রিক্রুটমেন্ট প্লাটফর্ম বলা হলেও, কার্যত এই প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহণকারীদের কেবল বিএটিবির নিয়োগ পরীক্ষায় সরাসরি অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেওয়া হয়। বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থান প্রলোভনের নামে প্রধানত প্রচার-প্রচারণা চালানোই বিএটিবি’র ব্যাটল অব মাইন্ডস আয়োজনের প্রধান উদ্দেশ্য।
চাকরি দেওয়ার অযুহাতে গত ১৩ বছরে (২০০৪-২০১৬) ১৫ হাজারের অধিক তরুণকে বিএটিবি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করালেও, এ পর্যন্ত মাত্র ১০০ বা এর কিছু বেশি অংশগ্রহণকারী চাকরি পেয়েছে। অথচ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে রোডশো, পাঁচ তারকা হোটেলে অনুষ্ঠান আয়োজন, ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো, ভ্রমণ, বিনোদনসহ বিভিন্ন প্রচারণামূলক কাজে বিএটিবি এ সময়ে ব্যয় করেছে কোটি কোটি টাকা।
কথিত মেধা যাচাইয়ের নামে তারুণ্যকে ক্রমশ মৃত্যুবিপণন ফাঁদে আটকে ফেলা এবং নীতি-প্রণেতাদের অনুষ্ঠানে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে প্রভাবিত করতেই বিএটিবি প্রতিবছর এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করে থাকে। চলতি বছর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০০ এর অধিক শিক্ষার্থীর মধ্য থেকে বাছাই করে চূড়ান্ত প্রতিযোগীদের নিয়ে এই গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠিত হবে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এ বছর প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।
অথচ প্রধানমন্ত্রী তামাকের ভয়াবহ ক্ষতির বিষয়টি উপলব্ধি করে ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।
বিদ্যমান ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ এর ৫.১(গ) ধারায় তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রচার বা এর ব্যবহার উৎসাহিত করবার উদ্দেশ্যে, কোনো প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের ব্যয়ভার (Sponsor) বহন ও পুরস্কার প্রদান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি আইনের ৫.৩ ধারা অনুযায়ী, কোন তামাক কোম্পানির নাম, সাইন, ট্রেডমার্ক, প্রতীক ব্যবহার করে সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করাও দণ্ডনীয় অপরাধ। আইনের এই ধারা লংঘন করলে অনধিক এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা অনুর্ধ্ব তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান বলবৎ আছে। তরুণ প্রজন্মকে রক্ষায় বহুজাতিক তামাক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি) এর ‘ব্যাটল অব মাইন্ড’ প্রতিযোগিতা বন্ধ করা হোক। প্রজ্ঞা’র প্রেস রিলিজ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৭
জেডএম/