়কের ব্যবহার আইনে বাধ্যতামূলক করা হলেও কেউ এই আইন মানছে না। খোলা বাজারে অবাধে প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যাগে/মোড়কেই বিক্রি হচ্ছে ওইসব পণ্য। ফলে পরিবেশের ভারসাম্য দিন দিন বিনষ্ট হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৬ মে) দুপুরে রাজধানীর ফকিরাপুল,শান্তিনগর,সেগুন-বাগিচা এবং মালিবাগ বাজারের আড়ত, মাছ, মাংস, ফল এবং মুদি দোকানগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, প্লাস্টিকের ব্যাগে/মোড়কে চাল, ডাল, আদা, পেঁয়াজ, রসুন‍ এবং হলদি বিক্রি করা হচ্ছে।

অন্যদিকে চিনি, আটা, ময়দা, মরিচ, হলুদসহ কয়েকটি পণ বিক্রি হচ্ছে পলিথিনের ব্যাগে।

তবে পলিথিনের সবচেয়ে বেশি ব্যবহার দেখা গেছে খুচরা  দোকানগুলোতে। এসব দোকানে কেজি হিসেবে কোনো পণ্য কিনলেই পলিথিনের ব্যাগ দেওয়া হচ্ছে।

এ ছাড়াও প্রায় দোকানে বেচা-বিক্রির প্রকারভেদে ৫, ১০ এবং ১৫ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে প্লাস্টিকের ব্যাগ। ব্যবসায়ীরাও বলছেন, মুদির দোকানে পলিথিনের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি।
সেগুন-বাগিচার চালের দোকনদার আহমেদ স্বপনের কাছে পাটের পরিবর্তে প্লাস্টিকের ব্যাগে চাল বিক্রির কারণ জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, কোম্পানি থেকে পাস্টিকের বস্তায় আনায় হয়েছে। তাই আমরাও প্লাস্টিকের ব্যাগেই বিক্রি করছি।

তবে এখন বেশির ভাগ চাল বিক্রি হয় পাটের বস্তায়। সরকার এই নিয়ম করার পর থেকে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমছে বলে জানান তিনি।

পলিথিনের ব্যাগে ক্রেতার কাছে ড‍াল ও চিনি বিক্রি করছিলেন ফকিরাপুলের মুদি দোকানদার আবু ইউসুফ। চাল, ডাল চিনিসহ বিবিধ পণ্য বিক্রির সময় পাটের মোড়কের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার বিধান সম্পর্কে তাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়।

জবাবে তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে এই আইন গ্রহণ করা হয়েছে বলে শুনেছি। কিন্তু আমরা ডাল, চিনি, আঠা, ময়দা প্লাস্টিকের মোড়কে কিনে আনি। পলিথিনের ব্যাগে ভরে খুচরা বিক্রি করি। এছাড়া আমাদের সামনে তো কোনো বিকল্প নেই।

শন্তিনগরের দোকানদার আদনান শিমুল বলেন, পাটের মোড়কে/ব্যাগে চাল কিনি। তাই বিক্রিও করি পাটের মোড়কে/থলেতে। কিন্তু পেঁয়াজ, রসুন এবং আদাসহ বেশ কিছু পণ্য প্লাস্টিকের (নেট) বস্তায় করে কিনে আনা হয়। বিক্রিও করা হয় প্লাস্টিকের ব্যাগে।

উল্লেখ্য, পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহারের বিধিমালা করা হয় ২০১৩ সালের তিন জুন। এরপর প্রথমে ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার ও চিনিসহ মোট ৬টি পণ্য এবং চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মরিচ, হলুদ, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, ডাল, ধনিয়া, আলু, আটা, ময়দা ও তুষ, খুদ, কুঁড়াসহ ১১টি পণ্য যোগ হয়। সব মিলো ১৭টি পণ্যে পাটজাত মোড়কের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়।

কোনো প্রতিষ্ঠান এ আইন না মানলে অনূর্ধ্ব এক বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়। এই আইন বাস্তবায়নে সোমবার (১৫ মে) থেকে সারাদেশে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে সরকার। ওই দিন ১৭টি মামলা ও ৭০ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

পরিবেশবিদ আব্দুস সোবহান বাংলানিউজকে বলেন, প্লাস্টিক ও পলিথিন পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই  দুটো পণ্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এজন্য চটের ব্যাগ ব্যবহার বিকল্প উপায় হিসেবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুত এই আইনের বাস্তবায়ন দরকার।

বাংলাদেশ সময়: ০৭২০ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৭
এমএফআই/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।