এদিকে আটক স্বর্ণ ফেরত চেয়ে গত মঙ্গলবার হাইকোর্টে ৫টি রিট দায়ের করে আপন জুয়েলার্স। তারপর তাদের আইনজীবী প্যানেল শুনানির জন্য আবেদন উপস্থাপন করলে আদালত বিব্রতবোধ করে পরে রিট আবেদনগুলো কার্যতালিকা থেকে বাতিল করে দেন।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আপন জুয়েলার্সের তিন মালিকের বিরুদ্ধে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে গত ৮ জুন রাতে ঢাকা কাস্টমস হাউজে ৫টি বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে মালিক দিলদার আহমেদের নামে ৩টি এবং গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদের নামে দায়ের করা হয় ১টি করে মামলা।
এছাড়া শুল্ক গোয়েন্দার দায়ের করা বিভাগীয় মামলায় গত সপ্তাহে ঢাকা কাস্টমস হাউস থেকে আপন জুয়েলার্সের জব্দকৃত স্বর্ণ ও অর্থ কেন বাজেয়াপ্ত করা হবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না জানতে চেয়ে দিলদার আহমেদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। ওই নোটিশের জবাব দেওয়ার জন্য তিন সপ্তাহ সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে জবাব না পেলে আপন জুয়েলার্সের সব স্বর্ণ, হিরার অলংকার ও নগদ অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হবে। মালিকদের পড়তে হবে শাস্তির খাঁড়ায়।
আপন জুয়েলার্সের ৫টি শোরুম চুড়ান্ত ইনভেন্টরি করার সময় মোট ১৫ মণ ১৩ কেজি স্বর্ণ, ৭৩৬৯ পিস ডায়মন্ডখচিত অলঙ্কার, নগদ ৬৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং ১০০ মার্কিন ডলার জব্দ করা হয়। এসব মালামালের মোট মূল্য প্রায় ২৮৪ কোটি টাকা।
এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকে আপন জুয়েলার্সের স্বর্ণ ও মালামাল জমা দেওয়ার পর বাংলাদেশ জুয়েলারি মালিক সমিতি (বাজুস) ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্বর্ণসহ সব মালামাল ফেরতের আলটিমেটাম দেয়। এমনকি শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অপসারণেরও দাবিও তোলে সংগঠনটি। কিন্তু পরক্ষণেই সংগঠনটি আবার তাদের আলটিমেটাম তুলে নেয়।
অন্যদিকে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর জব্দকৃত স্বর্ণের বৈধ দলিলাদি উপস্থাপনে আপন জুয়েলার্সকে তিন দফা সময় দিলেও জব্দকৃত কোনো স্বর্ণের বৈধ কাগজপত্র উপস্থাপন করতে পারেনি তারা। প্রতিবারই আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ কাগজপত্র উপস্থাপনে সময়ের আবেদন করেছেন। একপর্যায়ে শুল্ক গোয়েন্দার কাছে ধরাশায়ী হয়ে যান আপনের তিন মালিক দিলদার আহমেদ, গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদ। শুধু তাই নয়, শুল্ক গোয়েন্দা কার্যালয়ে শুনানিতে এসে তিন ভাই হাতাহাতিও করেন। দিলদারের ছেলে সাফাতকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও করেন গুলজার ও আজাদ। বর্তমানে তরুণী ধর্ষণ মামলায় কারাগারে আছে সাফাত।
আপন জুয়েলার্সের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার অনুমোদন কেন দেওয়া হচ্ছে না জানতে চাইলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আপন জুয়েলার্সের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার কাজ চলছে। এনবিআরের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা মামলার বিষয়টি পর্যালোচনা করছেন। আশা করছি খুব শিঘ্রই অনুমোদন দেয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০১৭
এসজে/জেডএম