ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

১ সপ্তাহে ১৮ টাকার পেঁয়াজ বেড়ে ২৬ টাকা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪০ ঘণ্টা, মে ৯, ২০১৮
১ সপ্তাহে ১৮ টাকার পেঁয়াজ বেড়ে ২৬ টাকা ট্রাকে পেঁয়াজ তুলছেন শ্রমিকরা। ছবি: বাংলানিউজ

বেনাপোল (যশোর): সরকার শুল্কমুক্ত সুবিধায় ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ দিলেও বাজার নিয়ন্ত্রণে দর ব্যর্থতায় গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১৮ টাকার পেঁয়াজ বেড়ে এখন ২৬ টাকায় কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। অতিরিক্ত মুনাফা লোভী বিক্রেতাদের অস্বাভাবিক হারে এই দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা।

তারা বলছেন, ‘আমদানি বাড়লেও কোনো কারণ ছাড়াই দাম বাড়ায় নিত্য প্রয়োজনীয় এ খাদ্যদ্রব্যটি কিনতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। ট্রাকে পেঁয়াজ তুলছেন শ্রমিকরা।                     <div class=

ছবি: বাংলানিউজ" src="http://www.banglanews24.com/media/imgAll/2016October/bg/BENAPOLE-BANDAR-ONION-IMPOR20180509173914.jpg" style="border-style:solid; border-width:1px; margin:1px; width:100%" />বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে সামনে রমজানে আরও ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। আর বিক্রেতাদের অজুহাত তাদেরকে বেশি দরে কিনতে হচ্ছে।

মঙ্গলবার (৮ মে) দিনভর বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ৭৭টি ট্রাকে ভারত থেকে ৩ হাজার ৭৫ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। রমজান উপলক্ষ্যে দিন দিন আমদানি আরও বেড়ে চলেছে। ভারত থেকে নাসিক, হাসখালি, বেলেডঙ্গা ও খড়কপুর নামে এসব পেঁয়াজ আমদানি হয়ে থাকে। এদেশে নাসিকের পেঁয়াজের চাহিদা বেশি।

জানা যায়, এর আগে ১০ শতাংশ শুল্ক করে পেঁয়াজ আমদানি হতো। তখন কেজিপ্রতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত খুরচা বাজারে কিনতে হতো সাধারণ ক্রেতাদের। নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য পেঁয়াজের বাজার মূল্য ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার সাধের মধ্যে রাখতে ’১৬ সালের রোজার আগে সরকার পেঁয়াজের উপর আমদানি শুল্ককর তুলে নেয়।

এরপর থেকে আর শুল্ককর সংযোজন হয়নি। তবে শুল্ককর উঠলেও অতিরিক্ত লাভে বিক্রেতাদের সিন্ডিকেটের কারণে হঠাৎ হঠাৎ অস্বাভাবিক মূল্য বেড়েছে। এবার রমজানের আগেও বাজার ওই একই অবস্থা সম্মুখীন হতে যাচ্ছে।

কাস্টমস ইনভয়েজ মূল্য অনুযায়ী প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজ ভারত থেকে আমদানি হচ্ছে ২০৮ ইউএস ডলার মূল্যে। যা বাংলাদেশি টাকায় ১৭ হাজার ৪ শ ৭২ টাকা। এতে কেজিপ্রতি আমদানি খরচ পড়ছে প্রায় ১৮ টাকা। অন্য খরচ মিলিয়ে বেনাপোল স্থলবন্দর পর্যন্ত পেঁয়াজ পৌঁছাতে খরচ পড়ছে কেজিতে প্রায় ২০ টাকার কাছাকাছি। আমদানি হওয়া পেঁয়াজ বন্দর থেকে পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ২৩ টাকা। আর খুরচা বাজারে তা ২৫ থেকে ২৬ টাকা। যা গত এক সপ্তাহ আগে খুরচা বাজারে বিক্রয় মূল্য ছিল ১৮ টাকা।

আমদানিকারক ফিরোজ এন্টারপ্রাইজের ফিরোজ বুধবার (০৯ মে) দুপুরে বাংলানিউজকে বলেন, ‘ পেঁয়াজের চাহিদার তুলনায় আমদানি হচ্ছে কম। এছাড়া গাড়ি ভাড়া বেড়েছে। খরচের উপর নির্ভর করে দাম উঠা-নামা করে বলে জানান তিনি। ট্রাকবোঝাই পেঁয়াজ।  ছবি: বাংলানিউজসাধারণ ক্রেতারা বলছেন, রোজার মধ্যে মুসলিমদের খাদ্য তালিকায় পেঁয়াজ অন্যতম। প্রতিবছর এ সময়টিতে সরকারের সঠিক প্রক্রিয়ায় বাজার নিয়ন্ত্রণের ব্যর্থতায় পেঁয়াজের বাজার আকাশছোঁয়া বেড়ে যায়। এতে নিম্নআয়ের মানুষের যন্ত্রণা বাড়ে।   

বেনাপোলের মীম বাণিজ্য ভাণ্ডারের স্বত্বাধিকারী শুকুর আলী জানান, তারা প্রতিকেজি ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানিকারকের কাছ থেকে কিনছেন ২৩ টাকায়। আর তা খুরচা বাজারে বিক্রয় করছেন ২৫ টাকায়। গরমে অনেক পেঁয়াজ পচে যায়। এতে একটু বেশি দাম ধরতে হয়। আর ক্রয়ের উপর নির্ভর করে বিক্রি দর বাড়ে-কমে। বাজরে অনেককে আবার ২৬ টাকায়ও পেঁয়াজ বিক্রি করতে দেখা গেছে।

ক্রেতা শামীম বলেন, প্রতিবছর রোজার আগে পেঁয়াজের বাজার দর বেড়ে যায়। দাম বাড়বে না বলে রাজনৈতিবিদেরা আশ্বাস দিলেও কাজ হয় না। অতিরিক্ত পয়শা কেবল সাধারণ ক্রেতাদের গুনতে হয়। দ্রুত যদি বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে রোজার মধ্যে বাজার আরও ঊর্ধ্বগতি হবে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

সচেতন মহল মনে করছেন, শুল্কমুক্ত সুবিধায় যারা পেঁয়াজ আমদানি করছেন তাদের তালিকা ও আমদানি পণ্যের ক্রয় বিক্রয়ের হিসাব সরকারের সংশিষ্ট দফতরে রয়েছে। তারা কি মূল্যে ক্রয় করছেন আর কি মূল্যে বিক্রয় করছেন তা তদারকি করলে বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে।

বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, পেঁয়াজের উপর শুল্ককর না থাকায় রোজা উপলক্ষে আমদানি বেড়েছে বলে জানান তিনি।

বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে শুল্কমুক্ত সুবিধায় পেঁয়াজ আমদানিকারকদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য কয়েকজন হলেন- খুলনার হামিদ এন্টারপ্রাইজ, আলাউদ্দীন ফুড এজেন্সি প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৯ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০১৮
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।