শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে প্রাণ ডেইরি কমপ্লেক্সে আয়োজিত ‘প্রাণ ডেইরি হাব ও সম্ভাবনাময় দুগ্ধ শিল্প’ বিষয়ক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তরা এ তাগিদ দেন।
এ সময় সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলেন, সংশ্লিষ্ট সবাইকে সম্পৃক্ত করে বাস্তবমুখী পদক্ষেপের মাধ্যমেই এই খাতকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা সম্ভব।
গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে প্রাণ ডেইরি লিমিটেড। দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভোক্তাদের প্রাণ’র দুধ সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ কার্যক্রম দেখাতে আয়োজন করা হয় দু’দিন ব্যাপী ‘প্রাণ মিল্ক জার্নি’ কর্মসূচি।
বৈঠকে অংশ নেন ৬০ জন ভোক্তার পাশাপাশি প্রাণিসম্পদ অধিদফতর ও প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিউটের কর্মকর্তারা, খামারি, এনজিওকর্মীরা। অনুষ্ঠানে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক বলেন, শত প্রতিকূলতার মধ্যে ও দেশের দুগ্ধ শিল্প খাত এগিয়ে যাচ্ছে। ২০০৫ সালে দুধের উৎপাদন ছিলো ১২ লাখ মেট্রিক টন। ২০১৮ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৯৪ লাখ মেট্রিক টনে দাঁড়িয়েছে।
দুধের দাম না বাড়িয়ে উৎপাদন খরচ কমানোর উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি আরও বলেন, এলক্ষ্যে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে, যাতে কৃষকরা কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিউটের মহাপরিচালক ড. নাথুরাম সরকার বলেন, দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে খামারি পর্যায়ে নজর দিতে হবে এবং তারা যাতে লাভ করতে পারে সেজন্য দুধের উৎপাদন বৃদ্ধি ও উৎপাদন খরচ কমানোর উপর জোর দেন তিনি।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন ড. মাহবুব-ই-এলাহী বলেন, দুধ মিনারেল, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার। এ বিষয়টি মানুষের মাঝে বেশি করে তুলে ধরতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের ফ্লেভার্ড মিল্ক জনপ্রিয় করে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাদিরা সুলতানা বলেন, দুধের মান উন্নয়ন করতে হলে কৃষক পর্যায় থেকে কাজ শুরু করতে হবে। সেক্ষেত্রে তাদেরকে আরো বেশি সচেতন করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে অনেক গবেষণা হয়। কিন্তু সেসব গবেষণা কৃষক পর্যন্ত পৌঁছায় না। গবেষণার ফলাফল কৃষকের কাছে পৌঁছানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রাণ ডেইরি’র নির্বাহী পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, প্রাণ ডেইরি সবসময় খামারিদেরকে দুগ্ধ উৎপাদনে উৎসাহ দিয়ে আসছে। শুধু ব্যবসায়িক চিন্তা করে নয়, খামারিদের জীবনমান উন্নয়নেও প্রাণ ডেইরি কাজ করছে।
তিনি বলেন, প্রাণ দুধ সংগ্রহের সময় এর গুণাগুণ, গন্ধ, রঙ ও ঘনত্ব জানতে বিভিন্ন টেস্ট করে। দুধে ফরেন পার্টিকেল, ময়লা রয়েছে কিনা বা দুধের স্বাদ ও গন্ধ অক্ষুণ্ন রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া দুধের ফ্যাট, সিএলআর, সিওবি, সোডা, অ্যালকোহলিক ও ফরমালিন টেস্ট করা হয়। সবকিছু ঠিক থাকলে খামারিদের কাছে থেকে দুধ গ্রহণ করা হয়।
জনপ্রিয় অভিনেত্রী বাঁধন, স্বাগতা এবং অভিনেতা ইমন ‘প্রাণ মিল্ক জার্নি’ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে প্রাণ ডেইরির দুগ্ধ সংগ্রহ প্রক্রিয়া দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রাণ ডেইরি’র জেনারেল ম্যানেজার (অপারেশন) রাজীব ইবনে ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট খাতের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৯
এএটি