গ্রিন বন্ডের সম্ভাবনা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) সমীক্ষায় এসব মতামত তুলে ধরা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, গ্রিন বন্ডের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়ন টেকসই ব্যবসার প্রসার ঘটানোর বিষয়ে গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
এক বছরের ব্যবধানে দেশে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ৬৮ শতাংশ। ২০১৮ সালে দেশে প্রকৃত বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। যা আগের বছরের চেয়ে ৬৮ শতাংশ বেশি। ২০১৭ সালে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ২ দশমিক ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বর্তমানে বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়ন ব্যাংকিং খাতের উপর নির্ভরশীল, এটি ব্যবসার জন্য জন্য খুব বেশি কার্যকর নয়। গ্রিন বন্ডের মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগ আনা গেলে ব্যাংকিং খাতের উপর নির্ভরশীলতার প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, গ্রিন বন্ড যৌথ গবেষণা দল ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং টেকসই ও নবায়নযোগ্য শক্তি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (শ্রেডা) সঙ্গে বৈঠক করেছে।
আলোচনায় সবাই ইতিবাচক মতামত ও সম্মতি দিয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতকে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়ন বন্ধ করতে হবে এবং দেশে বন্ড মার্কেট চালু করতে হবে। যদি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলি গ্রিন বন্ড চালু করে, আমি বিশ্বাস করি দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারী তাতে বিনিয়োগ করবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংকগুলো যদি সবুজ বন্ডের অর্থায়নে ভাল মানের সুদ দিলে বিদেশিরা বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবে বলে আমার বিশ্বাস। বিশ্বব্যাপী টেকসই ব্যবসা সমর্থন করার মতো অনেক সংস্থা রয়েছে, তারা বাংলাদেশের গ্রিন বন্ডে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।
এক্ষেত্রে তিনি ট্রাস্ট ফান্ড ও ইনডাউনমেন্ট তহবিলের নাম উল্লেখ করেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই কর্মকর্তা বলেন, জীবন বীমা কোম্পানি, বড় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, বহুজাতিক কোম্পানিগুলো গ্রিন বন্ডে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হতে পারে।
বাংলাদেশে কোনো বন্ড মার্কেট নেই বলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইএফসির যৌথ গবেষণা দল দেশে গ্রিন বন্ড চালুর উত্সাহ দিয়েছে।
তবে বন্ডের সুদের হার ব্যাংকগুলোর ফিক্সড ডিপোজিট রশিদের (এফডিআর) চেয়ে কিছুটা বেশি হওয়া উচিত বলে মত দেন অধ্যাপক আবু আহমেদ।
বেসরকারি খাতের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বড় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানও বন্ড চালু করতে পারে। বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যিক বন্ড অনেক লাভজনক।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, গ্রিন বন্ডের বিষয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদনও অর্থমন্ত্রীকে দেওয়া হয়েছে। আশাকরি ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাবে।
বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ড প্রকাশিত সবশেষ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে প্রত্যক্ষ মোট বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ সময়: ০২৫৩ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১৯
এসই/এএ