ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বর্ণিল সাজে বেনারসি পল্লি, জমেনি বেচাকেনা

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২৪ ঘণ্টা, জুন ১, ২০১৮
বর্ণিল সাজে বেনারসি পল্লি, জমেনি বেচাকেনা বেনারসি পল্লিতে শাড়ির দোকান

ঢাকা: শাড়ির রকমফেরের অভাব নেই। তবে অন্যান্য শাড়ির তুলনায় বেনারসি শাড়ি কিছুটা বৈচিত্র্যময় হওয়ায় এটি সবার মনোযোগ আকর্ষণ করে খুব সহজেই। কারুকাজ, রঙের ব্যবহার, ডিজাইন প্রভৃতি মিলিয়ে বেনারসি শাড়ির চাহিদা আকাশছোঁয়া।

বেনারসির কারিগররাও এবার কোনো কমতি রাখেননি ঈদ আয়োজনে। কিন্তু রোজার প্রথম ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও জমে ওঠেনি বেনারসি শাড়ির বৃহত্তম বাজার মিরপুরের বেনারসি পল্লি।

বৃহস্পতিবার (৩১ মে) মিরপুর ১০ ও ১১ নম্বরের বেনারসি পল্লি ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন দোকানের সামনে ক্রেতার আশায় হাঁকডাক ছাড়ছেন বিক্রয়কর্মীরা। কিন্তু দেড় শতাধিক শাড়ির দোকানের এ মার্কেটে ক্রেতার দেখা মিলেছে হাতেগোনা কয়েকটি দোকানে। এমনকি স্বাভাবিকের তুলনায়ও কম বিক্রি হওয়ায় হতাশ হয়েছেন অনেক বিক্রেতা। দুপুর গড়িয়ে গেলেও ১টি শাড়িও বিক্রি করতে পারেননি অনেক ব্যবসায়ী।
বেনারসি পল্লিতে শাড়ির দোকানএদিকে আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরকে ঘিরে দেশের ঐতিহ্যবাহী এ বেনারসি পল্লি সেজেছে বর্ণিল সাজে। এ বিষয়ে ফার্স্ট লেডি বেনারসি হাউজের ব্যবস্থাপক শেখ ফিরোজ হোসেন বলেন, ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে সব ধরনের শাড়ির কালেকশন রেখেছি, যেন কেউ কোনোটা না পেয়ে চলে না যায়। কিন্তু এখন ক্রেতাই কম আসছে।

গ্রাহকের চাহিদা ও ঐতিহ্যকে লক্ষ্যে রেখে সাজানো হয়েছে এবারের আয়োজন। পাওয়া যাচ্ছে বেনারসিসহ প্রায় সব ধরনের শাড়ি। এসবের মধ্যে ঐতিহ্য অনুযায়ী বেনারশি, টাঙ্গাইল তাঁতের শাড়ি (কটন), টাঙ্গাঈল হাফ সিল্ক, রাজশাহী সিল্ক, ঢাকাই মসলিন, কাতান, কাটা শাড়ি, জামদানি, জর্জেট শাড়ি অন্যতম। আর যেসব ক্রেতারা আসছেন, তারাও খুঁজছেন পছন্দমতো জমকালো শাড়িগুলো।

এ প্রসঙ্গে শাড়ি কিনতে আসা চিকিৎসক শারমিন সুলতানা বলেন, ঈদের শাড়ি বলে কথা, একটু তো নতুনত্ব তাতে থাকাই লাগে। কয়েকদিন পর কাজের চাপ বাড়বে, সময় পাব না। এজন্য অফিস শেষ করে শাড়ি দেখতে এসেছি। মার্কেটে ভিড় বাড়ার আগেই শাড়ি কিনে ফেলতে চাই।

এদিকে ভারতীয় ভিসা সহজীকরণ করায় ক্রেতা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ বলে মন্তব্য করেছেন অনেক ব্যবসায়ী। এ ব্যাপারে অলংকার বেনারশির মশিউর রহমান বলেন, ভারতীয় ভিসা সহজীকরণ করা দেশের শাড়ি বাজারে ক্রেতা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। ঈদের আগে ভারতীয় ভিসা ক্যাম্প করা হয়েছে। এ সুযোগে পাইকারি অনেক ক্রেতা পণ্য কিনতে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত চলে গেছেন। এজন্য এবারের ঈদ বাজারে মিরপুরের বিখ্যাত বেনারসি পল্লিতে ভিন্ন চিত্র। রমজানের আগে ক্রেতাদের ভিড় থাকলেও এখনো দেখা মিলছে না ঈদের আমেজ।

কারিগররা বলছেন, আভিজাত্যের ছাপ রয়েছে ভালোবাসা দিয়ে তৈরি প্রতিটি শাড়িতেই। এসব শাড়ির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, পাকা রং আর ওজনে হালকা। বাজেটেও কুলায়। তাই সমাজের উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্ন-মধ্যবিত্ত, সব শ্রেণীর তরুণী কিংবা মহিলার প্রথম পছন্দ মিরপুর বেনারসি পল্লির শাড়ি। আর যারা শাড়ি পরে না, তাদের জন্য ২৪০০ থেকে ৫০০০ টাকার মধ্যে মিলবে সেলাই ছাড়া থ্রিপিছ। আছে বিভিন্ন ধরণের লেহেঙ্গাও।

রোজার প্রথম ১০ দিন পেরিয়ে এখনও বেচা-কেনা জমে না উঠলেও বিক্রেতারা অবশ্য আশাবাদী, প্রহর গুণছেন বিক্রয় উৎসবের। চলতি সপ্তাহে ক্রেতা সমাগম বাড়বে বলেও আশা করছেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০১৮
এইচএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।