বিক্রেতার এমন হাঁক-ডাকে, ক্রেতার পদচারণায় মুখোরিত কারওয়ান বাজারের মাছের আড়ত। এর মধ্যে বিক্রেতা কাশেম এভাবে জানালেন ইলিশ বিক্রির হালচাল।
শুক্রবার (০৮ সেপ্টেম্বর) কারওয়ান বাজার মাছের আড়ত ঘুরে দেখা যায়, ইলিশ কেনার ধুম পড়েছে। ভোর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পদ্মার ইলিশ আসে রাজধানীর বৃহত্তর এ মাছ বাজারে। বরিশাল, চাঁদপুর থেকেও ট্রাকে করে বিক্রির জন্য এসব ইলিশ আনা হয় এ বাজারে।
নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পরায় রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা বাজারে ব্যাপক ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। সারা বছরে যে দামে ইলিশ বিক্রি হয় তার থেকে অনেক কম দামে পাওয়া যাচ্ছে দাবি করেছেন ক্রেতা -বিক্রেতারা।
কারওয়ান বাজারে মাছ কিনতে এসেছেন নিলয় তালুকদার। তাকে দেখে বোঝা গেলো নিয়মিত মাছ কেনেন এ বাজার থেকে। বাজারে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে ছেকে ধরেন বিক্রেতারা।
এ সময় নিলয় বিক্রেতাকে বলেন, ৮'শ ৯'শ গ্রাম ইলিশের দাম কত? কম হইলে ১০ টা নিবো, এমন দাম বলবি! উত্তরে মাছ বিক্রেতা তুষার বলেন, ৭'শ টাকা, পানির দাম লইয়া যান! আপনি নিলে ৪টা ২৪'শ টাকা করে।
ইলিশ কেনার জন্য বাজারে এসেছেন শামীম হোসেন। কারওয়ান বাজার আড়ত থেকে ৭‘শ থেকে ৮‘শ গ্রাম ওজনের ৫ হালি ইলিশ কিনেছেন তিনি। প্রতি হালির দাম পড়েছে ১৮‘শ টাকা।
শামীম বাংলানিউজকে বলেন, শুক্রবার হওয়ায় মাছের কদর আছে। তারপরও কম দাম। গত বছরও এ সময় কম দাম ছিল। প্রচুর ইলিশ খেয়েছি। এতো সস্তায় ইলিশ, দুইবছর আগে ভাবাই যেতো না। এদিকে সকাল ১০ টা পযর্ন্ত রাজধানীর রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর কার্যালয় থেকে এফডিসি গেটের কাছাকাছি পযর্ন্ত রুপালি ইলিশের পসরা সাজিয়ে বসে আড়তদারা।
চোখের নিমেষেই শেষ হয়ে যায় তাদের মাছের ডালি। ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের উপচে পড়া ভিড়ে পা ফেলার জায়গা নেই। সবাই স্বস্তির দামে মাছ কিনে বাড়ি ফিরছেন। ব্যবসায়ীরা পাইকারি দরে ইলিশ মাছ কিনে স্থানীয় বাজারে উদ্দেশে রওনা দেন।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, সারা বছর যারা বিভিন্ন মাছ বিক্রি করেন তারাও ইলিশ বিক্রিতে নেমে গেছেন। সকাল থেকে রাত অবধি চলে তাদের মাছ বিক্রি। যদিও সকাল থেকে দুপুর ১২টার পর কয়েকজন বিক্রেতাকে ইলিশ মাছ নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়।
এ ব্যবসায়ীরা জানান, সকাল থেকে প্রচুর ক্রেতা ছিল সব মাছ বিক্রি হয়ে গেছে। অন্য মাছের তুলনায় ইলিশের ক্রেতা অনেক। দাম কম হওয়ায় সব শ্রেণির মানুষ ইলিশ কিনছেন। মাছ বিক্রেতা আউয়াল বাংলানিউজকে বলেন, এখন ইলিশের মৌসুম। অন্য মাছ ক্রেতারা বেশি কিনে না। ভোর থেকে দুপুর পযর্ন্ত কয়েক মন ইলিশ বিক্রি করেছি। সন্ধ্যায় আবার ৪ মণ নিয়ে বসবো।
কারওয়ান বাজারে প্রতি হালি হাফ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮ শত টাকা। ৭‘শ থেকে ৯‘শ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৭‘শ থেকে ২ হাজার টাকা। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকা করে।
মোশারফ হোসেন নামে এক মাছ বিক্রেতা বাংলানিউজকে জানান, বাজারে মানুষের অন্য মাছের দিকে কোনো চাহিদা নেই। সবাই ইলিশ কেনার জন্য আসছেন। ইলিশের ডিম পাড়ার মৌসুমে মাছ ধরা বন্ধ রাখা ও জাটকা নিষিদ্ধ করায় নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। এ কারণে কম দাম।
কারওয়ান বাজারে ভোর ৪ টা থেকে সারাদিন প্রায় ৭০-৮০ হাজার টন ইলিশ বাজারজাত হচ্ছে বলে জানান এ মাছ বিক্রেতা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৭
এমসি/আরআইএস