ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ব্যাংক খাত সংস্কারে উদ্যোগ না থাকায় টিআইবির উদ্বেগ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫০ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৮
ব্যাংক খাত সংস্কারে উদ্যোগ না থাকায় টিআইবির উদ্বেগ

ঢাকা: ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারি আয় বৃদ্ধিতে বর্ধিত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর আরোপের প্রস্তাবনার প্রভাব এবং সংকটাপন্ন ও অনিয়মে জর্জরিত ব্যাংক খাত সংস্কারে প্রতিশ্রুত উদ্যোগ না থাকায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

বাজেটে সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতায় সুবিধাবঞ্চিতদের সংখ্যা ও মাসিক ভাতার হার বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশের নারী উন্নয়নে এযাবতকালের সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয়ার বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে টিআইবি। তবে রাষ্ট্রায়ত্ত লোকসানি খাতের ঘাটতি পূরণে জনগণের করের টাকায় ভর্তুকি অব্যাহত রাখা ও বিশেষ কৌশলে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে টিআইবি।

রোববার (১০ জুন) এক বিবৃতিতে বাজেটে প্রত্যাশিত স্বচ্ছতার ঘাটতি উল্লেখ করে প্রস্তাবিত উন্নয়ন পরিকল্পনার সঠিক তদারকি ও সুষ্ঠু বাস্তবায়নে নজরদারি বৃদ্ধি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট কৌশলগত পরিকল্পনা ও দিক-নির্দেশনা দেয়ার দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অনিয়ম, দুর্নীতি ও যোগসাজসের ফলে ধুঁকতে থাকা ব্যাংক খাত সংস্কারে বাজেট প্রস্তাবনায় কোনো উদ্যোগ না থাকা, আমানতকারীদের আস্থার সঙ্গে সরকারের প্রতিশ্রুতির অন্যায্য বরখেলাপ। ব্যাংক ব্যবস্থায় খেলাপি ঋণ ও যোগসাজসের সঙ্গে দুর্নীতিবাজ, বিশৃংখলা সৃষ্টিকারীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার উদ্যোগ না নিয়ে বিদ্যমান করপোরেট কর হার কমানোর প্রস্তাব অসাংবিধানিক ও বৈষম্যমূলক।

এছাড়া বাজেট প্রস্তাবনায় বিশেষ কৌশলে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ অর্থাৎ জরিমানা দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার উদ্যোগকে যেমন অসাংবিধানিক তেমনি অনৈতিক, বৈষম্যমূলক ও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দুর্নীতি সহায়ক উল্লেখ করে ড. জামান বলেন, এ ধরনের সুযোগদানের মাধ্যমে সততা চর্চাকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।       

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, বাজেট প্রস্তাবনায় সরকারি আয় বৃদ্ধির জন্য নেয়া বেশিরভাগ মৌলিক চাহিদার ওপর কর আরোপের ফলে আদতে মধ্যবিত্ত ও সীমিত আয়ের মানুষের ওপর এর তীব্র প্রভাব পড়বে, যা সার্বিকভাবে সমাজে আয়-বৈষম্য ও অসাম্য-বিভেদ বৃদ্ধিতেই ভূমিকা রাখবে। উদ্বেগজনক মাত্রায় বাড়তে থাকা বেকার তরুণদের কর্মসংস্থান নিয়ে বাজেট প্রস্তাবনায় উল্লেখযোগ্য ও দিক-নির্দেশনামূলক কোনো উদ্যোগ বা পরিকল্পনা না থাকাটা দুঃখজনক ও হতাশাজনক। তবে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় সুবিধাবঞ্চিতদের সংখ্যা ও মাসিক ভাতার হার বৃদ্ধির প্রস্তাবনা ইতিবাচক হলেও এ উদ্যোগের সুফল পেতে হলে দুর্নীতি প্রতিরোধে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ বিশেষত ডিজিটালকরণের মাধ্যমে অর্থছাড়ের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

এছাড়া সম্প্রতি মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতিমালার খসড়ায় জনবান্ধব প্রতিরক্ষা নীতিমালার কথা উল্লেখ থাকলেও প্রস্তাবিত বাজেটে বরাবরের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা খাতে বিশাল বরাদ্দের বিপরীতে অর্থ ব্যয় বিষয়ে স্পষ্ট করা হয়নি, যা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য উন্মুক্ত হওয়া প্রয়োজন ও প্রত্যাশিত বলে অভিমত ব্যক্ত করেন ড. জামান।

এছাড়া বাজেট বাস্তবায়নের হার বৃদ্ধির লক্ষ্যে অর্থবছরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমভাবে অর্থছাড়ের ওপর গুরুত্বারোপ করে টিআইবি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৭ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৮
এসই/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।