সোমবার (০১ এপ্রিল) দুপুরে সরেজমিন জেলার বিভিন্ন এলাকার চাষিদের সঙ্গে আলাপে বিষয়গুলো উঠে আসে। আর চাষিদের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন জেলা কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও।
কথা হয় ভুট্টা চাষি কাজী আবুল কালামের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে জানান, ১২ হাজার টাকা খরচ করে চলতি মৌসুমে ৪৫ ডেসিমেল জমিতে ভুট্টা চাষ করেন তিনি। ভুট্টা গাছে সবেমাত্র ফলন আসতে শুরু করেছে। এমন সময় ঝড়ো বাতাসে ভুট্টার গাছগুলো পড়ে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। এতে ওই জমির ভুট্টা গাছ থেকে ফলনের আর কোনো সম্ভাবনা নেই।
গত বছর ওই একই জমিতে একই পরিমাণ টাকা ব্যায় করে প্রায় ৩৫ হাজার টাকার ফলন পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু চলতি মৌসুমের ঝড়ে পড়ে যাওয়া এসব ভুট্টার গাছগুলো এখন গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার ছাড়া বিকল্প আর কোনো পথ নেই বলেও জানান তিনি।
সবজি চাষি রাজা মিয়া জানান, চলতি মৌসুমে প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ করে দুই বিঘা জমিতে ঢেঁড়স ও বেগুনের আবাদ করেছেন তিনি। অল্প কিছু টাকার বেগুন বিক্রি করলেও ঢেঁড়সের জমিতে ফলন শুরু হয়নি এখনো। এমন সময়ে ঝড়ো বাতাসে সবকিছু তছনছ হয়ে গেলো তার।
সুরেশ সরকার নামে আরেক চাষি জানান, ১৬ ডেসিমেল জমিতে মরিচ, ১০ ডেসিমল জমিতে কলা ও তিন বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছেন তিনি। কৃষি কাজের উপর ভিত্তি করেই তার সংসার চলে। রোববার সন্ধ্যার মাত্র কয়েক মিনিটের ঝড়-বৃষ্টিতে তার সব ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভুট্টার জমি থেকে কিছুটা ফলন পেলেও মরিচ এবং কলা চাষের জমি থেকে কোনো ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানান তিনি।
মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হাবিবুর রহমান চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, অল্প খরচে অধিক মুনাফা হওয়ায় ভুট্টার আবাদ বাড়ছে মানিকগঞ্জে। চলতি মৌসুমে জেলায় ১৬ হাজার ৮০৮ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। রোববারের ঝড়-বৃষ্টিতে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমির ভুট্টা চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তবে এর মধ্যে প্রায় দেড়শ’ হেক্টর জমির ভুট্টা চাষিরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
এছাড়া অন্যান্য ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো নিরূপণ করা হয়নি বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২১২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০১৯
কেএসএইচ/জেডএস