সেই সঙ্গে বিড়ি শিল্পকে ‘ডেড ইন্ডাষ্ট্রি’ দাবি করে আগামী দুই বছরের মধ্যে এ শিল্পকে দেশ থেকে বিদায় করার ঘোষণাও দেন সরকারের এ মন্ত্রী। তবে একই সঙ্গে দেশ থেকে সিগারেটকে তুলে দেওয়া সম্ভব নয় বলেও স্বীকার করেন অর্থমন্ত্রী।
এদিকে মন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবার বিড়ির ওপর প্রায় ২শ’ শতাংশ শুল্ক বাড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, প্রতি হাজার বিড়ির দাম ১৫৭.২৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হচ্ছে ৪৭০.৮৪ টাকা অর্থাৎ বাড়ছে ৩১৩.৫৬ টাকা। কমদামি সিগারেটে মূল্য ২৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৭ টাকা করা হলেও দামি সিগারেটের কোনো মূল্য বাড়ানো হয়নি বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
এভাবে সিগারেটের তুলনায় বিড়িতে বেশি শুল্ক আরোপ করায় একের পর এক বিড়ি কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এসকল বিড়ি কারখানার বেশির ভাগ শ্রমিকই স্বামী পরিত্যক্তা, বিধবা নারী। এই শিল্প বন্ধ হলে দেশের ১৫ লাখ শ্রমিকের ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বলে দাবি করেছেন শ্রমিক নেতারা।
এদিকে অর্থমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর থেকে তার পদত্যাগ দাবি করে জাতীয় প্রেসক্লাবসহ দেশের ২৪টি জেলায় বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। এছাড়া বাজেট ঘোষণার পর বড় ধরনের আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিড়ি শ্রমিকরা।
বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বহুজাতিক সিগারেট কোম্পানিকে নামমাত্র ১ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বসানো হয়েছে। আর দেশিয় কোম্পানির কমদামি সিগারেটে ২ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে বিদেশি কোম্পানিকে সুবিধা দিয়ে অর্থমন্ত্রী বিড়ি তুলে দিতে চান দেশ থেকে। ’
এদিকে বিড়ি শিল্পকে তুলে দিলেই কি ধুমপান কমে যাবে এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে পরিসংখ্যন থেকে দেখা যায়, সস্তা সিগারেটের কারণেই ধুমপানের পরিমাণ বাড়ছে।
জন স্বাস্থ্য বিশ্লেষক ডা. মুহাম্মদ আব্দুস সবুর বলেন, ধুমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এটা সর্বজন স্বীকৃত। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৮ ধরায় জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ভেষজের ব্যবহার নিষিদ্ধের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু অর্থমন্ত্রী বলেছেন, সিগারেট তুলে দিতে পারবো না। কিসের বিনিময়ে তিনি সংবিধান লংঘনের ঝুঁকি নিচ্ছেন? অথচ তার দম্ভোক্তি ‘আগামী দুই বছর পর দেশে কোনো বিড়ির অস্তিত্ব থাকবে না। ’
বাংলাদেশ সময়: ০২১৯ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৭
জুয়েল/বিএস