এ বিষয়ে ব্যাংকের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দকার মোজাম্মেল হক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। সেখানে তিনি পরিচালনা পর্ষদের সদস্য নির্বাচন ও কিছু আইনগত জটিলতা নিরসনে বিধিমালার ১২টি বিধি ও উপ-বিধি সংশোধনের প্রস্তাব করেছেন।
গ্রামীণ ব্যাংক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের গ্রামের দরিদ্র মানুষকে ব্যাংকিং সেবা প্রদান প্রকল্পের ফল। ১৯৭৬ সালে তিনি এ বিষয়ে গবেষণা প্রকল্প চালু করেন। তার আলোকে ১৯৮৩ সালে আইনের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে ‘গ্রামীণ ব্যাংক’।
বর্তমানে ব্যাংকটিতে সরকার নিযুক্ত দু’জন পরিচালক হচ্ছেন অধ্যাপক খন্দকার মোজাম্মেল হক ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব সুরাইয়া বেগম। অধ্যাপক খন্দকার মোজাম্মেল হক ব্যাংকটির চেয়ারম্যানেরও দায়িত্ব পালন করছেন।
এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি অধ্যাপক খন্দকার মোজাম্মেল হক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের ১২ জানুয়ারি নির্বাচনের মাধ্যমে ঋণগ্রহীতা ও শেয়ার হোল্ডারদের মধ্য থেকে নির্বাচিত ৯ জন পরিচালক দায়িত্ব নেন ০৮ ফেব্রুয়ারি। তারা হলেন- ঋণগ্রহীতাদের পক্ষে সিলেট অঞ্চলের মোছাম্মাৎ সুলতানা, চট্টগ্রামের মোছাম্মাৎ সাজেদা, কুমিল্লার রেহেনা আক্তার ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের তাহসীনা খাতুন, গাজীপুর অঞ্চলের সালেহা খাতুন, দিনাজপুরের পারুল বেগম, বগুড়ার মোছাম্মাৎ মেরিনা, যশোরের শাহিদা বেগম ও পটুয়াখালীর মোমেলা বেগম।
২০১৫ সালের ০৭ ফেব্রুয়ারি এসব পরিচালকের মেয়াদ শেষ হয়। গ্রামীণ ব্যাংক পরিচালক নির্বাচন বিধিমালা ২০১৪ এর ৬(১) উপ-বিধি অনুসারে নির্বাচন কমিশন গঠিত না হওয়ায় পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক নিয়োগ করা সম্ভব হচ্ছে না।
কারণ, ওই বিধিমালার ৫(১) উপ-বিধি অনুসারে ছয়মাসের মধ্যে পরিচালকদের নির্বাচন আয়োজনের হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়ায় বিধিমালাটির ৫(১) ও ৬(১) উপ-বিধি সংশোধন করে ২০১৪ সালের ২৭ অক্টোবর প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়নি।
গ্রামীণ ব্যাংক আইন’২০১৩ এর ১১(১) উপ-ধারা অনুসারে নির্বাচিত পরিচালকদের কার্যকাল সর্বোচ্চ ৩ বছর হলেও (পরিচালক নির্বাচন) বিধিমালা-২০১৪ এর ৫(১) উপ-বিধি অনুসারে বিদ্যমান পরিচালকরা (নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা না হওয়ায়) পরিচালনা পর্ষদে তাদের সদস্যপদ বহাল আছে দাবি করে উচ্চ আদালতে রিট করেন। মামলাটি এখনো বিচারাধীন।
এ অবস্থায় বিধিমালা অনুসারে নির্বাচন কমিশন গঠিত না হওয়ায় পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক নির্বাচন করা যাচ্ছে না। অন্যদিকে বর্তমান পরিচালকরা ২০১৪ এর ৫(১) উপ-বিধি অনুসারে পরিচালনা পর্ষদে তাদের সদস্যপদ বহাল আছে দাবি করায় জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যানের চিঠিতে বলা হয়েছে- ‘এসব কারণে ওই বিধিমালার ২(২৪), ৬(১), ৬(১)ক, ৬ (১)খ, ৬(১)গ, ৭(১), ৭(২), ৯(১), ১০(২), ২৯(২), ৩০ ও ৩১ বিধি ও উপ-বিধি সংশোধন করা যেতে পারে। এসব বিধি ও উপ-বিধিগুলো সংশোধন করা গেলে পরিচালক নির্বাচন ও বিদ্যমান সমস্যার সমাধান সহজ হবে। একই সঙ্গে আদালতে চলমান মামলার গুরুত্ব হ্রাস পাবে’।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব ইউনুসুর রহমান বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান বিধিমালা সংশোধনের প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। বিষয়টি যাচাই-বাছাইয়ের পর সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০১৭
এসই/এএসআর