ফলে শুধু তেল বা চিনি নিতে আসা ক্রেতারা পণ্য কিনতে পারছেন না। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে একটি বা দু’টি পণ্য না পেয়ে খালি হাতে বাসায় ফিরছেন তারা।
এ নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতা তর্ক-বিতর্ক ও হই-চইও হচ্ছে বিভিন্ন ট্রাকসেলের সামনে।
রাজধানীর মতিঝিল, ফকিরেরপুল, দৈনিক বাংলা ও জাতীয় প্রেসক্লাব এলাকার টিসিবি’র পণ্য বিক্রয় কর্মীরা বলছেন, ভুয়া ক্রেতা ঠেকাতে আন-অফিসিয়ালি এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পবিত্র রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে গত ১৫ মে থেকে সয়াবিন তেল, খেঁজুর, ডাল, চিনি ও ছোলা বিক্রি করছে টিসিবি। কিন্তু এর ১৫-২০ দিন পর থেকে প্যাকেজ সিস্টেম শুরু করেছেন ট্রাক সেলাররা। ফলে ৪২০ টাকা দিয়ে ৫ লিটার সয়াবিন তেল কিনতে আসা ক্রেতাকে অতিরিক্ত ১৬০ টাকার ২ কেজি মসুর ডাল অথবা ১৪০ টাকার ২ কেজি ছোলা নিতে হচ্ছে।
ঠিক তেমনি বাজার মূল্যের চেয়ে ১৮ টাকা সাশ্রয়ে চিনি কিনতে আসা গ্রাহককে অতিরিক্ত ৮০ টাকা কেজির ডাল ও ৭০ টাকা কেজির ছোলা কিনতে হচ্ছে। ফলে ১৮ টাকা বাঁচাতে ৭০-৮০ টাকা অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে। তবে ডাল, কিংবা ছোলার ক্ষেত্রে কোনো প্যাকেজ নেই।
প্রেসক্লাব ও সচিবালয়ের সামনের ট্রাকসেলের টিসিবি’র তদারকি কর্মকর্তা মো. শহিদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘রমজানের প্রথম দিকে খেজুর, ছোলা ও ডালের চাহিদা বেশি ছিলো। কিন্তু টিসিবি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বারবার বলার পরও চাহিদা অনুসারে পণ্য দেননি। ফলে সেগুলো জমে আছে। এখন এ পণ্যগুলোই বেশি করে দেওয়া হচ্ছে’।
‘আর এখন চাহিদা চিনি ও তেলের। কিন্তু তাও প্রয়োজন মতো দিচ্ছেন না কর্মকর্তারা। ফলে ডিলাররা এ পণ্যগুলো বিক্রি করতে প্যাকেজ সিস্টেম করেছেন’।
তবে বিক্রেতারা বলেন, ভুয়া ক্রেতাদের ঠেকাতেই আন-অফিসিয়াল এ উদ্যোগ। কিছু ক্রেতা প্রতিদিনই চিনি ও তেল নিচ্ছেন। একটি পরিবারে দিনে ২ কেজি করে চিনি আর ৫ লিটার করে তেলের দরকার হয় কি? ওই অসাধু ব্যক্তিরা এ সুযোগে পণ্য মজুদ করছেন। তারা যেন এ অনৈতিক সুবিধা না নিতে পারেন, সে লক্ষ্যেই এ প্যাকেজ।
মতিঝিলের জীবন বিমা করপোরেশনের সামনে ট্রাকসেলে পণ্য বিক্রি করছেন ডিলার বাদশা। সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, বেশ কিছু ক্রেতা লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনছেন। পাশেই কয়েকজন বিক্রেতাদের সঙ্গে তর্ক ও হই-চই করছেন।
সেখানকার ক্রেতা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেনের অভিযোগ, ‘১৫ মিনিট লাইনে দাঁড়িয়ে সিরিয়াল পাওয়ার পর এখন তারা বলছেন, চিনি কিনলে সঙ্গে ছোলা অথবা ডাল কিনতে হবে। এ কেমন বিচার? আমার দরকার চিনির, এসব কিনবো কেন?’
একই অভিযোগ করেন আনোয়ার, সালাম ও রিপনসহ বেশ কিছু সাধারণ মানুষ।
টিসিবি’র কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বাংলানিউজকে বলেন, ‘অফিসিয়ালি আমরা প্যাকেজ সিস্টেমের অনুমতি দেইনি। তবে ভুয়া ক্রেতা ও দালাল চক্র থেকে পণ্য রক্ষায় কোথাও কোথাও এ সিস্টেম চালু হয়েছে’।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৩ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৭
এমএফআই/এএসআর