ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

নিম্নতম মজুরি ১৬ হাজার, না হলে আন্দোলন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৮
নিম্নতম মজুরি ১৬ হাজার, না হলে আন্দোলন সংবাদ সম্মেলনে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নেতারা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম সোমবার (১৬ জুলাই) মজুরি বোর্ডে উত্থাপিত মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের দেয়া প্রস্তাবকে অগ্রহণযোগ্য বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

মজুরি বোর্ডে জমা হওয়া পোশাক শিল্প শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ১৬ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়েছে বাম দল সমর্থিত শ্রমিক সংগঠনগুলো।
 
মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) নগরীর পুরানা পল্টনে সিপিবি ভবনে সংবাদ সম্মেলনে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার এ দাবি জানান।

একই সঙ্গে পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১৬ হাজার টাকার দাবিতে আগামী ২০ জুলাই সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মিছিল ও সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি।

বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে এ আন্দোলনকে বেগবান করতে সভা, সমাবেশ, মিছিলসহ নানামুখী কর্মসূচি পালিত হবে।
 
 
 
প্রেস ব্রিফিংয়ে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কার্যকরি সভাপতি শ্রমিক নেতা কাজী মো. রুহুল আমিন। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শ্রমিক নেতা জলি তালুকদার, সঞ্চালনা করেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্রমিক নেতা ইকবাল হোসেন।  

আরও উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রমিক নেতা কেএম মিন্টু, অর্থ সম্পাদক শ্রমিক নেতা এম. এ শাহীন, দপ্তর সম্পাদক শ্রমিক নেতা জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।
 
সংগঠনের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সোমবার (১৬ জুলাই) মজুরি বোর্ডের সভায় মালিক প্রতিনিধি নিম্নতম মজুরি ৬ হাজার ৩৬০ টাকা প্রস্তাবনা করেছেন। এটা বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিক ও দেশবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এ প্রস্তাবনার মধ্য দিয়ে বিজিএমইএ প্রমাণ করেছে যে, তারা সুষ্ঠু শিল্প মালিক নয়। তারা চরম শোষক ও নিপীড়ক, তাই এই অমানবিক প্রস্তাবনা পরিবর্তন করে শ্রমিকের জীবনমান উন্নয়ন শিল্পকে বিকশিত করা ও জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে নিম্নতম মোট মজুরি ১৬ হাজার টাকা মেনে নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। এমনকি শ্রমিক প্রতিনিধি নিম্নতম মোট মজুরি ১২ হাজার ২০ টাকা যে প্রস্তাব উত্থাপন করেছে তাও বাংলাদেশের শ্রমিক সমাজের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
 
শ্রমিক প্রতিনিধি ইতোমধ্যেই বলেছেন যে, তিনি শুধু শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গেই যুক্ত তা নন একই সঙ্গে রাজনৈতিক দলেরও লোক। তিনি ক্ষমতাসীন দলের স্বার্থ সংরক্ষণ করতে গিয়ে প্রকারান্তরে শ্রমিকদের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে মালিকদের স্বার্থ রক্ষার ফাঁদে পা দিয়েছেন। দেশের বর্তমান বাজার দরের সঙ্গে মজুরির প্রস্তাবনা কোনোভাবেই সামাঞ্জস্যপূর্ণ নয়। যেখানে গার্মেন্টস শিল্পাঞ্চলে বস্তি বা টিনশেডের একটি রুমের ভাড়াই ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা দিতে হয়। সেখানে শ্রমিকদের খাদ্য, চিকিৎসা শিক্ষাসহ বেঁচে থাকার মত ন্যূনতম চাহিদা কীভাবে মিটবে?
 
 
বক্তরা আরো বলেন, মালিকরা বাজার দর, আইএলও কনভেনশন, মুদ্রাস্ফীতি, আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং শ্রমিকের জীবনমান কোনোকিছুর তোয়াক্কা না করে যে মজুরি প্রস্তাব করেছেন তা এদেশের গার্মেন্ট শ্রমিকসহ সব বিবেকবান মানুষ গ্রহণযোগ্য বলে মনে করছেন না।  

অন্যদিকে শ্রমিক প্রতিনিধি পক্ষ থেকে যে প্রস্তাব করা হয়েছে, তা শ্রমিকদের প্রাণের দাবি ১৬ হাজার টাকার বিষয়টি তোয়াক্কা না করে মালিকদের স্বার্থকেই সংরক্ষণ করা হয়েছে। যা এদেশের প্রায় ৪০ লাখ গার্মেন্ট শ্রমিক কোনোভাবেই মেনে নিবে না। মালিকরা যেন-তেন একটা মজুরি ঘোষণা দিয়ে পার পেয়ে যাওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। সেই নীল নকশা বাস্তবায়নে তারা মিথ্যা মামলা দিয়ে গার্মেন্ট টিইউসি’র নেতৃবৃন্দকে দমন করার চেষ্টা চালাচ্ছে। মালিকদের কোনো ষড়যন্ত্রই মজুরি আন্দোলনকে দমন করতে পারবে না।
 
এমতাবস্থায় আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি যে, অবিলম্বে নিম্নতম মূল মজুরি ১০ হাজার টাকা আর মোট মজুরি ১৬ হাজার টাকা এবং একই হারে পিসরেটসহ সব শ্রমিকদের মজুরি ঘোষণা করতে হবে। ১৬ হাজার টাকা মজুরির দাবিতে আমাদের আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৮
এমআইএস/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।