বাজার মনিটরিং টিমে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের একজন করে মোট ১১ জনের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু নির্বাচন, ইংরেজি নববর্ষ ও বছর শেষে কমর্কর্তাদের ছুটি থাকার কারণে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত তাদের প্রতিনিধিদের নামের তালিকা পাঠাতে পারেনি।
এ বিষয়ে বাণিজ্য সচিব মফিজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বাজার মনিটরিং করার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ১৪টি টিম গঠন করেছে। ১ জানুয়ারি থেকে টিমগুলো ঢাকা শহরের দুই সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজার পরিদর্শন শুরু করেছে। তবে নতুন টিমে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির তালিকা না পাওয়ায় পুরনো টিম দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। শিগগির আমরা প্রতিনিধিদের তালিকা পেয়ে যাবো।
তিনি বলেন, আগামী রমজানের আগে যাতে কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সে লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। বাজার মনিটরিংয়ের সময় টিমগুলো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য, মজুদ ও সরবরাহ পরিস্থিতি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করবে। এসময় কোনো ধরনের অস্বাভাবিক অবস্থা বা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিকভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি ভোক্তা অধিদফতর কাজ করছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাজার মনিটরিং সেলের প্রধান যুগ্ম-সচিব কামরুন্নাহার বাংলানিউজকে বলেন, নতুন গঠিত বাজার মনিটরিং টিমে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি না পাওয়ায় আমরা পুরনো কমিটি দিয়েই বাজার পরিদর্শনের কাজ চালাচ্ছি। গত দুইদিনে তারা রাজধানীর কয়েকটি বাজার পরিদর্শন করেছে। সেসব বাজারে নিত্যপণ্যের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রয়েছে। আশা করছি আগামী রমজানসহ সারাবছর আমাদের বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে।
এদিকে নতুন গঠিত টিম-১, টিম-২,টিম-৩, টিম-৪, টিম-৫ ও টিম- ৬ এর লিডারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা এখনও জানে না তাদের সঙ্গে কোন কোন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি মাঠে যাবে। তবে কেউ কেউ বলেছেন তারা না গেলেও পুরনো টিম বাজার পরিদর্শনের কাজটি করছে। তবে আগামী সপ্তাহ থেকে নতুন টিম তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কমিটিগুলো বাজার মনিটর করতে গিয়ে পণ্যের আমদানি, উৎপাদন, মজুদ ও সরবরাহ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে। কমিটিগুলোকে প্রতিদিনের বাজার মনিটরিং শেষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। একইসঙ্গে প্রতিটি জেলায় জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে গঠিত বাজার মনিটরিং কমিটিরি বাজার পরিদর্শন করে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে প্রতিবেদন পাঠাতে হবে। মনিটরিং কমিটিগুলোকে প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার ক্ষমতা দেওয়া হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কমিটি অবৈধ মজুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে।
প্রয়োজনে অবৈধ মজুদে হানা দিয়ে মজুদ করা পণ্য অবমুক্ত করতে পারবে বাজার মনিটরিং কমিটি। আগের মতো এবারও বাজারের প্রতিটি দোকানের সামনে নিত্যপণ্যের মূল্য তালিকা টানিয়ে রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সারাবছর বাজার মনিটরিংয়ের জন্য গঠিত কমিটিতে উপ-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে প্রতিটি কমিটি ছয় মাস করে বাজারে মনিটরিংয়ের দায়িত্ব পালন করার কথা। প্রতিটি কমিটিতেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, ঢাকা জেলা প্রশাসন, ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন, দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই), বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন ও ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে সারা বছরের জন্য গঠিত এই ১৪টি মনিটরিং টিম গঠিত হলেও টিমগুলো মূলত কাজ করে রোজার সময়। অন্য সময় বাজার অস্থিতিশীল না হলে খুব একটা বাজার মনিটরিং করা হয় না। বর্তমানে যে ১৪টি মনিটরিং কমিটি রয়েছে, সেগুলো গঠিত হয়েছে ২০১৯ সালের জুন মাস পর্যন্ত।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৯
জিসিজি/আরআর