তবে স্থিতিশীল রয়েছে গরু-খাসি, ব্রয়লার মুরগিসহ বিভিন্ন মাংসের দাম। সব মিলিয়ে নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা বাড়তি হলেও বাধ্য হয়ে কিনছেন ক্রেতারা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন প্রায় সারা বছরই সব ধরনের সবজি আসে বাজারে। আসে বিভিন্ন জাতের মাছও। তবে চাহিদা ও বৃষ্টির কারণে কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার (১১ আগস্ট) ভোরে যাত্রাবাড়ী সিটি করপোরেশন বাজারসহ রাজধানীর মালিবাগ, খিলগাঁও ও যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কুমিল্লা, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নিত্যদিনই শাক-সবজি আসে যাত্রীবাড়ী পাইকারি বাজারে। চাঁদপুরসহ বরিশাল থেকেও আসে ইলিশ মাছ।
দাউদকান্দি ও আশপাশের এলাকা থেকে তেলাপিয়া, রুই, মৃগেল, কৈ, মাগুর, শিং মাছের রয়েছে পর্যাপ্ত সরবরাহ। এছাড়া হাওর এলাকা থেকেও নিয়মিত আসছে পাবদা, টেংরা, বোয়াল মাছ।
মাছ বাজারের পাইকারি বিক্রেতা মো. শামীম বাংলানিউজকে জানান, বাজারে প্রচুর মাছ আসছে, কারণ এখন সব ধরনের মাছই পাওয়া যায়। আসছে প্রচুর ইলিশ মাছও। তাই দামও নাগালে।
‘পাইকারিতে ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা। আর জিওল রুই, কাতলা, মৃগেল প্রতি কেজি বিক্রি করছি ২৬০ থেকে ১৮০ টাকায়। কৈ ১০০, পাবদা সাড়ে ৩০০, মাগুর ৭০ টাকা এবং পাঙ্গাস বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। ’
গত সপ্তাহের চেয়ে এ সপ্তাহে প্রত্যেক মাছের ক্ষেত্রেই ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে বলে জানান যাত্রাবাড়ী মৎস্য আড়তের পরিচালক ইব্রাহিম।
আর এসব মাছ খুচরা বাজার অর্থাৎ যাত্রাবাড়ী কাঁচাবাজার, খিলগাঁও রেলগেটে সিটি করপোরেশনের বাজারে ৩০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেশি টাকায়। খিলগাঁও বাজারের বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ক্যারিং (পরিবহন) খরচ আছে, লেবার আছে তাই একটু বেশি দামেই বিক্রি করি আমরা।
এদিকে সবজি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় সব ধরনের সবজিই রয়েছে বাজারে। সেখানে পাইকারিতে ভারতীয় টমেটো ১২০ টাকা, ভারতীয় কাঁচামরিচ প্রতিকেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কাকরোল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, বেগুন ২৫ থেকে ৩০ টাকা, পেঁপে ২০ থেকে ২৫, আলু ১২ থেকে ১৩ টাকা, চিচিঙ্গা ৩০ থেকে ৪০, কচুরমুখি ২৫, ঝিঙ্গা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে পাইবারি বিক্রি হচ্ছে।
তিতাস বাণিজ্যালয়ের স্বত্বাধিকারী নুরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, আলুর দাম কমে গেছে। স্টক বেশি তবে দাম এবার বাড়েনি। আমরা সাড়ে ১২ থেকে ১৩ টাকায় বিক্রি করলেও খুচরা বাজারে ১৮ থেকে ২০ টাকায় কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
মালিবাগ কাঁচাবাজারের খুচরা বিক্রেতা মোস্তফা কামাল জানান, পাইকারি বাজারের তুলনায় এখানে মরিচসহ প্রায় সব সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ৩০ টাকা বেশি। এখানে কাকরোল ৫০ টাকা, কচুরমুখি ৩০, পটল ৩০, ঢেঁড়স ২৫-৩০, করলা ৪০, কচুরলতি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহেও বিভিন্ন মাংসের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। যাত্রাবাড়ী, মালিবাগ ও খিলগাঁও বাজারে গরুর মাংস ৪৯০ থেকে ৫০০ টাকা, খাসির মাংস ৭০০-৭২০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৪০, দেশি মুরগি (দেড় কেজি ওজন) প্রতি পিস ৩৫০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি ২৪০-২৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
আর এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৫-৮ টাকা বেড়ে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫৪ টাকায়। যা খুচরা বাজারে কিনতে হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৮ টাকা প্রতিকেজি।
এছাড়া ভোজ্য তেলের মধ্যে তীর সয়াবিন তেল ৫ লিটার ৪৯০ টাকা, রূপচাঁদা ৫২০, খোলা বাজারে প্রতি লিটার ৮৬ টাকা, চিনি ৪ টাকা কমে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান যাত্রাবাড়ী কাঁচাবাজারের দেওয়ানবাগ স্টোরের আদুর রহমান। একই কথা জানালেন মালিবাগ বাজারের ভাই ভাই স্টোরের রফিক মিয়াও।
প্রতি সপ্তাহে বাজার করতে আসা-এমন একজন ক্রেতা রায়েরবাগের বাসিন্দা পঞ্চাশোর্ধ্ব আবদুল আলীম বাংলানিউজকে বলেন, প্রতি শুক্রবার পুরো সপ্তাহের বাজার করি। পচনশীল সবজির দাম বাড়বে কমে ঠিক আছে কিন্তু এতো পেঁয়াজ বাজারে রেখেও কোরবানির আগে আকাশ ছোঁয়া দাম। আসলে দেখার কেউ নেই!
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৭
এমএ/এমজেএফ