বুড়িমারী স্থলবন্দরের ওপারে ভারতীয় চ্যাংরাবান্ধা কাস্টমস কর্তৃপক্ষ হঠাৎ গত ২৬ মে থেকে অনলাইন সেবা কার্যক্রম চালু করায় এ জটিলতার সৃষ্টি হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে বুড়িমারী স্থলবন্দর ব্যবহারকারী বাংলাদেশি রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরা।
কাস্টমস ও ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতের কোচবিহার জেলার চ্যাংরাবান্ধা স্থলবন্দর কাস্টমসকে ভারতীয় রাজস্ব বিভাগ কম্পিউটারাইজ সিস্টেমের আওতায় নিয়ে আসতে গত ২৬ মে থেকে ‘এএসওয়াই কুডা’ সিস্টেম চালু করেছে। এই সিস্টেম চালু করায় বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
বুড়িমারী সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান জানান, বুড়িমারী স্থলবন্দর অনলাইন সেবা কার্যক্রম অনেক আগে থেকে চালু আছে। কিন্তু চ্যাংরাবান্ধা কাস্টমস ম্যানুয়ালি কার্যক্রম করত। তারা এখন অনলাইন সেবা কার্যক্রম চালু করায় রপ্তানি কার্যক্রম নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হলেও আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।
বুড়িমারী স্থলবন্দর কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সাহা বাংলানিউজকে জানান, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে রপ্তানির জন্য রাজধানী ঢাকার মালিবাগ এলাকার মেসার্স মাড়–তি ইন্টারন্যাশনালের পণ্যবোঝাই ৬০টি ট্রাক, গাজীপুর কোনাবাড়ী এলাকার মেসার্স ক্যাচান ট্রেডিংয়ের ৪০টি ট্রাক রপ্তানি পণ্য নিয়ে গত ২৬ মে থেকে বুড়িমারী স্থলবন্দর এলাকায় অপেক্ষায় রয়েছে। এই দুই রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মতো প্রাণ আরএফএলসহ বিভিন্ন রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের কয়েকশ’ পণ্যবোঝাই ট্রাক বুড়িমারী স্থলবন্দর এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে দাঁড়িয়ে আছে। একদিকে চরম যানজট সৃষ্টি হয়েছে অন্যদিকে অতিরিক্ত ভাড়ার টাকা গুনতে হচ্ছে রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের। ভারতীয় চ্যাংরাবান্ধা কাস্টমসের অনলাইন সেবার কার্যক্রম চালুর জটিলতার কারণে বাংলাদেশি রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরা চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
ঈদুল ফিতরের কয়েকদিন আগে এই ভোগান্তি রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের জন্য আরো অস্বস্তির কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। তবে ভারত থেকে বাংলাদেশে রপ্তানি কার্যক্রম সচল রেখেছে ভারতীয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আরো বেশি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
বুড়িমারী স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ী মেসার্স তাসনিম এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী শামীম হোসেন বলেন, আমার কয়েকজন রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীর দুই শতাধিক গার্মেন্টস ঝুট বোঝাই ট্রাক কয়েকদিন ধরে ভারতে রপ্তানির জন্য অপেক্ষায় আছে। বিষয়টি কাস্টমসকে বলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। ভারতীয় সমস্যার জন্য ব্যবসায়ীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কেউ বিষয়টি দেখছে না। আমদানি ব্যবসা নিয়ে সবাই ব্যস্ত। রপ্তানির দিকে কারো নজর নেই।
একই অভিযোগ করেন মেসার্স আরএন এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী হুমায়ুন কবীর সওদাগর ও মেসার্স ট্রেড সিন্ডিকেটের স্বত্ত্বাধিকারী সুশান্ত কুমার ধরসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা। বিষয়টির দ্রুত সমাধানের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ব্যবসায়ীরা।
রংপুর বিভাগীয় কাস্টমস কমিশনার আহসানুল হকের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৯ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৯
আরএ