সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) পুরান ঢাকার লালবাগ পোস্তা এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
লালাবাগের পোস্তা এলাকা সাধারণত খুচরা চামড়া ব্যবসায়ীদের আড্ডাখানা হিসেবে পরিচিত হলেও এবার তাদের মাথায় হাত।
শরিফ নামের এক চামড়া ব্যবসায়ী জানান, এবার কেউ দাম বলছে না। ছাগলের সুন্দর চামড়ার দামও অনেকে বলছে ২০ টাকা। এতে আমার মূলধনই উঠবে না। আমার চামড়া কেনা আছে এর থেকে বেশি দাম দিয়ে।
চামড়া ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, তাদের কাছ থেকে ট্যানারি মালিকরা চামড়া নিচ্ছেন না। মালিকরা সরাসরি কোরবানির সময় চামড়া কিনে গুদামজাত করেছেন। এছাড়া লবণের দাম বাড়ার কারণে তাদের ব্যবসার আরও ক্ষতি হচ্ছে।
এদিকে হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি স্থানান্তর করে সাভারের হেয়ামেতপুরে নিয়ে যাওয়ার কারণে তার প্রভাব পড়ছে চামড়ার দামের উপর। ব্যবসায়ীদের এবার লোনের টাকা না দেওয়ার কারণে ব্যবসার এ নিম্নগতি বলেও জানিয়েছেন তারা।
অন্যবার ঈদের দ্বিতীয় দিনেই মূল কেনাবেচা চুকে গিয়ে চামড়া সংরক্ষণের কাজ শুরু হয়। এবার চামড়া ও লবণের দামের যোগসাজসটাও ঠিকমত না হওয়ায় বিপাকে তারা।
জহির নামের এক চামড়া ব্যবসায়ী জানান, প্রতিবার সরকার থেকে আমরা যে লোন পাই তা দিয়ে আমরা ব্যবসা করি। কিন্তু এবার কি জটিলতার কারণে পেলাম না তা জানি না।
জাব্বার নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, চামড়ার বাজার এবার তিন জায়গায়। পোস্তা, হাজারীবাগ আর হেমায়েতপুর। তিন জায়গায় চামড়া ভাগ হয়ে যাওয়ায় কেউ ঠিকমত চামড়া পাচ্ছে না। তবে ট্যানারি ব্যবসায়ীরা শুধু ব্যাপক লাভের মুখ দেখছে। কেননা তারাই সরাসরি চামড়া কিনে প্রস্তুতের কাজ সেরে নিচ্ছে। আর তাদের সিন্ডিকেটের কারণে এ ক্ষতি হচ্ছে।
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাজী মো. দেলোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে জানান, গত বছরে একই সময়ে সারাদেশ থেকে ১ কোটি থেকে ১ কোটি ১৫ লাখ চামড়া কেনাবেচা হয়েছে। সেই তুলনায় এ বছরে মাত্র ২৫ থেকে ৩০ লাখ চামড়া এসেছে। শুধু পোস্তা এলাকায় যেখানে ৭ থেকে ৮ লাখ চামড়া আসে সেখানে ৩ লাখ চামড়া সংগ্রহ হয়েছে। বাকি চামড়া যদি দেশে রাখা না যায় তাহলে ব্যাপক চামড়া দেশের বাইরে চলে যাবে।
গত বছরের তুলনায় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ চামড়া বেচা কেনা কমে যাবে। এর প্রভাব পড়বে দেশের চামড়া শিল্পের উপর।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৭
এমএএম/এএম/আরআর