ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

এবার হদিস মিলছে না খনির ৫৬ কোটি টাকার পাথরের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০১৮
এবার হদিস মিলছে না খনির ৫৬ কোটি টাকার পাথরের মধ্যপাড়া খনির পাথর। ছবি: বাংলানিউজ

পার্বতীপুর (দিনাজপুর): বড়পুকুরিয়া খনির কয়লা কেলেঙ্কারির সঙ্গে এবার যোগ হয়েছে আরেক নতুন নটঘটের রহস্য। এখন হিসেব পাওয়া যাচ্ছে না দিনাজপুরের পার্বতীপুরে মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (এমজিএমসিএল) প্রায় ৫৬ কোটি টাকা মূল্যের তিন লাখ ৫৯ হাজার ৮১৭ টন পাথরের।

তবে এমজিএমসিএল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পরিমাপগত ক্রটি, সিস্টেম লস বা পদ্ধতিগত লোকসান ও মাটির নিচে দেবে গেছে বলে দাবি করছে। কয়লা কেলেঙ্কারির ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পরই তারা তড়িঘড়ি করে গত ২৯ জুলাই এমজিএমসিএল বোর্ড মিটিংয়ে বিষয়টি উত্থাপন করে।

পরে ওইদিনই বিষয়টি তদন্তের জন্য পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) জাবেদ চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। অপর সদস্যরা হলেন- পেট্রোবাংলার ম্যানেজার বেলায়েত হোসেন, আনোয়ার হোসেন খান ও মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনির উপ-মহাব্যবস্থাপক রাজেউন নবি।

জানা গেছে, মধ্যপাড়া খনি উন্নয়নকালীন পর্বসহ ২০০৭ সালের ২৫ মে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার পর থেকে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত পাথর উত্তোলন করা হয়েছে ৪২ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৫ মেট্রিক টন।

এমজিএমসিএল বোর্ড মিটিংয়ে উত্থাপিত ওই রিপোর্টে ২০০৬-২০০৭ অর্থবছর থেকে ২০১২-২০১৩ অর্থবছর পর্যন্ত পরিমাপগত ক্রটি ও সিস্টেম লস দেখানো হয় দুই লাখ ২৭ হাজার ২৩৩ মেট্রিক টন পাথর। এছাড়া ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে এক লাখ ছয় হাজার ৪৮৬ মেট্রিক টন পাথর খনি ইয়ার্ডে মাটির নিচে দেবে গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

খনি কর্তৃপক্ষ হদিস না মেলা ওই তিন লাখ ৫৯ হাজার ৮১৬.৮৯ টন পাথরের মূল্য বাবদ ৫৫ কোটি ২৩ লাখ ৪৮ হাজার ৪৪৮ টাকা অবলোপন করার জন্য এমজিএমসিএল বোর্ডকে অনুরোধ করেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এমজিএমসিএল’র দায়িত্বশীল দু’জন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, মধ্যপাড়া খনির পাথরের পরিমাপগত ক্রটি, সিস্টেম লস বা পদ্ধতিগত লোকসান ও মাটির নিচে দেবে যাওয়ার বিষয়ে এমজিএমসিএল বোর্ড এবং পেট্রোবাংলাকে সময়ে সময়ে জানানো হয়েছে। এরপরও এতোদিনে বিষয়টি সমন্বয় বা অবলোপন না করা দুঃখজনক। মধ্যপাড়া খনির পাথর।  ছবি: বাংলানিউজখনির অপর একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে জানান, ২০০৬-২০০৭ থেকে ২০১২-২০১৩ অর্থবছর পর্যন্ত খনি বাস্তবায়নকারী উত্তর কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান নামনাম কর্তৃক উৎপাদনকালীন সময়ে পরিমাপগত ক্রটি ও সিস্টেম লস দেখানো হয় দুই লাখ ২৭ হাজার ২৩৩ মেট্রিক টন। ২০১২-২০১৩ অর্থবছরের পর আর পরিমাপগত ক্রটি ও সিস্টেম লস নেই।  এরপর থেকে মাটির নিচে দেবে গেছে বা মাটিই খেয়ে ফেলেছে বলে দাবি করা হয়েছে। বিষয়টি রহস্যজনক বলে তিনি মনে করেন।

এ বিষয়ে এমজিএমসিএল বোর্ড চেয়ারম্যান এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রুহুল আমিনের সঙ্গে শনিবার (৪ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের নবনিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) জাবেদ চৌধুরীর বাংলানিউজকে বলেন, গত ২৯ জুলাই এমজিএমসিএল বোর্ড মিটিংয়ে বিষয়টি উত্থাপন করার পর আমি জেনেছি। বিস্তারিত কিছু জানি না। কাগজপত্র না দেখে কিছু বলতেও পারছি না।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০১৮
টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।