মচমইলে এই কমতি দর নাকি গত তিন মাস ধরে চলছে। রাজধানীতে এই পান ১'শ টাকা শুনে ভ্রুকুচকালেন পানচাষী দবির উদ্দিন।
বাগমারা থানার হলুদঘর গ্রামের এ চাষী বলেন, ১'শ টাকার পান কিনলে মাথায় করে নিতে পারবেন না। তিনি বলেন, তিন পোয়া (প্রতি পোয়া ৩২ বিড়া) পানের দাম করছে ৩ 'শ ৮০ টাকা। প্রতি বিড়ার দর পড়ছে ২ টাকারও কম।
অনেক চাষী ছোট পান তুলছেন না। পান সমেত লতা টেনে মাটিতে পুতে দিচ্ছে। কি কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, তোলার খরচ উঠছে না তাহলে পান তুলবে কেমনে।
পাশ থেকে আশরাফ নামের এক চাষীও গলা মেলান। তিনি বলেন, একজন কামলা (ভোর ৫টা থেকে ১১টা) দিনে সর্বোচ্চ ৮০ বিড়া পান তুলে গুছিয়ে দিতে পারে। এ জন্য মজুরি দিতে হয় ২'শ টাকা। আর সেই পান বিকি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। তাহলে চাষীরা কেনো পান তুলবে, লোকসান দেওয়ার জন্য? আমার নিজের জমি বসে থাকার চেয়ে তুলে এনেছি।
অবাক করার বিষয় হচ্ছে পান যখন পানির দরে বিক্রি হচ্ছে তাতেও খুব হা-হুতাশ করছে না অনেকেই। কারণ এটাই নাকি পানের ধর্ম, হয় বাঁচাবে না হয় মারবে।
গতবছর দিয়েছে লাভ আর এবার লোকসান। চাষীদের যখন তোলার খরচ জুটছেনা। সেখান থেকে ২ টাকায় পান কিনে যদি ঢাকায় ১'শ টাকায় বিক্রি হয় তাহলে বড়ই বেমানান, এ জন্য প্রশাসনকে তৎপর হওয়া দরকার বলে মন্তব্য করেন পান চাষীরা। তারা লোকসান গুনছেন, আর ফড়িয়ারা মজা লুটছে, নিষ্পেষিত হচ্ছে ক্রেতারা।
মচমইলে প্রতি সোম ও শুক্রবারে পানের বিশেষ হাঁট বসে। সারা দেশ থেকে ক্রেতারা আসেন এখানে। প্রত্যেক হাটের দিনে ৩০ থেকে ৪০ ট্রাক পানের আমদানি হয় এখানে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বিকিকিনি।
বিশ বিঘা জমি জুড়ে প্রধার হাট হলেও অলিগলি ছাপিয়ে প্রধান সড়কে গিয়ে ঠেকে পানের পসরা। পানকে কেন্দ্র করে গড়া দুই যুগ বয়সী হাঁটটি এবার ইজারা হয়েছে এক কোটি ১০ লাখ টাকায়। ব্যাপারী ও বিক্রেতারা একে রাজশাহী তথা দেশের বৃহত্তম পানের হাট বলে দাবি করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৭
এসই/বিএস