বৃহস্পতিবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে সচিবালয়ে নিজ দফতরে ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেনসে তিরিংকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে একথা জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তারা (বিদেশি বিনিয়োগকারী) বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চায়।
‘আমি এখানে আসছি, আমি আসলে দেখতে চাই। লাল ফিতার কাজের মধ্যে আমি নাই- সোজা কথা। আমি তো গায়েখাটা মানুষ। লাল ফিতা দেখলেই আমার মাথা গরম হয়ে যাবে, কাজ আটকে থাকবে কেন? যে কাজ আজকে করা সম্ভব, কালকের জন্য সেটা অপেক্ষা করবো কেন? তবে এ জন্য আমাকেও একটু স্টাডি করতে হবে। লাল ফিতাটা কতটা গভীরে সেটাও দেখতে হবে। ’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই আমাদের দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আসুক। আমরা এজন্য সবকিছু সহজ করতে চাই। এখানে বিনিয়োগ করে রিটার্ন নিয়ে যাওয়াও অনেক বাধা আছে বলে বিদেশিরা বলছে। আমি একটা একটা করে দেখতে চাই কোথায় বাধা রয়েছে এবং এগুলো কিভাবে দূর করা যায়। যারা এ দেশে বিনিয়োগ করবে তারা তো লাভ নিয়ে যাবে, যাবে না?
‘আনার সময় ওয়েলকাম করব যে, আসো টাকা নিয়ে আসো, আর প্রফিট করে ফেরত নিয়ে যাওয়ার সময় আটকে রাখব, সেটা তো ফেয়ার নয়। আমাদের কমিটমেন্ট অনুযায়ী দিতে হবে। বাধা হলে তো তারা নিরুৎসাহিত হবে। এ বিষয়ে আমাদের কমিটিও কাজ করছে। দেখা যাক কী হয়। ’
টিপু মুনশি বলেন, দেশটা তো আমাদের। এমন কোনো নিউজ না করা উচিত যেটা দেশটার ক্ষতি করবে। আমার নিজের কোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই, ব্যবহারও করি না। তবে শুনি ফেসবুকে অনেক গুজব চলে আসে।
ব্রেক্সিটের কারণে বাংলাদেশ সমস্যায় পড়বে কিনা- জানতে চাইলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাষ্ট্রদূত বলেন, ব্রেক্সিট হলে ২৭ দেশ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থাকছে। এরফলে ইইউ’র পলিসিতে তেমন কোনো পরিবর্তন আসবে না। তাই এর ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে ইইউ’র ব্যবসা-বাণিজ্যে তেমন কোনো পরিবর্তন আসার কথা নয়।
সম্প্রতি বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের বেতন নিয়ে যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হলো এ বিষয়ে ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, শ্রমিক কর্মপরিবেশসহ সবকিছু কমপ্লায়েন্স রাখতে হবে। এর জন্য অ্যাকর্ড, অ্যালায়েন্স ও আইএলও কাজ করছে। বাংলাদেশের লেবার আইন আছে। বাংলাদেশের আরসিসিকে আরও সক্ষমতায় আনতে হবে।
এদিকে, বাণিজ্য মন্ত্রণায়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ইইউ বাংলাদেশের সাথে ঘনিষ্টভাবে বাণিজ্য করছে। উভয় দেশের চলমান বাণিজ্য আরো বাড়ানো সম্ভব। বাংলাদেশে বিনিয়োগও করতে চায় ইইউ ব্যবসায়ীরা। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা আছে। বাংলাদেশ সরকারকে সে জটিলতাগুলো অবসান ঘটাতে হবে।
বাংলাদেশের পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির বিষয় ক্রেতারা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কাখানাগুলোর অনেক উন্নতি হয়েছে। শ্রমিকরা এখন নিরাপদ ও কর্মবান্ধব পরিবেশে কাজ করছে। এখানে অনেক গ্রিন ফ্যাক্টরি গড়ে উঠছে।
ইইউ’র বাজারে ২০২০ সালে জিএসপি রিভিউ করার বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, জীবনে তো প্রতিদিনই চ্যালেঞ্জ। তবে আমরা এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আসছি। আমি মনে করি ইইউ আমাদের দীর্ঘমেয়াদী বন্ধু। জিএসপি রিভিউতে আমাদের তেমন কোনো সমস্যা হবে না। আরসিসি যখন পরিপূর্ণভাবে সক্ষমতা অর্জন করবে তখন অ্যাকর্ড চলে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৯
এমআইএইচ/এমজেএফ