ডিলাররা বলছেন, চালের অনেক চাহিদা আছে। লোকজন আসেন।
খোলাবাজারে প্রতি কেজি চাল ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। একজন ক্রেতা এক সঙ্গে পাঁচ কেজি চাল নিতে পারছেন। আর প্রত্যেক ডিলার প্রতিদিন চাল পাচ্ছেন এক টন করে।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) থেকে খুলনায় খোলাবাজারে চাল বিক্রি শুরু হলেও প্রথমদিনের মতো দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবারও (১৯ সেপ্টেম্বর) ক্রেতার সংখ্যা কম ছিল। প্রচার না থাকা এবং আতপ চাল বিক্রির কারণে ক্রেতা কম ছিল বলে জানিয়েছেন ডিলাররা।
নতুন বাজার রূপসা বেড়ি বাঁধ স্পটে চাল নিতে আসা দেলোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা সব সময় সিদ্ধ চাল খেয়ে অভ্যস্ত। আতপ চালে আমরা অভ্যস্ত না। আগে সিদ্ধ চাল যে দামে বিক্রি হতো, এখন তার চেয়ে দ্বিগুণ দামে আতপ চাল তেমন কেউ কিনবেন না।
তবে সখিনা নামের এক বৃদ্ধা বলেন, গরিব মানুষ যখন যা পাই তাই কিনে খাই। স্বামী নেই কাজ কাম করে যা পাই তা দিয়ে সস্তায় যে চাল পাই তাই খেতে হয়।
রহমান নামের এক ব্যক্তি জানান, সিদ্ধ চাল না পাওয়া এবং দাম বেশি হওয়ায় তিনি হতাশ। অবশেষে পিঠা খাওয়ার জন্য আতপ চালই কেনেন বাড়ি ফিরেছেন তিনি।
তাদের মতো হত দরিদ্রের দাবি আতপ চাল নয় খোলাবাজারে সিদ্ধ চাল বিক্রি করা হোক।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, খুলনা মহানগরীতে ২০ জন ডিলার ২০টি স্পটে ওএমএসের চাল বিক্রি শুরু করেছেন। স্পটগুলো হচ্ছে- নতুন বাজার রূপসা বেড়ি বাঁধ, ২ নং প্লাটিনাম রোড, জনতা হল ফুলবাড়ি গেট বাজার, খোঁড়া বস্তি, মিনাক্ষী সিনেমা হলের পাশে, চানমারী বাজার, চিত্রালী বাজার, আফিল জুট মিল বাজার, বসুপাড়া বাজার, নতুন বাজার, মিস্ত্রী পাড়া, মুজগুন্নি স্ট্যান্ডের মোড়, রায়ের মহল আছরের মোড়, কালী বাড়ি বাজার, শরিফ মোল্লার মোড়, বৈকালী বাজার, সঙ্গিতার মোড়, কুদির বটতলা, লবণচরা স্লুইচ গেট সংলগ্ন মোক্তার সড়ক ও মানসী বিল্ডিং মোড়।
কয়েকজন ডিলার জানান, আতপ চাল নিয়ে তারা বিপাকে পড়েছেন। বেশির ভাগ ক্রেতাই আতপ চাল খেতে অভ্যস্ত না হওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
পলাশ এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী ও নতুন বাজার রূপসা বেড়ি বাঁধ এলাকার ডিলার পলাশ বলেন, আতপ চাল দেখে ক্রেতারা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। এই অবস্থায় ক্রেতাদের মতো আমরাও বিপাকে পড়ছি।
তিনি জানান, তার পয়েন্টে কিছু চাল বিক্রি হলেও অনেক স্থানের ডিলারের বিক্রি হচ্ছে না। আতপ চাল দেওয়ায় লোকজন কিনতে চাচ্ছেন না। কেউ কেউ বলছেন, এই চাল ভাত খাওয়ার জন্য নয়, পিঠা তৈরির জন্য।
পলাশ আরও জানান, বিক্রি কম হলেও আমাদের চার-পাঁচ জন শ্রমিকের খরচ ও ট্রাক ভাড়াও দিতেই হচ্ছে। এ অবস্থা থাকলে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।
২ নং প্লাটিনাম রোডের ডিলার শিখা বলেন, প্রথম দিন চাল বিক্রি খুব খারাপ গেছে। সিদ্ধ চাল হলে ১ টন চাল ১ ঘণ্টায় শেষ হয়ে যেতো। আতপ চাল সারা দিনেও শেষ হয় না।
তিনি বলেন, আতপ চাল দিয়েছে আবার দাম বেশি যার কারণে বিক্রি হচ্ছে না। আগামীকাল (বুধবার) দেখি বিক্রি ভালো না হলে পয়েন্ট পরিবর্তন করবো।
তবে খুলনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. কামাল হোসেন আতপ চালের প্রশংসা করে বলেন, এ আতপ চালটি উন্নত মানের চিকন চাল। হয়তো শতকরা দুই একজন ফিরে যাচ্ছে। তবে খুলনা বাগেরহাট সাতক্ষীরা, বরগুণা, পিরোজপুর, ঝালকাটি এসব জেলার মানুষের আতপ চাল খাওয়ার প্রবণতা রয়েছে।
ওএমএসের চাল বিক্রিতে ব্যাপক সাড়া পড়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৭
এমআরএম/এমএ