সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০১০ সালে অনাদায়ী উৎসে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বাবদ ১ কোটি ১৭ লাখ ৯০ হাজার ৮৮৯ টাকা ও ২০১৪ সালে ৩ কোটি ৩১ লাখ ৪১ হাজার ৮১৩ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে ব্যাংকটি।
এই ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার ঘটনায় সম্প্রতি ব্যাংকটির বিরুদ্ধে চূড়ান্ত দাবিনামা জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিই)।
কর্মকর্তারা বলেন, ফাঁকি দেওয়া বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ব্যাংকটিকে পরিশোধ করতেই হবে। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এনবিআর সূত্র জানায়, প্রিমিয়ার ব্যাংকের দালিলিক প্রমাণের ভিত্তিতে ২০১০ সালে প্রকৃত কর্তনযোগ্য উৎস মূসকের পরিমাণ ৩ কোটি ৮২ লাখ ৭৯ হাজার ২৪৭ টাকা। একই সময়ে পরিশোধিত মূসকের পরিমাণ ২ কোটি ৬৪ লাখ ৮৮ হাজার ৩৫৯ টাকা।
২০১০ সালে ১ কোটি ১৭ লাখ ৯০ হাজার ৮৮৯ টাকার মূসক পরিশোধ করেনি প্রিমিয়ার ব্যাংক।
এছাড়া ফাঁকি দেওয়া মূসকের বিষয়ে গতবছরের ২৮ জুলাই ব্যাংকটিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। পরে এর জবাব দিতে ২ মাসের সময় আবেদন করে ব্যাংকটি। তবে দুই মাসের না দিলেও ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দেয় বৃহৎ করদাতা ইউনিট।
এনবিআর বলছে, এক পর্যায়ে নোটিশের জবাব দেয় ব্যাংকটি। পরে শুনানিতে প্রিমিয়ার ব্যাংকের বক্তব্য, লিখিত জবাব, দাবিনামাসহ কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং মূসক আইন ও বিধি পর্যালোচনা করা হয়।
পর্যালোচনায় প্রিমিয়ার ব্যাংক ২০১০ সালের বার্ষিক অডিট প্রতিবেদনে প্রদর্শিত উৎসে কর্তনযোগ্য মূসকের পরিমাণ ১ কোটি ১৭ লাখ ৯০ হাজার ৮৮৯ টাকা। যা ফাঁকি দিয়েছে প্রিমিয়ার ব্যাংক।
এদিকে ২০১৪ সালে ব্যাংকের কর্তনযোগ্য উৎসে মূসকের পরিমাণ ৯ কোটি ১০ লাখ ৩৮ হাজার ৫৬ টাকা। এর মধ্যে ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৯৬ হাজার ২৪৩ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। আর পরিশোধ করা হয়নি ৩ কোটি ৩১ লাখ ৪১ হাজার ৮১৩ টাকা।
এর আগে ব্যাংকটিকে গতবছরের ২৮ জুলাই ভ্যাট ফাঁকির বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে সময় বাড়ানো হলেও প্রথম শুনানিতে কোনো প্রতিনিধি পাঠায়নি প্রিমিয়ার ব্যাংক। তবে নোটিশের জবাব পাঠানো হয়।
এরপর দ্বিতীয় শুনানিতে প্রতিনিধি পাঠানো হয়। ওই সময় পর্যালোচনায় ব্যাংকটি ৩ কোটি ৩১ লাখ ৪১ হাজার ৮১৩ টাকা ফাঁকি দেয় বলে বার্ষিক অডিট প্রতিবেদনে উঠে আসে।
এনবিআর কর্মকর্তারা বলছেন, ভ্যাট ফাঁকির প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা দ্রুত সরকারি কোষাগারে জমা দিতে ব্যাংকটিকে বলা হয়েছে। আর পরিশোধের আগের দিন পর্যন্ত মাসিক ২ শতাংশ হারে সুদসহ আদায় করতে হবে।
এ বিষয়ে বৃহৎ করদাতা ইউনিটের সহকারী কমিশনার বদরুজ্জামান মুন্সী বাংলানিউজকে বলেন, দি প্রিমিয়ার ব্যাংক প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। এরই মধ্যে ব্যাংকটির বিরুদ্ধে চূড়ান্ত দাবিনামা জারি করে তা দ্রুত পরিশোধ করতে বলা হয়েছে।
যদি ফাঁকি দেওয়া রাজস্ব পরিশোধ না করে তাহলে ব্যাংকটির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৭
এসজে/এমএ