এতে চরম বিপাকে পড়েছেন সাধারণ আয়ের ক্রেতারা। চালের দামের ঊর্ধ্বগতির ফাঁদে তাদের জীবন নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে।
অবশ্য হঠাৎ করেই চালের এমন দাম বাড়ার পেছনে আড়তদাররা দায়ী করছেন চালকল মিলারদের। অতি মুনাফার লোভে মালিকদের সিন্ডিকেট আকস্মিক দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় হুট করেই চালের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে।
শুক্রবার (১১ আগস্ট) সকালে নগরীর মেছুয়া বাজারের হিজবুল্লাহ সড়কের পাইকারি চালের বাজারের বিভিন্ন আড়ত ঘুরে দেখা গেলো এমন চিত্রের।
জানা যায়, চলতি বছরের মার্চ মাসের শেষের দিকে চালের বাজারে হঠাৎ অস্থিরতা দেখা দেয়। হাওরে ফসলহানিতে কৃষক সর্বস্বান্ত হওয়ায় তখন এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। পরবর্তীতে এ ধাক্কা কাটিয়ে উঠে চালের বাজার স্বাভাবিক হলেও এখন আবারও গরম হাওয়া বইছে চালের বাজারে।
সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা যায়, বিআর ২৮ ও বিআর ২৯ চালের ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২’শ টাকা ও ২ হাজার ১’শ টাকায়। কিন্তু মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে নিত্য পণ্যের এ দু’ আইটেমের চালে দাম বেড়েছে প্রতি বস্তায় ২০ থেকে ২৫ টাকা। অর্থাৎ, আগে দাম ছিল ২ হাজার ১৭৫ টাকা ও ২ হাজার ৭৫ টাকা।
স্থানীয় আড়তদাররা জানান, ধানের দাম বাড়ার অজুহাতে মিলাররা গত কয়েক দিনে বিআর ২৮ ও বিআর ২৯ চালের দাম অস্বাভাবিকভাবেই বাড়িয়ে দিয়েছেন। এর মাধ্যমে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তারা হাতিয়ে নিচ্ছেন বাড়তি মুনাফা।
চালকল সিন্ডিকেটের এমন চালবাজির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে এ বাজারের মেসার্স নজরুল অ্যান্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেনস, চালকল মালিকরা হঠাৎ করেই দাম বাড়িয়ে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চাইছেন। তারা ধানের দাম বাড়াকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাতে চাচ্ছেন।
একই রকম মন্তব্য করে মেসার্স কাওছার রাইস এজেন্সির ম্যানেজার আব্দুস সালাম বাংলানিউজকে বলেন, মিলাররা দু’এক জাতের চালের দাম বাড়িয়েছেন। এ দুই আইটেমের চালই বেশি বিক্রি হয়। এতে করে চালকল মালিকরা মুনাফা লুটে নিচ্ছেন।
চালের এমন দাম বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। বাংলানিউজের কাছে আলাপকালে নিজের এমন ক্ষোভের কথাই তুলে ধরলেন বড় বাজার এলাকার মুদি দোকানদার সুজিত পাল।
তিনি বলেন, এক সপ্তাহ আগেও প্রতি বস্তায় বিআর ২৮ ধানের দাম কম ছিল। এখন অযৌক্তিক কারণে দাম বেড়ে গেছে। প্রশাসনের কোনো রকম নজরদারি না থাকায় এভাবে চালের দাম বাড়ছে।
নগরীর মেছুয়া বাজারের হিজবুল্লাহ সড়কের বেশিরভাগ চালের আড়তেই ক্রেতা শুণ্যতার চিত্র দেখা গেছে। চালের এ পাইকারি বাজারে গরিবের চাল হিসেবে পরিচিত মোটা ইরি চালের দাম গত কয়েকদিনে কিছুটা কমে এসেছে।
৩৮ টাকা কেজির চাল এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা কেজিতে। নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকা কেজিতে। সুগন্ধি আতপ চাল ৩ হাজার ২’শ টাকা বস্তায় বেচা বিক্রি চলছে। দুই মাস আগে মিনিকেট চালের দাম প্রতি কেজিতে ছিল ৫৬ টাকা। তবে এখন দাম কমে দাঁড়িয়েছে ৫২ টাকায়।
বাংলাদেশ সময়: ১২১২ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৭
এমএএএম/জিপি