জাতে আগাম হলেও আমনের চেয়েও এ ধান উচ্চ ফলনশীল। আগাম আমন চাষে কৃষকেরা হাসি মুখে লাভবান হওয়ার প্রত্যাশা ফুটে উঠেছে।
অপরদিকে কর্মহীন দিনগুলোতে কাজ পেয়ে মহাখুশি কৃষকরা। খাদ্য ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত দিনাজপুরের ১৩ উপজেলাতেই আগাম জাতের আমন চাষ হয়েছে। বর্তমানে এ সব ফসলি জমিতে সোনালি ধানের শীষ পাকতে শুরু করেছে। ক’দিন পরেই আগাম জাতের আমন ধান কেটে ঘরে তুলবেন কৃষকরা। তবে চলতি মৌসুমের আমনের ফসল ঘরে তুলতে আরো সময় লাগবে।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে মোট ২ লাখ ৫৬ হাজার ৭১০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে আগাম জাতের আমন চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ৭৩১ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ধান আবাদ হয়েছে ৮ হাজার ১৬৭ ও উফশী জাতের হয়েছে ৫ হাজার ৫৬৪ হেক্টর জমিতে। আগাম জাতের আমন চাষে এবার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি হেক্টর জমিতে ৩ দশমিক ৫৮ মেট্রিক টন চাল। যার মধ্যে হাইব্রিড জাতের হেক্টর প্রতি ৩ দশমিক ৬৫ মেট্রিক টন ও উফশী জাতের ২ দশমিক ৪৭ মেট্রিক টন চাল।
এবারে দিনাজপুর জেলার ১৩ উপজেলার মধ্যে চিরিরবন্দর উপজেলার মোট ৯২৪ হেক্টরের মধ্যে হাইব্রিড জাতের ১৯০ হেক্টর জমিতে ও উফশী জাতের ৭৩৪ হেক্টর, সদর উপজেলার ৩৯১ হেক্টর জমির মধ্যে হাইব্রিড জাতের ১৯০ হেক্টর ও উফশী জাতের ২০১, পার্বতীপুর উপজেলার ১ হাজার ৭২০ হেক্টর জমির মধ্যে হাইব্রিড জাতের ৮২০ হেক্টর ও উফশী জাতের ৯০০ হেক্টর, বীরগঞ্জ উপজেলার ৩ হাজার ৪৭২ হেক্টর জমির মধ্যে হাইব্রিড জাতের ২ হাজার ৮৪০ হেক্টর ও উফশী জাতের ৬৩২ হেক্টর, বিরল উপজেলার ৩৪৬ হেক্টর জমির মধ্যে হাইব্রিড জাতের ১০৫ হেক্টর ও উফশী জাতের ২৪১ হেক্টর, নবাবগঞ্জ উপজেলার ১ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমির মধ্যে হাইব্রিড জাতের ১ হাজার ১৫০ হেক্টর ও উফশী জাতের ৩৩০ হেক্টর, ফুলবাড়ী উপজেলার ৮৫০ হেক্টর জমির মধ্যে হাইব্রিড জাতের ৬৫০ হেক্টর ও উফশী জাতের ২০০ হেক্টর, বিরামপুর উপজেলার ২৫০ হেক্টর জমিতেই হাইব্রিড জাতের চাষ হয়েছে, খানসামা উপজেলার ১ হাজার ৯০ হেক্টর জমির মধ্যে হাইব্রিড জাতের ৬১০ ও উফশী জাতের ৪৮০ হেক্টর, কাহারোল উপজেলার ৫০২ হেক্টর জমির মধ্যে হাইব্রিড জাতের ২১৫ ও উফশী জাতের ২৮৭ হেক্টর, বোচাগঞ্জ উপজেলার ১ হাজার ৪০৭ হেক্টর জমির মধ্যে হাইব্রিড জাতের ৫৭৭ হেক্টর ও উফশী জাতের ৮৩০ হেক্টর, হাকিমপুর উপজেলার ৬৩৯ হেক্টর জমির মধ্যে হাইব্রিড জাতের ৩২০ হেক্টর ও উফশী জাতের ৩১৯ হেক্টর ও ঘোড়াঘাট উপজেলার ৬৬০ হেক্টর জমির মধ্যে হাইব্রিড জাতের ২৫০ হেক্টর ও উফশী জাতের ৪১০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আমন চাষ হয়েছে। দিনাজপুর সদর উপজেলার কমলপুর ইউনিয়নের চিলাহাজীপাড়ার কৃষক মো. কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, ‘গত বোরো মৌসুমে ব্লাস্ট রোগের কারণে ফলন কম হওয়ায় লোকসান গুনতে হয়েছে। এবার ফলন ভালো হয়েছে। আশা করছি ন্যায্য মূল্য পেলে লাভবান হবো। ’
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. গোলাম মোস্তফা বাংলানিউজকে জানান, ‘আগাম জাতের আমন ধান ইতোমধ্যে অল্প কিছু জমিতে কাটা শুরু হলেও সিংহভাগ ধান এখনও পরিপক্ক হয়ে কাটার উপযোগী হয়ে উঠেনি। তবে কয়েকদিন পর কাটা শুরু হবে। আগাম জাতের আমন ধানের ফলন বেশী হয়। চলতি মৌসুমের আমন ধান কৃষের ঘরে উঠতে আরো মাস খানেক সময় লাগবে। আগাম জাতের ও চলতি মৌসুমের আমনের ফসল কৃষকের ঘরে না তোলা পর্যন্ত কৃষি বিভাগ সব ধরনের পরামর্শ ও সহায়তা করবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১৭
এএটি