ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আয় বৈষম্য বড় উদ্বেগের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৮
আয় বৈষম্য বড় উদ্বেগের বাংলাদেশ ব্যাংক পুরস্কার অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী/ছবি- জি এম মুজিবুর

ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, রিভারসাইডের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান খান বলেছেন, মাথাপিছু আয় বাড়ছে, দারিদ্র্য বিমোচন হচ্ছে, মধ্য আয়ের দেশের দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু এসব ছাপিয়েও উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে আয় বৈষম্য। 
 

রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ ব্যাংক পুরস্কার-২০১৭ গ্রহণের পর অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
 
বিশিষ্ট এ অর্থনীতিবিদ বলেন, এদেশে দ্রুতগতিতে দারিদ্র্য কমলেও সে হারে কমছে না আয় বৈষম্য।

বরং ক্ষেত্র বিশেষে বাড়ছে। আমেরিকা ও বাংলাদেশের আয় বৈষম্য ভিন্ন ধরনের। যে বিচারেই হোক না কেন, বাংলদেশের আয় বৈষম্য প্রকট। এছাড়া আমাদের যে সব সম্ভাবনা আছে তা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। বিশেষ করে উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক গণতন্ত্র খুবই জরুরি। আয় বৈষম্য দূর করতে সামাজিক এবং রাজনৈতিকভাবে আমদেরকে কাজ করতে হবে।
 
এর আগে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ড. আজিজুর রহমান খানকে এবং মরহুম ড. মাহবুব হোসেনের সহধর্মিনী পারভীন হোসেনের হাতে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক পুরস্কার-২০১৭’-এর পুরস্কার ও সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন। প্রত্যেককে স্বর্ণ পদক, দুই লাখ টাকার চেক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেস্ট দেওয়া হয়েছে। এ সময় ড. আজিজুর রহমান খান তার দুই লাখ টাকা ‘উৎস বাংলাদেশ’ নামের একটি উন্নয়ন সংস্থাকে হস্তান্তর করেন।
 
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ও পুরস্কার প্রদান জুরি বোর্ডের প্রধান ড. কাজী খলীকুজ্জামান, বিআইবিএম’র মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী ও প্রয়াত ড. মাহবুব হোসেনের ছোট ভাই এএফএম ফারুক হোসেন। সমাপনী বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনর এসএম মনিরুজ্জামান।
 
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত পুরস্কারপ্রাপ্ত দুই অর্থনীতিবিদের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের উপযুক্ত গর্ভনর ড. ফখরুদ্দিনের আমলে এই পুরস্কার চালু করা হয়েছে। আজ আমার খুব খুশির দিন। কেননা এই দু’জনকেই আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি। মাহবুব অনেক আগেই চলে গেছেন। দেশকে তার দেওয়ার আরও অনেক কিছু ছিলো। অন্যদিকে আজিজুর রহমান ছোটবেলা থেকেই খুব ভালো ছাত্র ছিলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবির বলেন, প্রান্তিক কৃষকের জীবনমান উন্নয়ন এবং গ্রামীণ অর্থনীতির সহজ বিবর্তন হয়েছে এই দু’জন অর্থনীতিবিদের মাধ্যমে। ড. মাহবুব হোসেন কৃষি গবেষণার পথিকৃৎ। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছাতে যাচ্ছি।
 
মৌলিক অর্থনীতি বিষয়ে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ যৌথভাবে তাদেরকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।  
 
ড. আজিজুর রহমান একজন উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ। বর্তমানে তিনি আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, রিভারসাইডের অর্থনীতি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। উন্নয়ন অর্থনীতিতে বিশেষ করে উন্নয়ন পরিকল্পনা, কৃষিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ও ভূমি সংস্কার এবং আয় বণ্টন ও অসমতা বিষয়ে গবেষণা কর্মে তার অবদান অসামান্য।
 
ড. মাহবুব হোসেন ছিলেন বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতি গবেষণার পথিকৃৎ। তিনি গ্রামীণ অর্থনীতি ও শিল্প, কৃষিভিত্তিক কাঠামো, ভূমি সংস্কার, আয় বণ্টন, দারিদ্র্য বিমোচন কৃষিতে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, ক্ষুদ্র ঋণের প্রভাব ও প্রান্তিক কৃষকদের জীবনমান উন্নয়নে নিবিড় গবেষণা করে দেশে-বিদেশে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেছেন।
 
এর আগে ২০০০ সালে অধ্যাপক রেহমান সোবহান, ২০০৯ সালে ড. নুরুল ইসলাম, ২০১১ সালে প্রফেসর ড. মুশররফ হোসেন এবং ২০১৩ সালে অধ্যাপক ড. মোজাফফর আহমদ (মরণোত্তর) এবং ড. স্বদেশ রঞ্জন বোসকে (মরণোত্তর) ‘বাংলাদেশ ব্যাংক পুরস্কার’ দেওয়া হয়।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৮
এসই/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।