ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে লাক্সারিয়াস থেকে শুরু করে মাঝারি ও ছোট আকারের ফ্ল্যাটের বুকিং ও রেডিমেড বিক্রির অফার নিয়ে হাজির হয়েছেন আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে এবারের শীতকালীন রিহ্যাব ফেয়ারে ছোট ও মাঝারি ফ্ল্যাটের চাহিদা বেশি বলে রিহ্যাব ও আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে রিহ্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের সাধ-সাধ্যের সমন্বয় করতে এই মেলার আয়োজন।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আয়োজিত ৫ দিনব্যাপী শীতকালীন আবাসন মেলা রিহ্যাব ফেয়ার সরেজমিনে ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
রিহ্যাব ফেয়ারে সরেজমিনে দেখা গেছে, সরকারি-বেসরকারি কিংবা রাজধানীতে মাঝারি মানের কোনো ব্যবসা করছেন এমন ক্রেতাদের উপস্থিতি ফেয়ার প্রাঙ্গণে সবথেকে বেশি। এক কথায় বলা চলে, রিহ্যাব ফেয়ারে মধ্যম আয়ের ক্রেতাদের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে বেশি।
ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অধিকাংশ ক্রেতাই চাকরির বেতনের বিপরীতে ঋণ বা পেনশনের এককালীন টাকা অথবা ২০-২৫ বছরের সার্ভিস লাইফের জমানো টাকা দিয়ে কিনতে এসেছেন নিজের স্বপ্নের বাসস্থান। ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৪০০ বর্গফুটের মাঝারি আকারের ফ্ল্যাট দেখছেন তারা।
রাজধানীর মিরপুর ১০ নাম্বারের বি-ব্লক থেকে স্ত্রীসহ রিহ্যাবের আবাসন মেলায় এসেছেন বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী মো. খালেক। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে এই শহরে বাড়ি ভাড়া করে থাকছি। চাকরির শেষ সময়ে এসে পরিবারের জন্য একটি বাসা করতে চাই। তাই চাকরি জীবনের জমানো টাকা দিয়ে রেডিমেড মাঝারি কিংবা ছোট আকারের একটি ফ্ল্যাট খুঁজতেছি।
রাজধানীর আদাবর থেকে সরকারি চাকরিজীবী মো. আকন্দ এসেছেন রিহ্যাব আবাসন ফেয়ারে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ১ হাজার বর্গফুট থেকে ১ হাজার ২০০ বর্গফুটের মধ্যে ফ্ল্যাট চাচ্ছি। তবে এখনই সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করতে পারবো না। বেতনের বিপরীতে লোন নিয়ে বাকি টাকা পরিশোধ করে কয়েক মাসের মধ্যে নিজের ফ্ল্যাটে উঠতে চাই।
ক্রেতাদের চাহিদা সম্পর্কে ফেয়ারে অংশগ্রহণ করা আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেলায় লাক্সারিয়াস বা বাণিজ্যিক ফ্ল্যাটের চাহিদা থাকলেও সব থেকে বেশি চাহিদা মাঝারি বা ছোট আকারের ফ্ল্যাটের।
এছাড়া অনেক আবাসন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বলছেন, ফেয়ারে কিছু কিছু জায়গায় আরও ভালো কাজের সুযোগ রয়েছে। এসব কাজ সম্পূর্ণ করতে পারলে বড় বা লাক্সারিয়াস ফ্ল্যাটের ক্রেতাদেরও আকর্ষণ করা যাবে।
এ বিষয়ে আকাশ ডেভেলপমেন্টের ডেপুটি ম্যানেজার (মার্কেটিং ও সেলস) মো. মাসুদ খান বাংলানিউজকে বলেন, লাক্সারিয়াস বা বাণিজ্যিক ফ্ল্যাটের বুকিং যে ফেয়ারে হচ্ছে না তা বলা যাবে না। তবে মাঝারি কিংবা ছোট ফ্ল্যাটের চাহিদা বেশি।
তিনি বলেন, মেলার অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ ক্রেতাদের জন্য বাড়তি কিছু সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো গেলে বনানী, বারিধারা ও গুলশানের ক্রেতারাও ভিড় জমাবেন। এতে লাক্সারিয়াস বা বড় আকারের ফ্ল্যাটের কাটতি ভালো হবে।
সুবর্ণ ভূমি হাউজিং লিমিটেডের সিনিয়র অফিসার মো. সাবেদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, মেলায় মধ্যম আয়ের ক্রেতা বেশি। আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মধ্যম বা মাঝারি আকারের ফ্ল্যাট খুঁজছেন। ১২০০-১৫০০ বর্গফুট ফ্ল্যাটে ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি।
তবে এবারের ফেয়ার নিয়ে আশাবাদী রিহ্যাব। রিহ্যাবের মিডিয়া ম্যানেজার মো. আব্দুল রাশীদ বাবু বাংলানিউজকে বলেন, গত কয়েক বছর ধরে দেশের আবাসন ব্যবসায় মন্দা যাচ্ছে। তবে এবারের মেলা এই মন্দাভাব কাটিয়ে উঠতে ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৮ ঘণ্টা ডিসেম্বর ২৩, ২০১৭
এমএসি/আরআর