কাগজে কলমে কিংবা দৃশ্যত চাল মজুদের কোনো তথ্য না পাওয়া গেলেও চাল কেনা থেকে বিক্রির মূল্য বেশ ব্যবধান চোখে পরেছে তাদের।
আর সেজন্যই বৃহষ্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) প্রথমদিনে অবৈধ কর্মকাণ্ড রোধে ব্যবসায়ীদের শুধু সতর্ক বা হুঁশিয়ারি করে দেওয়া হয়।
বরিশালের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, বাজার পর্যবেক্ষণের ধারবাহিকতায় ব্যবসায়ীরা যদি পরবর্তীতে নিজেদের না শুধরায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হতে পারে আইনানুগ ব্যবস্থা।
আর বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গঠন করা মনিটরিং টিম সর্বদা কাজ করবে বলে জানান তিনি।
এদিকে আড়ৎদাররা জানান, কোরবানির আগে দেশি মিনিকেট চালেন দাম ছিল কেজি প্রতি ৫৩/৫৫ টাকা, যা এখন ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ভারতীয় মিনিকেটের দাম ছিলো ৪৭ টাকা যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকায়। এদিকে ৪৪ থেকে ৪৬ টাকার বিআর-২৮ বর্তমানে ৫০ টাকা ও ৩৬ থেকে ৪০ টাকার বুলেট চাল বর্তমানে ৪৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আর পাইকারি বাজার থেকে ১-২ টাকা ব্যবধানের মধ্যেই খুচরা বাজারের ব্যবসায়ীরা ভোক্তাদের কাছ চাল বিক্রি করছেন। তবে খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, উর্ধমুখী চালের দামের কারণে আড়ৎদাররা মৌখিকভাবে সংকট মনোভাব প্রকাশ করে। চাল থাকলেও নেই-নেই ভাব দেখিয়ে সৃষ্ট কৃত্তিম সংকটের কারণে প্রভাব পরে খুচরা বাজারে।
তবে আড়ৎদার জানান, কুষ্টিয়া-রাজশাহী-সাতক্ষীরা অঞ্চলের মোকাম থেকে চাল আনেন তারা। এরপর সে চালের পেছনে শ্রমিক ও পরিবহন খরচা ধরে অল্প লাভেই চাল বিক্রি করে থাকেন। আর ব্যবসায়ীক প্রতিযোগিতার কারনে চাল থাকলেও নেই বলা। এখানে মজুদের কোনো সুযোগ থাকে না।
তবে মোকামে যদি চালেন দাম বেশি হয় তার প্রভাব ভোক্তা পর্যন্ত গিয়ে বিরুপ পরে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
বরিশাল চাল আড়ৎদার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক আলম বাংলানিউজকে জানান, বরিশালে অবৈধভাবে চাল মজুদ রাখা হয় না। ক্রেতাদের সঙ্গে কোনো প্রতারণার আশ্রয়ও নেওয়ার সুযোগ নেই। প্রতিযোগিতার বাজারে ব্যবসায় টিকে থাকতে হলে ক্রেতাদের চাহিদা মতোই চাল সরবরাহ ও বিক্রি করতে হয়।
তবে যদি কেউ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে চান সেক্ষেত্রে ওই ব্যবসায়ীর নিজস্ব বিষয় হবে সেটি জানান তিনি।
বৃহষ্পতিবার দুপুরে চালের বাজার মনিটরিং শেষে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা কুলসুম মনি বাংলানিউজকে জানান, দেশব্যাপী চালের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করায় বরিশালের বাজার তদারকি করতে ফরিয়াপট্টির চালের আড়ৎগুলোর অবস্থান পর্যবেক্ষণ করেন তারা। মোকাম থেকে কেনা চালের খুচরা বাজারে বিক্রিতে দরের বেশ একটা তারতম্য লক্ষ্য করা যায়। পাশাপাশি চাল মজুদের বিষয়েও খোঁজখবর নেওয়া হয়।
তিনি জানান, প্রথমদিনের অভিযান হওয়ায় ব্যবসায়ীদের চাল মজুদ না করা বা অধিক দামে বিক্রি না করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তবে প্রথমদিনের অভিযানে সব ব্যবসায়ীকে সতর্ক ও একজনের কাছ থেকে মুচলেকা রাখা হয় বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়।
শুধু জেলা প্রশাসন নয় বাজার মনিটরিংয়ে খাদ্য অধিদফতরও বরিশালের মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে।
অপরদিকে ওএমএস’র আতপ চাল খোলা বাজারে বিক্রি শুরু হলেও এখন পর্যন্ত আশানুরুপ বেচা-বিক্রি শুরু হয়নি বলে জানিয়েছেন বরিশালের ডিলাররা।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৭
এমএস/জিপি