ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাজারে মাছের আকাল, ইলিশের দামে অস্বস্তি

এম আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২১ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৮
বাজারে মাছের আকাল, ইলিশের দামে অস্বস্তি বাজারে ইলিশ মাছ নিয়ে বসে আছেন মাছ বিক্রেতা। ছবি: অনিক খান

ময়মনসিংহ: ঈদে পোলাও-মাংসের স্বাদ নেওয়া হয়েছে অনেকবার। এখন স্বাদে একটু পরিবর্তন আনতে মাছের বাজারে ছুটছেন সবাই। কিন্তু বাজারগুলোতে রীতিমতো মাছের আকাল। প্রাকৃতিক ও দেশি জাতের কৈ, শিং, মাগুর, শোল, পুঁটি, টেংরা মাছ তো জুটছেই না।

উল্টো দুই-এক জাতের মাছ থাকলেও দাম বেশ চড়া। তবে সব ছাপিয়ে ক্রেতাদের পকেট কাটছে ‘মাছের রাজা’ ইলিশ।

ফলে ইলিশের দামে অস্বস্তি নিয়েই বাজার ছাড়তে দেখা গেছে ক্রেতাদের। দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে বচসার ঘটনাও ঘটছে।

বুধবার (২০ জুন) রাতে ও বৃহস্পতিবার (২১ জুন) সকালে কয়েক দফা ময়মনসিংহের নতুন বাজার, মেছুয়া বাজার ও মিন্টু কলেজ রেলক্রসিং বাজার ঘুরে দেখা গেল এমন চিত্রের। বাজারে ইলিশ মাছ নিয়ে বসে আছেন মাছ বিক্রেতা।  ছবি: অনিক খানসরেজমিনে দেখা গেছে, ঈদের পর এখনও জমে উঠেনি ময়মনসিংহের মাছের বাজার। বাজারে ক্রেতাদের আনাগোনা বাড়লেও সরবরাহ একেবারেই কম।

ফলে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে সরগরম হয়নি মাছের বাজার। সামান্য পরিমাণে যে কয়েক জাতের মাছ মিলছে তাও দাম নাগালের বাইরে।

নগরীর ধনাঢ্যদের বাজার হিসেবে পরিচিত নতুন বাজারে অন্যান্য সময় কমপক্ষে ১৮ থেকে ২০ জন ব্যবসায়ী মাছ বিক্রি করেন। কিন্তু গত দুইদিন ধরে মাছ নিয়ে বসেছেন জনা তিনেক ব্যবসায়ী। তাদেরই একজন ইনসান (৩০)।

এই ব্যবসায়ীর আড়তে মিলছে কাজলি, বাগদা চিংড়ি ও ফিশারির রুই মাছ। এর মধ্যে ৬শ টাকা কেজিতে কাজলি মাছ, ৫৫০ টাকা থেকে ৬শ টাকা কেজিতে বাগদা ও সাড়ে ৪শ টাকা কেজিতে রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে।

খানিক দূরেই আব্দুল্লাহ নামের এক মাছ ব্যবসায়ী হাঁক দিচ্ছিলেন ‘এই নিয়ে যান রাজা ইলিশ’। চল্লিশের কোটায় তার বয়স। প্রায় ৩০ বছর ধরে এখানে মাছ বিকিকিনি করেন তিনি।

তিনি জানান, তিনি পদ্মার ইলিশ বিক্রি করছেন। তার এখানে ১ কেজি ৬শ গ্রাম ৫ হাজার টাকা ও ১ কেজি ৪শ গ্রাম ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার টাকায়।

ইলিশ কিনতে আসা এক ক্রেতার সঙ্গে রীতিমতো বচসায় জড়িয়ে পড়লেন এই বিক্রেতা। ‘আমি যাত্রাবাড়ী থেকে এই পদ্মার ইলিশ কিনেছি।

আমাদের মাছের মান অন্যান্য বাজারের তুলনায় ভালা (ভালো)’ এমন গুণকীর্তন মন গলাতে পারেনি রাইসুল আহমেদ নামে ওই ক্রেতার।

ওই ক্রেতা উত্তরে বললেন, ‘আমার বাড়ি যাত্রাবাড়ী। ওই বাজারেও ইলিশের দাম এতো বেশি না। আপনারা কেজিতে ৬শ থেকে ৭শ টাকা দাম বেশি চাইছেন?

এটা অনিয়ম। আপনাদের মোবাইল কোর্ট ধরবে’ বলেই হনহন করে বেড়িয়ে গেলেন ওই ক্রেতা।

নগরীর মিন্টু কলেজ রেলক্রসিং এলাকায় প্রায় ২০ বছর যাবত মাছের ব্যবসা করেন ইয়াকুব আলী (৪০)।

তিনি বাংলানিউজকে জানান, মাছের বাজারগুলোতে এখনও ঈদের রেশ কাটেনি।

আড়তদাররাও বাজারমুখী হননি। ক্রেতাদের উপস্থিতিও কম। বাজার স্বাভাবিক হতে আরো কয়েকদিন সময় লাগবে।

অল্প সংখ্যক পাবদা, গুলশা ও পোনা মাছ দেখা গেল নগরীর মেছুয়া বাজারের ব্যবসায়ী বারেক মুন্সীর কাছে। তিনিসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী মাছ নিয়ে গলা হাঁকাচ্ছেন।

তার সঙ্গেই থাকা এক ইলিশ মাছ ব্যবসায়ী জানান, ‘বাজারে সব মাছের আকাল থাকলেও ইলিশের অভাব নেই। বড় ইলিশের দাম বেশি, আবার ছোটা ইলিশের দামও ক্রেতার সাধ্যের মধ্যেই। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৮
এমএএএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।