চীন সরকারের অনুমোদনের পরে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরেরই চীনা এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ঋণ চুক্তিসই হবে বলে জানিয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) চীনা ডেস্ক। ৫ বছরের গ্রেস প্রিয়ড-সহ ২০ বছরে বাংলাদেশকে ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
ইআরডি সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ খাতের দুটি প্রকল্পের আওতায় এই ঋণ দিচ্ছে চীনা এক্সিম ব্যাংক। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সফরে বাংলাদেশকে ঋণ সহায়তার যে সমঝোতা চুক্তি চীন করেছিল, সেখানে নমনীয় ফ্ল্যাট সুদের হার ২ শতাংশ এবং অন্যান্য চার্জ মিলে সাড়ে ৩ শতাংশে থাকার কথা। কিন্তু চড়া সুদের ঋণে সুদের ফ্ল্যাট রেট ৩ শতাংশ এবং অন্যান্য চার্জ মিলে সাড়ে চার থেকে পাঁচ শতাংশ সুদ গুণতে হবে।
ইআরডি বলছে, চীনা প্রেসিডেন্টের ঢাকা সফরে প্রায় ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ সহায়তার সমঝোতা করে চীন। তবে বর্তমানে ২৭ প্রকল্পের বিপরীতে ২০ থেকে ২২ বিলিয়ন ডরাল ঋণ দেবে চীন। ২৭ প্রকল্পের মধ্যে ৮টি প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দেয় সরকার। এরমধ্যে বিদ্যুতের দুটি প্রকল্পকে রাখা হয়েছে।
এরমধ্যে ‘এক্সপানশন অ্যান্ড স্ট্রেংদেনিং অব পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্ক’ প্রকল্প অন্যতম। প্রকল্পটি ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) বাস্তবায়ন করবে। এই প্রকল্পে ১ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ঋণ দেবে চীন। প্রকল্পের আওতায় ইতোমধেই সরকারি খাত থেকে এডিপিতে ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
অন্য প্রকল্প হচ্ছে ‘পাওয়ার গ্রিড নেটওয়ার্ক স্ট্রেংদেনিং’। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি)। প্রকল্পে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ঋণ দেবে চীনা এক্সিম ব্যাংক। প্রকল্পের আওতায় চলতি বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ৭১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। প্রকল্প দুটির আওতায় সরকারি খাত থেকে বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
ইআরডি সূত্র জানায়, বর্তমানে মাথাপিছু আয় ১৭৫১ ডলার। এছাড়াও স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হয়ে উন্নয়নশীল দেশের দিকে যাত্রা শুরু করছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের মূল্যায়নেই এটা হবে। তবে নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এসব কারণেই মূলত চীনা ঋণে বেড়েছে সুহদার।
ইআরডি’র অতিরিক্ত সচিব (এশিয়া উইং) জাহিদুল হক বাংলানিউজকে বলেন, বিদ্যুতে দুটি প্রকল্পের আওতায় প্রায় তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ পেতে যাচ্ছি। সকল প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে, শুধু মাত্র চীন থেকে অনুমোদন পাওয়ার অপেক্ষায়। আশা করছি চীনের অনুমোদন পাওয়া গেলে সর্বোচ্চ এক মাস সময় লাগবে।
ঋণের সুদ প্রসঙ্গে চীনা ডেস্কে দায়িত্বে থাকা ওই কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, ঋণের সুদ ৩ শতাংশ। এর আগে দুই শতাংশ হারে চীন ঋণ দিতো। আমি প্রায় দেড় বছর এখানে দায়িত্ব পালন করছি, কখনো দুই শতাংশের উপরে চীন সরকারকে সুদ নিতে দেখিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৯
এমআইএস/এমজেএফ