বর্তমানে আগরতলায় রেলপথ স্থাপনের কারণে কমে গেছে আখাউড়া বন্দরের রপ্তানি। তবে এ বন্দর দিয়ে বেড়েছে যাত্রী পারাপার।
ভারতের ৭টি প্রদেশ অরুণাচল, মেঘালয়, আসাম, মনিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড জাতিগত, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের কারণে একত্রে সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত।
গত বছর আগরতলার সঙ্গে অন্যান্য রাজ্যের রেল যোগাযোগ শুরু হওয়ার পর থেকে কমে গেছে আখাউড়া স্থলবন্দরের অন্যতম রপ্তানি পণ্য পাথর রপ্তানি। ফলে অনেকটাই স্থবির এ বন্দর।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, গত তিন বছরে এ বন্দর দিয়ে পারাপার হয়েছেন প্রায় আড়াই লাখ যাত্রী। তবে যাত্রী পারাপারে প্রধান সমস্যা ছিল সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ভ্রমণ কর পরিশোধ। ভ্রমণ করের অতিরিক্ত টাকাসহ নানা ভোগান্তি পোহাতে হত যাত্রীদের। তাই যাত্রীদের দুর্ভোগ লাগবে সম্প্রতি ৩৬৫ দিন বন্দরে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এখন থেকে যাত্রীরা শুক্র ও শনিবার বন্ধ ছাড়াও সরকারি যেকোনো বন্ধের দিন ভ্রমণ কর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করতে পারবেন।
৩৬৫ দিনই ব্যাংকিং সেবা চালু করায় উচ্ছ্বসিত যাত্রীরা। তারা বলছেন এর ফলে তাদের দুর্ভোগ অনেক কমবে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে দেশের অন্যান্য বন্দরের তুলনায় কম ভাড়ায় যাতায়াত, দেশের বিমান বন্দরগুলোর তুলনায় অর্ধেক ভাড়ায় বিমানে ভ্রমণসহ নানা কারণে যাত্রীরা এ বন্দর বেছে নিচ্ছেন।
ভ্রমণ করের বিষয়ে কথা হয় বিমল রায়ের সঙ্গে তিনি বলেন, এই স্থলবন্দরে ৩৬৫ দিন ব্যাংক বুথ চালু থাকায় আমরা যেকোনো সময় ভারতে যেতে পারব। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে যেতে এ বন্দর ব্যবহার করলে সময়ও কম লাগে, খরচও কম হয়।
অপর যাত্রী মহিউদ্দিন মিশু বলেন, আগের তুলনায় বর্তমানে এ সীমান্তপথ দিয়ে যাত্রীদের যোগাযোগ বেড়ে গেছে। আগে শুক্রবার ও শনিবার বন্ধ ছাড়া ও সরকারি বন্ধগুলোতে আমাদের ভ্রমণ কর দিতে সমস্যা হত। ৫শ’ টাকা কর ছাড়াও অতিরিক্ত টাকা দিয়ে আগরতলা যেতে হত। এখন থেকে সবদিন সোনালি ব্যাংকের বুথ চালু থাকায় আর কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না।
সিলেট থাকা আসা যাত্রী সোহেল মিয়া বলেন, আমি সিলেট থেকে মাত্র চারশ’ টাকা দিয়ে আখাউড়া স্থলবন্দরে এসেছি। আর তামাবিল দিয়ে ভারতে যেতে আমার খরচ হবে দুই হাজার টাকা।
স্থলবন্দরে নিয়মিত ভ্রমণ কর চালু হওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, আগে আমাদের সময় নির্ধারণ করে যেতে হত। এখন থেকে বন্ধের দিনও ভ্রমণ কর দিয়ে ভারতে যেতে পারব। আমাদের যাতায়াত ব্যবস্থা আরো সহজ করে দিয়েছে সরকার।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কর্মাসের সভাপতি আজিজুল হক বলেন, সব ব্যবসায়ীদের দাবি এ বন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে স্থাপন করতে হবে। বন্দরে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা করে দিতে হবে। যাত্রী ও ব্যবসায়ীদের দিক বিবেচনা করতে হবে।
স্থলবন্দরের উন্নয়ন কাঠামো নিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আমাদের অনেক বাণিজ্য হচ্ছে। ট্রানজিট দেওয়ার পর এ বন্দরের গুরুত্ব আরো বেড়ে গেছে। স্থলবন্দরের উন্নতি হলে দেশের উন্নয়ন হবে। এখানকার জনগণের উন্নয়ন হবে। ভারতের সঙ্গে দেশের সব স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ করতে সরকার চেষ্টা করছে। আখাউড়া বন্দরকে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ বন্দরে রপান্তর করতে ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৮ ঘণ্টা, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭
আরএ