তবে জেলেদের দাবি, সরকার যমুনা নদীকে ইলিশ জোন ঘোষণা না করায় বরাদ্দের অর্থ-চাল না পেয়ে পেটের দায়ে মাছ ধরতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। এজন্য নৌ-পুলিশ ও মৎস্য কর্মকর্তাদের টাকা ও মাছ দিতে হচ্ছে।
কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ি ইউপির আফজালপুর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুর রাজ্জাকের ছত্রছায়ায় যমুনা নদীতে প্রকাশ্যেই মাছ ধরছেন জেলেরা। এজন্য নৌকাপ্রতি ওই ইউপি সদস্যকেও টাকা দিতে হচ্ছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, অবাধে কারেন্ট জাল দিয়ে রাতে ও দিনে মা ইলিশ ধরছেন ৪ শতাধিক জেলে। প্রতিদিন গড়ে ১৮ থেকে ২০ টন মাছ ধরে কয়েকটি পয়েন্টে সাধারণ মানুষ ও মাছ ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছেন।
কালিহাতী উপজেলার বঙ্গবন্ধু সেতু সংলগ্ন গোরিলাবাড়ি ও বেলটিয়ার মুকতলায় হাট বসিয়ে প্রকাশ্যে এসব মা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। শত শত নৌকাযোগে নিয়ে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার বেলুরচর এলাকায়ও মাছ বিক্রি করছেন জেলেরা।
প্রতি কেজি মাত্র ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় পাওয়ায় প্রতিদিন ভোররাতে এসব জায়গায় ভিড় করছেন ক্রেতারাও।
বেলুরচরে মাছ বিক্রি করতে আসা জেলেদের দাবি, নিষিদ্ধ জেনেও পেটের দায়ে মা ইলিশ ধরে বিক্রি করেন তারা।
গোহালিয়াবাড়ির ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘পুরো আফজালপুর গ্রামটিই নদীর মধ্যে। এখানকার সব মানুষই মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। সরকারিভাবে কোনো অর্থ সহায়তা পাননি তারা। মেম্বার হিসেবে সবাইকে সহযোগিতা করতে হয় আমাকেই’।
‘সরকার যদি নিষেধাজ্ঞা জারির আগেই জেলেদের আর্থিক সহায়তা করতো, তাহলে যমুনা নদীতে মা ইলিশ ধরা বন্ধ হতো’।
বঙ্গবন্ধু সেতু নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবর আলী জানান, স্বল্প সংখ্যক লোকবল দিয়ে রাতে নদীতে অভিযান পরিচালনা করা খুবই কষ্টের। ফাঁড়ির বোটটি (নৌকা) অনেকদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। ফলে মাছ ধরা বন্ধে অভিযান চালানো যাচ্ছে না। তারপরও নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযান চালাচ্ছি’।
ভ‚ঞাপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাসুম বিল্লাহ দাবি করেন, যমুনা নদীতে মা ইলিশের মৎস্য জোন না থাকায় সরকারি অর্থ-চাল সহায়তা পাচ্ছেন না জেলেরা। সারাদেশের মতো ভ‚ঞাপুরেও মা ইলিশ ধরা বন্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে।
কালিহাতী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল হালিমের দাবি, প্রতিনিয়তই অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে জেলেদের পাওয়া যাচ্ছে না।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন জানান, ইলিশ রক্ষায় বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন তারা। যমুনা নদীকে ইলিশ জোন ঘোষণার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর তা হয়ে গেলে আগামী বছর থেকে সব ধরনের সুবিধা পাবেন জেলেরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৭
এএসআর