ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

কৃষি ঋণের খেলাপি বেড়েছে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০১৯
কৃষি ঋণের খেলাপি বেড়েছে কৃষি ঋণের খেলাপি বেড়েছে।

ঢাকা: নিয়ন্ত্রণ সংস্থার কঠোর নজরদারির পরও পাঁচ মাসে কৃষি খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে খেলাপির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১৭০ কোটি টাকা। যা গত বছরের চেয়ে ২ শতাংশ বেশি। ২০১৭ সালের একই সময়ে কৃষি খাতের খেলাপি ঋণ ছিলো ৫ হাজার ৬১ কোটি টাকা।

সামগ্রিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি মৌসুমের প্রভাবে কৃষি খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। তবে জানুয়ারি থেকে পুনঃতফসিল করা হলে কৃষি খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমে যাবে।


  
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে কৃষি ঋণ খেলাপির পরিমাণ মোট খেলাপি ঋণের ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ। গত অর্থবছরর এই সময়ে ছিলো ১২ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
 
এদিকে কৃষি ঋণ খেলাপির পাশাপাশি বিতরণও বেড়েছে। ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ৩৯ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে বিতরণের পরিমাণ ছিলো ৩৯ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা।
 
এদিকে গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে কৃষি ঋণ বিতরণ ৯ শতাংশ বা ৭৫৫ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে বিতরণ করা হয়েছিলো ৮ হাজার ২৩১ কোটি টাকা।
 
এই অর্থের মধ্যে ৩ হাজার ৬৬৮ কোটি বিতরণ করেছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন আট ব্যাংক। ৩ হাজার ৮৭ কোটি বিতরণ করেছে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক ও বিদেশি ব্যাংকগুলো।
 
চলতি অর্থ বছরে ব্যাংকগুলোকে ২১ হাজার ৮০০ কোটি কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রথম পাঁচমাসে ব্যাংকগুলো লক্ষ্যমাত্রার ৩৪ দশমিক ২৯ শতাংশ অর্জন করেছে।
 
কৃষি ঋণ বিতরণের পাশাপাশি আদায় বেড়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম পাঁচমাসে ব্যাংকগুলো ৮ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা আদায় করে। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে আদায় করেছে ৮ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা।
 
এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আলী হোসেন প্রধানিয়া বলেন, সংসদ নির্বাচনের কারণে ঋণ আদায় ও বিতরণ স্থবির হয়েছিল। আশা করছি নতুন বছরের শুরু থেকেই আদায় ও বিতরণ বৃদ্ধি পাবে।
 
এদিকে ২০১৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক কৃষি ঋণ পুনঃতফসিল করার জন্য একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, স্বল্পমেয়াদী কৃষি ঋণ পুনঃতফসিলিকরণের ক্ষেত্রে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ডাউন পেমেন্ট গ্রহণের শর্ত শিথিল করা যাবে।
 
ক্ষেত্র বিশেষে বিনা ডাউন পেমেন্টেও এ ধরনের ঋণ পুনঃতফসিল করা যাবে। ঋণ পুনঃতফসিলের পর কৃষকদের ফের নতুন করে স্বল্পমেয়াদী কৃষি ঋণ দেওয়া যাবে। এই সুবিধা বহাল থাকবে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
 
তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, কৃষি ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ দেওয়া এবং নতুন করে ঋণ বিতরণের নতুন নীতিমালা শিথিল করার কারণে ঋণ আদায় করতে অনেক সময় লাগবে।  
 
যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, কৃষি বিতরণে ব্যাংকগুলোকে প্রতিবছর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী বিতরণও হচ্ছে। চলমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে পুনঃতফসিল করার সুযোগও দেওয়া হয়েছে। আশা করছি এতে আদায় বেড়ে যাবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৫৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৯
এসই/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।